Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভরসা দিয়ে পাশে থাকুন সন্তানের

পরীক্ষা হয়ে গেলেই তুলে রাখবে প্রশ্নপত্র। নম্বর নিয়ে কোনও আগাম ছক কষা নয়। আর তাতে কোনও ভাবেই উৎসাহ দেবেন না অভিভাবকেরাও। এমনটাই নির্দেশ শিক্ষক এবং চিকিৎসকদের। কারণ এ সবে কোনও লাভ হয় না।

সুপ্রিয় তরফদার
শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৮ ০০:০১
Share: Save:

জীবনের বড় পরীক্ষার চাপটা কিছু দিন আগেই নেমেছে। ক’দিনের একটু স্বস্তি মিলেছিল। কিন্তু পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিন যতই এগিয়ে আসছে, ততই উদ্বেগ বাড়ছে আইসিএসই, আইএসসি, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং সিবিএসই বোর্ডের পরীক্ষার্থীদের। প্রত্যাশার চাপে উদ্বেগের পারদ চ়ড়ছে অভিভাবকদেরও। প্রত্যাশা এবং ফলাফলের মধ্যে পার্থক্য হলে যাতে কোনও অঘটন না ঘটে, তাই কিছু পরামর্শ দিলেন স্কুলের প্রধান এবং মনোরোগ চিকিৎসকেরা।

এ জন্য অভিভাবকদের সক্রিয় হওয়ার আবেদন করছেন তাঁরা। তাঁদের মতে, ফলাফল নিয়ে পরীক্ষার্থীদের থেকেও বেশি দুশ্চিন্তা করেন অভিভাবকেরা। সেই চাপ পড়ে পড়ুয়াদের উপরেও। মনোরোগ চিকিৎসক সুজিত সরখেলের এ বিষয়ে পরামর্শ, অভিভাবকদের উচিত সন্তান বা অন্য অভিভাবকের সঙ্গে পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে কোনও আলোচনা না করা। বরং খেলাধুলো, সিনেমা বা কোনও গল্পের বই নিয়ে হাল্কা বিষয়ে সন্তানকে ব্যস্ত রাখা। পাশাপাশি তাদের এই বার্তা দিতে হবে যে, ফলাফল যেমনই হোক না কেন, তাতেই খুশি হবেন বাবা-মা। অস্বস্তিকর এই গরমে বাড়তি চিন্তা মনের সঙ্গে শরীরে কুপ্রভাব ফেলবেই। পড়ুয়াদের প্রতি তাঁর আবেদন, পরীক্ষার পর থেকে নতুন ক্লাসে না ওঠা পর্যন্ত সময়টা সব থেকে সুন্দর। তাই যে পরীক্ষা দেওয়া হয়ে গেছে, তা ভেবে সময় নষ্ট নয়।

পরীক্ষা হয়ে গেলেই তুলে রাখবে প্রশ্নপত্র। নম্বর নিয়ে কোনও আগাম ছক কষা নয়। আর তাতে কোনও ভাবেই উৎসাহ দেবেন না অভিভাবকেরাও। এমনটাই নির্দেশ শিক্ষক এবং চিকিৎসকদের। কারণ এ সবে কোনও লাভ হয় না। বরং মূল্যবান সময় অন্য কোনও সৃজনশীল কাজে লাগানোর নির্দেশ দিচ্ছেন তাঁরা।

বেথুন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী জানান, এক জন পড়ুয়া অনেক কিছু জানলেও পরীক্ষায় সবটা প্রকাশ করে আসতে পারে না। সুতরাং একটা পরীক্ষার ফলাফলে তার সবটা মাপা যায় না। অতএব ফল যাই হোক, সেটা তার জীবনের মাপকাঠি হতে পারে না।

মডার্ন হাই স্কুল ফর গার্লসের প্রিন্সিপাল দময়ন্তী মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘বোর্ডের পরীক্ষার চাপ যখন পরীক্ষার্থীরা সামলে নিতে পেরেছে, তখন তাদের আলাদা করে ফলাফলের চাপ নেওয়া অর্থহীন।’’ অভিভাবকদের প্রতি তাঁর বার্তা, আতঙ্কিত হবেন না। কারণ কষ্ট পেলে সন্তান সবার আগে খোঁজে বাবা-মায়ের নিরাপদ আশ্রয়। তাঁরাই যদি উদ্বেগে থাকেন, তবে ওদের পাশে থাকবে কে?

তবে এই উদ্বেগ খুব অমূলক নয় বলেই মনে করেন আইসিএসই স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নবারুণ দে। তিনি জানান, মনের মতো কলেজ এবং বিষয় নিয়ে ভবিষতে পড়া যাবে কি না, এই চাপ থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু পরীক্ষার আগেই সে সব সামলানোর প্রস্তুতি শুরু হোক। পরীক্ষার পরে এ নিয়ে ভাবার অর্থ সময় নষ্ট করা। বরং চাপমুক্ত হতে গান শোনা, সিনেমা দেখার মতো কিছু বিষয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখুক পড়ুয়ারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Father
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE