প্রতীকী ছবি।
দেখতে নিরীহ। কিন্তু ভিতরে লুকোনো মারণ বিস্ফোরক!
সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে গ্রামাঞ্চলের দুষ্কৃতীদের হাতে এই বোমা দেখে কপালে ভাঁজ পড়েছে সিআই়ডি গোয়েন্দাদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, বাংলাদেশে জঙ্গিদের হাতে এই প্রযুক্তির বোমা রয়েছে। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গে এত দিন তা বোমা দেখা যায়নি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাই নতুন ধরনের বোমা আবিষ্কার করে চিন্তায় গোয়েন্দারা।
সিআইডি সূত্রের খবর, এ বোমার পোশাকি নাম ‘গ্লিসারিন’ বোমা। মশলা হিসেবে পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট, চিনি এবং গ্লিসারিন ব্যবহৃত হয়। সামান্য পরিমাণে পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেটের সঙ্গে গ্লিসারিন মিশলেই আগুন জ্বলে ওঠে। পরিমাণে বেশি হলে বিস্ফোরণ ঘটে। চিনি মিশলে বিস্ফোরণের মাত্রা আরও কয়েক গুণ বাড়ে। তবে গ্লিসারিন ও পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেটের মিশ্রণে ধীরে ধীরে কাজ হয়। কৌটোর মতো দেখতে এই বোমা ছোড়ার আগে ভিতরে থাকা একটি সুতলির টানে বোমাটিকে সক্রিয় করা হয়। মূলত কৌটোর ভিতরে একটি ছোট শিশিতে গ্লিসারিন থাকে। সুতোর টানে সেখান থেকে ধীরে ধীরে গ্লিসারিন বেরনো শুরু হয়। যত ঝাঁকুনি লাগবে গ্লিসারিন বেরনোর গতিও তত বাড়বে।
রাজ্য পুলিশের এক বোমা বিশেষজ্ঞ বলছেন, ‘‘এই প্রক্রিয়ায় বোমাটা ছোড়ার কিছু ক্ষণ পরে ফাটে। কৌটো বোমা ভেবে উদ্ধার করতে গিয়ে অদক্ষ পুলিশকর্মীরা বিপদে পড়তে পারেন।’’ বাসন্তীতেও এই ফাঁদে পড়ে কার্যত প্রাণ হারাতে বসেছিলেন এক পুলিশকর্মী। সূত্রের খবর, নিরীহ বোমা ভেবে তিনি কাছে যেতেই বোমাটি ফেটে গিয়েছিল। শেষ মুহূর্তের তৎপরতায় রক্ষা পান তিনি।
পুলিশের একাংশের মতে, সাধারণ দেশি বোমার মতো করে এই বোমা তৈরি হচ্ছে না। কোনও সংগঠিত অপরাধচক্র এর পিছনে রয়েছে। বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা এ রাজ্যের কোথাও ঘাঁটি গেড়ে বোমা কারখানা তৈরি করেছে কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলা পুলিশকে সতর্ক করা হয়েছে। এক পুলিশকর্তা বলছেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিভিন্ন জেলায় গোলমাল হচ্ছে। সেখানেও যে এমন বোমা ব্যবহার হচ্ছে না, তার নিশ্চয়তা কী? ফলে সবার সতর্ক থাকা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy