Advertisement
১০ মে ২০২৪
BJP

সন্ত্রাসের অভিযোগেই অনড় বিজেপি, পাল্টা আক্রমণ তৃণমূলেরও

শুক্রবার বিকালেই দলের রাজ্য পদাধিকারী, জেলার কিছু নেতৃত্ব ও প্রার্থীদের একাংশকে নিয়ে প্রথম পর্যালোচনা বৈঠক ছিল বিজেপির

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২১ ০৭:২৮
Share: Save:

ভোটে বিপর্যয়ের পরে রাজ্য বিজেপির প্রথম বৈঠকও সরগকম থাকল জেলায় জেলায় ‘সন্ত্রাসের’ অভিযোগে। রাজ্যে পরিস্থিতি এখন শান্ত। কোথাও কোনও গোলমাল নেই। গোটা প্রশাসন কোভিড মোকাবিলায় ব্যস্ত। সেই সময়ে এক দিকে রাজ্যপাল সন্ত্রাস ‘খুঁজতে’ বেরিয়েছেন এবং অন্য দিকে নিজেরা ‘হামলা’র অভিযোগ সামনে এনে বিজেপি আসলে আরও বেশি কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের পথ খুলতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে। কোভিড পরিস্থিতিতে নিজেদের দায়িত্ব থেকেও হাত ধুয়ে ফেলতে চাইছে তারা। বিজেপির এই ভূমিকাকে ‘অমানবিক’ আখ্যা দিয়ে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল।

বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পরে শুক্রবার বিকালেই দলের রাজ্য পদাধিকারী, জেলার কিছু নেতৃত্ব ও প্রার্থীদের একাংশকে নিয়ে প্রথম পর্যালোচনা বৈঠক ছিল বিজেপির। সূত্রের খবর, হেস্টিংসের কার্যালয়ে ওই বৈঠকে দলের একাংশের বক্তব্য ছিল, কেন্দ্রীয় শাসক দল হওয়া সত্ত্বেও বিজেপির নেতা-কর্মীরা যে ভাবে নিরাপত্তার অভাবে বাইরে বেরোতে পারছেন না, তাতে মোটেই ভাল বার্তা যাচ্ছে না। দল ও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পর্যাপ্ত পদক্ষেপের ঘাটতি হচ্ছে বলেও ক্ষোভপ্রকাশ করেন কেউ কেউ। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে তাঁর এলাকার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা নিয়ে অর্জুন সিংহ বৈঠকে বলেন, বিভিন্ন ওয়ার্ড ও পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের বাহিনীর হাতে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা মার খাচ্ছেন। অর্জুনের প্রশ্ন, সাংসদ-বিধায়কদের যদি নিরাপত্তা না থাকে, সাধারণ কর্মীদের রক্ষা করার দায়িত্ব কে নেবে?

পরে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘বাড়ি ভাঙচুর, লুঠপাট, খুন, ধর্ষণ-শ্লীলতাহানি সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে আমরা পৌঁছতে পেরেছি প্রায় ৭ হাজার ঘটনার ক্ষেত্রে। মারা গিয়েছেন ২১ জন। তার মধ্যে এফআইআর হয়েছে ১৪টি ক্ষেত্রে। আক্রান্ত মানুষ স্থানীয় থানায় অভিযোগ করতে ভয় পাচ্ছেন। আমরা বলছি, কলকাতায় আসুন, আমরা আদালতের মাধ্যমে এফআইআর করব। কিন্তু তাতেও তাঁরা রাজি হচ্ছেন না। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ!’’

বিজেপির এই মনোভাবকে ‘অমানবিক’ আখ্যা দিয়েছে শাসক দল তৃণমূল। দলের সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী শপথ নেওয়ার পরে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। কোভিড মোকাবিলায় কোনও সদর্থক ভূমিকা না নিয়ে দিলীপবাবুরা বস্তাপচা কিছু অভিযোগ করেই যাচ্ছেন। অন্য দিকে কেন্দ্রও মানবাধিকার, মহিলা বা তফসিলি জাতি-জনজাতি কমিশনকে রাজ্যে পাঠিয়ে চলেছে। অথচ কোভিড মোকাবিলায় ব্যর্থতার দায় কেন্দ্রীয় সরকারেরই।’’ সুখেন্দুবাবুর সংযোজন, ‘‘পরাজয়ের পরেও বামফ্রন্ট কিন্তু কোভিড মোকাবিলায় নেমেছে, বিমান বসুর বক্তব্য শুনলে বোঝা যায়, এই পরিস্থিতিতে তাঁরা রাজনীতি সরিয়ে রেখে কাজ করতে চান। কিন্তু দিলীপবাবুরা পরাজয় থেকে কোনও শিক্ষা নেননি!’’

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও বৈঠকে ছিলেন। তিনি জানান, গণতন্ত্র ফেরাতে বিধানসভার ভিতরে-বাইরে লড়াই চলবে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ক্ষোভ অনেকেরই আছে। তাঁরা হয়তো চাইছেন আরও প্রশাসনিক পদক্ষেপ হোক। কেন্দ্র কিছু করেনি, তা কিন্তু নয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ইতিমধ্যেই প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE