গত আর্থিক বছরে সারা দেশে বরাদ্দ ছিল ১৭ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা। তার ৬% সরিয়ে রাখা হয়েছিল সেই সব রাজ্যের জন্য, যারা ভাল কাজ করবে। দু’দিন আগে গ্রামে পাকা সড়ক তৈরির কাজে সেই পুরস্কার ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক।
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ১০৭৬.৪৯ কোটির সেই উৎসাহ ভাতা তহবিল থেকে এক টাকাও মেলেনি বাংলার। কারণ, ৪১০০ কিমি রাস্তা তৈরির লক্ষ্য নিয়েও সাকুল্যে ১৪০০ কিমি তৈরি করতে পেরেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কোনও ক্ষেত্রেই ছুঁতে পারেনি গ্রামীণ সড়কের জাতীয় গড় সূচকগুলিকে। ১৪টি রাজ্যকে বাড়তি টাকা দিয়ে কেন্দ্র বুঝিয়ে দিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের কাজে সন্তুষ্ট নয় তারা।
রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় অবশ্য রাস্তা তৈরি না হওয়ার দায় পুরোটাই কেন্দ্রের ঘাড়ে চাপিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমত ৪১০০ কিমি রাস্তা তৈরির অনুমোদন এক সঙ্গে দেয়নি কেন্দ্র। ফলে পরিকল্পনা করতে আমাদের সময় লেগেছে। আর অনুমোদন মেলার পর সময়ে টাকা দেয়নি। তাই এই পুরস্কার বা তিরস্কারের কোনও মূল্য নেই।’’
সুব্রতবাবুর পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘এ তো দেখছি পুরো সিলেবাস না পড়িয়েই পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা! আমার আমলে ১২হাজার কিমি নতুন রাস্তা হচ্ছে। তা রাজ্যে আগে কখনও হয়নি।’’
পঞ্চায়েত মন্ত্রীর দাবি অবশ্য কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কর্তারা মানছেন না। দ্রুত এবং নির্দিষ্ট গুণমানের রাস্তা যাতে তৈরি হয়, সে জন্য ২০১৬-১৭ সালের গোড়াতেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাতে বলা হয়, স়়ড়ক যোজনায় দেশের বরাদ্দ বাজেটের ৬% কেটে রাখা হবে। বছর শেষে ছ’টি সূত্রের ভিত্তিতে স্কোর কার্ড তৈরি হবে।
সেই সূত্রগুলি হল— লক্ষ্যমাত্রা যা ছিল তার কতটা হল, কতগুলি মৌজা পাকা রাস্তা দ্বারা যুক্ত হল, কত কিমি রাস্তা তৈরি হল, রাস্তার গুণমান, তৈরি রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের নীতি এবং হিসেব পরীক্ষা।
এগুলি বিচার করে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক যে ‘রাস্তা নির্মাণের মেধা তালিকা’ তৈরি করেছে, তাতে পশ্চিমবঙ্গের নামগন্ধ নেই! পুরস্কারের টাকা সবচেয়ে বেশি নিয়ে গিয়েছে অখিলেশ যাদবের উত্তরপ্রদেশ। পুরস্কার বাবদ লখনউ পেয়েছে ২৪০ কোটি টাকা। তার পরেই রয়েছে মধ্যপ্রদেশ। তারা পেয়েছে ২০০ কোটি। তৃতীয় স্থানে বিহার নিয়ে গেছে ৭৪.৭৭ কোটি। এ ছাড়া পঞ্জাব, তামিলনাডু, কর্নাটক, অসম, উত্তরাখণ্ড, মনিপুর, সিকিম, ওড়িশার মতো রাজ্যও পুরস্কার পেয়েছে।
এই স্কোর বোর্ড তৈরির আগেই কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন সচিব অমরজিৎ সিংহ নবান্নে চিঠি লিখে রাজ্যের কাজের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে বলেছিলেন। তার পরেও রাজ্য কান দেয়নি। যদিও
রাজ্যের মত, মার্চের শেষ নাগাদ লক্ষ্যমাত্রার অনেকটাই ছোঁয়া যাবে। আগামী বছর রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। তার মধ্যেই দেশের সেরা তিনে উঠে আসার চ্যালেঞ্জ হাতে নিয়েছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy