Advertisement
E-Paper

ছুটির গেরোয় আদালত বন্ধ তিন সপ্তাহ

মাসের দ্বিতীয় ও চতুর্থ শনিবার ছাড়াও প্রতি রবিবার বন্ধ থাকে এই জেলা আদালত। সেই হিসেবে গত ১০ মার্চ, মাসের দ্বিতীয় শনিবার এবং পরদিন ১১ মার্চ, রবিবার ছিল ছুটি। ১২ মার্চ পুলিশ আইনজীবীদের গোটা দশেক সেরেস্তা ভেঙে দেয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১৪

সরকারি ছুটি তো আছেই। তা ছাড়াও আছে আরও নানা কারণে যখন-তখন ছুটি। কখনও কেউ মারা গিয়েছেন বলে কাজ বন্ধ, তো কখনও আইনজীবীরা যেখানে বসেন, সেই সেরেস্তা ভেঙে দেওয়ার প্রতিবাদে কর্মবিরতি! এমনই নানা কারণে গত ২৪ দিনের মধ্যে ২১ দিনই বন্ধ রইল বারাসতের জেলা আদালত! হঠাৎ করে টানা বন্ধ থাকায় ব্যাহত হল কয়েক হাজার মামলার বিচারপ্রক্রিয়া। গুরুত্বপূর্ণ মামলা তো বটেই, প্রতিদিন গড়ে হাজার দুয়েক মামলার বিচার হয় এই আদালতে।

মাসের দ্বিতীয় ও চতুর্থ শনিবার ছাড়াও প্রতি রবিবার বন্ধ থাকে এই জেলা আদালত। সেই হিসেবে গত ১০ মার্চ, মাসের দ্বিতীয় শনিবার এবং পরদিন ১১ মার্চ, রবিবার ছিল ছুটি। ১২ মার্চ পুলিশ আইনজীবীদের গোটা দশেক সেরেস্তা ভেঙে দেয়। যার প্রতিবাদে ১২ থেকে টানা ২৩ মার্চ পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করে দু’টি বার অ্যাসোসিয়েশন।
এর পরে ২৪ ও ২৫ মার্চ শনি-রবিবার ছিল ছুটি। ২৬ মার্চ আদালত খোলার পরের দিনই এক জন মারা যাওয়ায় কাজকর্ম বন্ধ থাকে। ২৮ ও ২৯ মার্চ আদালতে কাজকর্ম হয়। এর পরে ৩০ মার্চ গুড ফ্রাইডে, ৩১ মার্চ শনিবার ও ১ এপ্রিল রবিবার বন্ধ ছিল আদালত। ২ এপ্রিল বিচারপ্রার্থীরা এসে জানতে পারেন, এক কর্মীর মৃত্যুতে ফের বন্ধ আদালত।

বস্তুত বিধাননগর, বারাসত, ব্যারাকপুর, বনগাঁ ও বসিরহাটের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলারই নিষ্পত্তি হয় জেলা আদালতে। বারাসতের অনুপম হত্যাকাণ্ডের (মনুয়া-মামলা) মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলা ছাড়াও মাদক এবং পকসো আইনে ধৃতদের বিচারও চলে ওই আদালতে। প্রতি দিন দমদম সেন্ট্রাল জেল থেকে শুরু করে বনগাঁ, বসিরহাট ও ব্যারাকপুর সাব জেল থেকেও আসামিদের আনা হয় এই আদালতে।

টানা বন্ধ থাকার জেরে সমস্ত মামলা কার্যত মুলতুবি হয়ে যায়। সোমবারেও আদালতে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছিলেন বিচারপ্রার্থী ও কয়েদিরা। ফিরে যেতে হয় তাঁদের। বিচারপ্রক্রিয়ায় দেরির কারণে এক বার ওই আদালতের মধ্যেই গায়ে আগুন দিয়ে, ব্লেড চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন কয়েদিরা। এ দিন মামলার জন্য সন্দেশখালি থেকে এসেছিলেন এক পরিবারের তিন জন। তাঁদের কথায়, ‘‘এমনিতেই বহু দেরি করে মামলার দিন পরে। কোর্টে আসতেই চার ঘণ্টা লেগে যায়। বন্ধ থাকায় পরপর তিন দিন ফিরে যাচ্ছি।’’

ওই আদালতের সরকারি কৌঁসুলি শান্তময় বসু অবশ্য বলেন, ‘‘২৪ দিনের মধ্যে তিন দিন আদালতের কাজ হয়েছে। এর মধ্যে সেরেস্তা ভেঙে দেওয়ার প্রতিবাদও হয়েছে।’’

আদালত সূত্রের খবর, আইনজীবীদের সেরেস্তা ভাঙার নোটিস দেন ওই আদালতেরই মুখ্য জেলা বিচারক। আদালতে নতুন সেরেস্তা নির্মাণ করা যাবে না বলে রয়েছে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাও। কারণ, বারাসত স্টেশন লাগোয়া জেলা আদালতের পাশেই রয়েছে জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ অফিস। বিকেলের পরে সেখানে নানা দুষ্কৃতীর আনাগোনা বাড়ত বলে অভিযোগ। কয়েক বছর আগে ওই এলাকাতেই দিদির সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে খুন হয়েছিলেন রাজীব দাস। এর পরে আদালত চত্বরের গুমটি ও দোকানপাট ভেঙে সাফ করে দেওয়া হয়।
কয়েক বছরের মধ্যেই অবশ্য সেগুলি ফের বসে গিয়েছে। তা নিয়েই বিবাদ। যার জেরে ভুগছেন সাধারণ মানুষ।

Barasat court Barasat holidays
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy