দু’শতক পার করবে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়। সেই উপলক্ষে অনুদানের হাত উপুড় করল রাজ্য সরকার। বুধবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানালেন, দ্বিশতবর্ষ উদযাপন, সৌন্দর্যায়ন এবং পরিকাঠামো উন্নয়নের খাতে ৭০ কোটি টাকা আসছে সরকারি কোষাগার থেকে।
আগামী ৫ জানুয়ারি বিশ্বশিক্ষা সম্মেলনের মধ্য দিয়েই শুরু হবে উদযাপন অনুষ্ঠান। তাতে উপস্থিত থাকবেন নোবেল সম্মানপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ জাঁ তিরোলে। আসবেন অমর্ত্য সেন। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে আরও চার নোবেলজয়ীকে।
পরের দিন, অর্থাৎ ৬ জানুয়ারি পালন করা হবে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিশতবর্ষ পূর্তি। সেই অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। অনুষ্ঠানে থাকবেন রাজ্যপাল আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। নিমন্ত্রিতদের তালিকায় থাকছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে সেদিন এক মঞ্চে দেখা যাবে কি না, সেই নিয়ে এখন থেকেই শুরু হয়েছে জল্পনা। ৫ এবং ৬, দু’দিনই অনুষ্ঠান হবে প্রিন্সেপ ঘাটে। কর্তৃপক্ষ তাঁরা জানাচ্ছেন, অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষও যাতে সামিল হতে পারেন, সে কারণেই ক্যাম্পাসের বাইরে অনুষ্ঠানের আয়োজন। এ ছাড়া গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধার দিকটিও মাথায় রাখা হচ্ছে। ১৫ তারিখ একটি পদযাত্রায় অংশ নেবেন প্রাক্তনীরা। পদযাত্রা হবে বিবেকানন্দের বাড়ি থেকে ক্যাম্পাস পর্যন্ত। ২০ তারিখ নেতাজি ইন্ডোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান। সেদিন আসতে পারেন রাষ্ট্রপতি। বছরভর এমন নানা উদ্যাপনী অনুষ্ঠানের খাতে বিশ্ববিদ্যালয়কে ১০ কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে রাজ্য সরকার। ১০ কোটি টাকা খরচ করা হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যায়নে। ৫০ কোটি টাকা ধরা থাকছে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য।
কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এখনকার ভবনগুলো আরও বাড়ানো হবে বহরে। উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া যোগ করেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারগুলি প্রায় ১০০ বছর আগের। এখন প্রযুক্তি বদলেছে, গবেষণার ধরন বদলেছে। তাই গবেষণাগারগুলির সংস্কারের প্রয়োজন। অনুদানের টাকার বড় অংশ তাতে খরচ করা হবে।’’ এ ছাড়া তৈরি হবে মিউজিয়াম, প্রদর্শনীর জায়গা, মুক্ত প্রেক্ষাগৃহ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার জানাচ্ছেন আগামী বছরের শেষেই রাজারহাটে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরির কাজ প্রায় শেষ হবে। সেখানে শুরু হবে ‘স্কুল অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ’। ডিজাইনিং, অ্যাস্ট্রোফিজিক্স, পাবলিক পলিসি, বায়োটেকনোলজির মতো বিষয়ের পঠনপাঠন শুরু হবে সেখানে।
তবে এত আনন্দেও চাপা পড়ছে না অভিযোগ আর অভিমানের আঁচ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাল গবেষণার সুযোগ নেই বলে অনেক দিন ধরেই পড়ুয়ারা পাড়ি দিচ্ছেন ভিন্ রাজ্যে। কাজের পরিবেশ নেই এই অভিযোগ তুলে বহু শিক্ষকও বিদায় নিয়েছেন গত কয়েক বছরে। পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক সব্যসাচী ভট্টাচার্য তেমনই এক জন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এ দিনের অনুদান ঘোষণার খবর শুনে তিনি বলেন, ‘‘টাকা যিনি দিচ্ছেন এবং যিনি নিচ্ছেন, দু’জনেই তা কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে কোন বিষয়টাকে প্রাধান্য দেবেন, সেটাই আসল কথা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy