বেহাল টাকি রোড। —নিজস্ব চিত্র
এক দিকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাণিজ্য বাড়ছে। অন্য দিকে কলকাতা-বসিরহাট যোগাযোগের ক্ষেত্রেও ক্রমশ বাড়ছে গুরুত্ব। ফলে বারাসত-টাকি রোডের সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছিল। রাস্তা সম্প্রসারণের সেই কাজে দু’টি জায়গায় বাধা হয়ে দাঁড়াল সেই জমি সমস্যা।
রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি মিলছে না দেগঙ্গার বেশ কিছু জায়গায়। ফলে দেগঙ্গা বাজার এলাকায় রাস্তাটি ৫৫ ফুটের পরিবর্তে ৩০ ফুট চওড়া করতে হচ্ছে। অন্যত্র রাস্তা সম্প্রসারণ হলেও এর জেরে দেগঙ্গা বাজার এলাকায় আগের মতোই যানজটের সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। এ দিকে, কোনও মতেই জোর করে জমি নেওয়া হবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল রাজ্য সরকার।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাসত থেকে টাকি পর্যন্ত ওই রাস্তাটি মোট ৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ। দু’টি পর্যায়ে ওই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সম্প্রসারিত রাস্তা ৫৫ ফুট চওড়া হওয়ার কথা। এর জন্য রাস্তার ধারে জবরদখল করে থাকা দোকানিদের সরাতে নোটিস ধরানো হয়। ৫৫ ফুটের মধ্যে পাকা পিচের রাস্তা থাকার কথা ৩৩ ফুট। বাকি অংশ রাখা হয়েছিল পথচারীদের যাতায়াত, ফুটপাত ও নিকাশিনালার জন্য। কিন্তু দেগঙ্গা বাজার এলাকার দু’টি জায়গায় প্রয়োজনীয় ৫৫ ফুট জমি মিলছে না বলে পূর্ত দফতর সূত্রে খবর। ফলে ওই দু’টি জায়গায় রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ আটকে গিয়েছে।
জেলা পূর্ত দফতরের আধিকারিক রাজা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাস্তার সম্প্রসারণের জন্য ৫৫ ফুট জমি প্রয়োজন। দেগঙ্গা বাজার এলাকার দু’টি জায়গায় সরকারি ভাবে জমি রয়েছে ৩০ ও ৩৫ ফুট।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্য জোর করে অতিরিক্ত জমির দখল নেবে না বলে জানিয়েছে। ফলে এই দু’টি জায়গায় আপাতত রাস্তা ওইটুকুই চওড়া থাকবে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেগঙ্গা বাজার এলাকায় রাস্তা সরু হলে সমস্যায় পড়বেন এলাকাবাসীরা। কারণ, একটি জায়গায় রাস্তার দু’পাশে রয়েছে বাজার। পাশাপাশি, সপ্তাহে দু’দিন ওই রাস্তার উপরেই হাট বসে। এ দিকে রাস্তা সম্প্রসারণ হয়ে গেলে বাড়বে গাড়ির চাপ। ফলে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের পাশাপাশি দুর্ঘটনা বাড়ার আশঙ্কা রয়ে যাচ্ছে।
দেগঙ্গা বাজার এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী মুজিবর রহমান বলেন, ‘‘এই জমি আমাদের নিজস্ব। উন্নয়নের জন্য সরকার জমি চাইলে আমরা দেব। তবে তার জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’’ শান্তনু কর্মকার নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘পূর্ত দফতর থেকে আমাদের বাড়ির কিছুটা অংশ ভেঙে দেওয়ার নোটিস দেয়। সেই মতো আমরা কিছুটা ভেঙে দিই। কিন্তু পরে দেখা যায়, ওটা আমাদের জমি। সরকারের নয়।’’ শান্তনুও জানান, রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য জমি দিতে রাজি তাঁরা। তবে সরকারের উচিত প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা। এ দিকে ওই রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য বরাদ্দ টাকা থেকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পূর্ত দফতর। এই জটে বারাসত-টাকি রোড সম্প্রসারণ হলেও কাজ আটকে রইল কেবল ওই দু’টি জায়গায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy