Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

আগে বাঁচলে দলের নাম, সূত্র বিরোধীদের

বামফ্রন্ট নির্দেশিকা জারি করে আগেই বলে দিয়েছে, তৃণমূলকে ঠেকাতে বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া চলবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪৮
Share: Save:

আশঙ্কা আগেই ছিল। পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট দেখে আরও আশঙ্কার কারণ দেখছে বিরোধীরা। এমতাবস্থায় তৃণমূলের মোকাবিলায় নিচু তলায় সার্বিক জোটের পক্ষেই বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে বিরোধী শিবিরে।

সিপিএমের সূর্যকান্ত মিশ্র, কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী বা বিজেপির দিলীপ ঘোষ— রাজ্যের বিরোধী শিবিরের তিন শীর্ষ নেতার কেউই পঞ্চায়েতে সার্বিক জোটের কথা মানবেন না। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি বুঝে এলাকা ভিত্তিতে কোনও রঙের বাছবিচার ছাড়াই যে বিরোধী কর্মীরা একজোট হয়ে যাচ্ছেন, এই খবর আসছে তিন দলের কাছেই। বামফ্রন্ট নির্দেশিকা জারি করে আগেই বলে দিয়েছে, তৃণমূলকে ঠেকাতে বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া চলবে না। তবে পঞ্চায়েতে নিচু তলা কোনও দিনই উপর মহলের নীতি-নির্দেশিকার অপেক্ষায় থাকে না। এ বারও ছুতমার্গ ছেড়়ে লড়াইয়ের প্রস্তুতি চলছে।

জেলা পরিষদ স্তরে লড়াই হবে রাজনৈতিক নির্দেশিকা মেনেই। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে ঠেকাতে বিজেপি, নির্দল বা বিক্ষুব্ধ তৃণমূল— যে কোনও ধরনের প্রার্থীকেই যে তাঁদের কর্মীরা সমর্থন করতে পারেন, বুঝতে পারছেন বাম ও কংগ্রেস নেতারা। কর্মীদের যুক্তি, আগে তো বাঁচতে হবে! তার পরে দলের নাম! কংগ্রেস নেতা অরুণাভ ঘোষের কথায়, ‘‘আগে গণতন্ত্র বাঁচুক। তার পরে বাকি সব ভাবা যাবে!’’

বামফ্রন্টের বৈঠকে শনিবার ফরওয়ার্ড ব্লকের নরেন চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন, কোনও সিদ্ধান্ত ছাড়াই মালদহ ও মুর্শিদাবাদে সিপিএম-কংগ্রেস জোট হচ্ছে। তা হলে তাঁরাই বা বাম ঐক্য মানবেন কেন? বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থনের ডাক দিয়েছেন ফ ব-র জাতীয় সম্পাদক জি দেবরাজন। কিন্তু নরেনবাবুর প্রশ্ন, ‘‘তৃণমূল আমাদের দলীয় দফতর দখল করেছে, কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। তাদের কী ভাবে সমর্থন করব?’’ এই সূত্র ধরেই ফ ব-র এক নেতার বক্তব্য, ‘‘কোচবিহারে আমাদের মূল লক্ষ্য উদয়ন গুহকে আটকানো। তার জন্য যার সমর্থন লাগে, তা তো নিতে হবে!’’

একলা লড়ার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত থাকলেও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু কিছু কর্মিসভায় বলেছেন, সিপিএম এবং কংগ্রেসকে দূরে রেখে দিলে হবে না। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য যদিও বলছেন, ‘‘বাঘকে ঠেকাতে কুমিরের পিঠে চাপলে কুমিরই পরে খেয়ে ফেলবে!’’ কিন্তু দলের অন্দরে তাঁরাও মানছেন, চাপ প্রবল!

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এ সবে গুরুত্ব না-দিয়ে বলছেন, ‘‘বিরোধীদের হাতে কোনও অস্ত্র নেই। সঙ্গে মানুষও নেই। উন্নয়নের জন্য মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে আছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE