Advertisement
০৩ মে ২০২৪

অপহরণের নালিশ ভাঙড়ে, নির্দল প্রার্থীর দুই ছেলেকে ঘিরে জল্পনা

ফতেমা পোলেরহাট-২ পঞ্চায়েতের ১৬ নম্বর সংসদে দাঁড়িয়েছেন। তাঁকে সমর্থন করছে ভাঙড়ের জমি রক্ষা কমিটি। ওই আসনে তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন ঝিলিক বিবি। ফতেমার বাড়ি দক্ষিণ গাজিপুরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৮ ১৮:১৫
Share: Save:

এলাকার এক নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার না-করায় ক’দিন ধরে তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে তাঁর দুই ছেলেকে আরাবুল অপহরণ করেছে বলে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেন ফতেমা বিবি নামে ওই নির্দল প্রার্থী। অভিযোগ পাওয়ার পরে পুলিশ তদন্তে নামে বলে জানিয়েছেন বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ। তবে, তার কিছুক্ষণ পরেই ‘অপহৃত’রা ফিরে আসেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। আরাবুল অভিযোগ মানেননি।

ফতেমা পোলেরহাট-২ পঞ্চায়েতের ১৬ নম্বর সংসদে দাঁড়িয়েছেন। তাঁকে সমর্থন করছে ভাঙড়ের জমি রক্ষা কমিটি। ওই আসনে তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন ঝিলিক বিবি। ফতেমার বাড়ি দক্ষিণ গাজিপুরে। আরাবুলও ওই এলাকার বাসিন্দা। ফতেমা এবং তাঁর স্বামী জাকির হোসেন মোল্লা কিছুদিন ধরে খামারআইট গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে থাকছেন। তাঁদের অভিযোগ, শাসকদলের হুমকিতেই তাঁরা গ্রাম ছেড়েছেন। দক্ষিণ গাজিপুরে বাড়ি থেকে এ দিন দুই ছেলে রিয়াজুল ইসলাম (জিয়া) ও নাজমুল ইসলামকে অপহরণের কথা জানতে পেরে ফতেমা বারুইপুর জেলা পুলিশের সুপারের কাছে ই-মেলে
অভিযোগ জানান।

জমি রক্ষা কমিটির সদস্য মির্জা হাসানের অভিযোগ, ‘‘প্রথম থেকেই আরাবুলের লোকজনেরা আমাদের উপরে অত্যাচার চালাচ্ছে। অনেককে মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি। পরে আদালতের নির্দেশে হোয়াটসঅ্যাপে মনোনয়ন জমা করা হয়। এখন মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য প্রার্থীদের বাড়ির লোকজনকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করছে, ভয় দেখাচ্ছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে আরাবুলের দাবি, ‘‘কিছু হলেই ওরা আমার নামে অভিযোগ করে। আসলে
ওরা আতঙ্কে ভুগছে। আমরা কাউকে মারধর ও অপহরণ
করিনি। ওদের প্রার্থীরাই বাড়ি ছেড়ে খামারআইটে গিয়ে আত্মগোপন
করে রয়েছেন।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে জনাসাতেক যুবক ফতেমার বাড়িতে গিয়ে তাঁর দুই ছেলে রিয়াজুল এবং নাজমুলকে নিয়ে চলে যায়। এ দিন বিকেলে কাশীপুর থানায় ফিরে রিয়াজুল পুলিশকে জানান, আরাবুলের উপস্থিতিতে তাঁদের ওই বাড়িতে নিয়ে গিয়ে চড়-থাপ্পড় মেরে মা-বাবাকে ফোন করানো হয়। ফোনে বলা হয়, মনোনয়ন প্রত্যাহার না-করলে বিপদ আরও বাড়বে।

ফতেমার অভিযোগ পেয়ে পুলিশ যখন দক্ষিণ গাজিপুর রওনা হয়, তখন পথেই দেখা মেলে রিয়াজুল ও তাঁর জ্যাঠা ইন্নাত মোল্লার। ইন্নাত তৃণমূল কর্মী। তাঁর দাবি, ‘‘সকালে আরাবুল আমায় ডেকে ভাইয়ের বৌকে বোঝানোর জন্য বলে। তার পরে ভাইপোদের আমার হাতে তুলে দেয়। নাজমুলকে আমার আর এক ভাইয়ের সঙ্গে বাড়ি পাঠিয়ে দিই। ফতেমা তৃণমূলের টিকিট না-পাওয়ায় নির্দল হয়ে দাঁড়ায়। জমি রক্ষা কমিটি ওঁকে সমর্থন করে। ওঁর কী দোষ?’’

আরাবুল অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁর নামে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন ফতেমা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE