ডিজি রাজীব কুমার (ডান দিকে) সন্দেশখালি ফেরিঘাট থেকে থানায় ঢুকছেন টোটো করে। সঙ্গে আছেন এডিজি দক্ষিবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার। ছবি: নবেন্দু ঘোষ।
মুখ ঢেকে থাকে আতঙ্কে! অন্তত সন্দেশখালির আন্দোলনকারী অনেক মহিলারই এমন দাবি।
উত্তর ২৪ পরগনার এই দ্বীপে গত বেশ কয়েক দিন ধরে আন্দোলন করছেন মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ, শেখ শাহজাহান ও তাঁর দুই সঙ্গী শিবপ্রসাদ হাজরা এবং উত্তম সর্দার মিলে শুধু বেআইনি ভাবে জমি দখলই করেননি, মহিলাদের উপরেও অত্যাচার চালিয়েছেন। এই বিষয়ে দুই মহিলা এর মধ্যেই আদালতে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন। যে ঘটনার পরে শিবু ও উত্তমের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। যদিও তৃণমূলের একটা বড় অংশের দাবি, ওই আন্দোলনকারীরা বহিরাগত। তাই তাঁরা মুখ ঢেকে রয়েছেন। সত্যিই কি তাই?
আন্দোলনকারীরা বলছেন, তাঁরা মুখ ঢেকে রয়েছেন আতঙ্কে।
বুধবার সন্দেশখালির দাসপাড়ার এক আন্দোলনকারী মহিলা বলেন, “আমরা প্রথমে মুখ খুলেই সামনে এসেছিলাম। সেই সময় চিহ্নিত করে আমাদের এবং আমাদের স্বামীদের নামে মামলা করা হয়। তার পর থেকে ভয়েই মুখ ঢেকেছি। তৃণমূল যদি আমাদের প্রাণের সুরক্ষা দিতে পারে, যদি নিশ্চিত করে বলে মিথ্যে মামলায় জড়ানো হবে না, তা হলে মুখ খুলেই সামনে আসব।”
যে নির্যাতিতা মহিলার গোপন জবানবন্দির ভিত্তিতে শিবপ্রসাদ গ্রেফতার হয়, তিনি বলেন, “নতুন করে আর কোনও সমস্যা হয়নি। সবাই পাশে থাকার আশ্বাস দিচ্ছেন। মনের জোর পাচ্ছি। তবে পরিস্থিতি থিতিয়ে গেলে আবার কী হয়, তাই নিয়ে ভয় আছি।” ওই মহিলা তাঁর বাড়ির একাংশ ভাঙচুর করার অভিযোগ তুলেছেন কয়েক দিন আগে। পুলিশ লাল ফিতে দিয়ে বাড়ির আশপাশ ঘিরে দিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ফরেন্সিক দল আসবে, ঘরের ভাঙা অংশ পরীক্ষা করে দেখা হবে৷
পাত্রপাড়া, মাইতিপাড়া, ত্রিমনী- সহ সন্দেশখালির মূল দ্বীপে আসার বিভিন্ন খেয়াঘাটে সিসি ক্যামেরা বসানো। হয়েছে মঙ্গলবার। শুভেন্দু অধিকারী যখন আসেন, ফেরিঘাট থেকে বিডিও অফিস পর্যন্ত ছেয়ে ছিল 'ওঁ' লেখা পতাকা। তার সঙ্গে ছিল 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি। এই আবহে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে আদতে গ্রামবাসীর গতিবিধির উপরে নজরদারি চালানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে মনে করছেন গ্রামবাসীর অনেকে। পাত্রপাড়ার বাসিন্দা এক মহিলা বলেন, “তৃণমূলের নেতারা বারবার বলছেন, বহিরাগতরা এলাকায় ঢুকছে। এই তত্ত্ব প্রমাণ করতেই কি পুলিশ নজরদারি চালাচ্ছে? সে জন্যই কি সিসি ক্যামেরা বসিয়েছে?” তিনি জানান, শাহজাহান গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত এবং দোষীরা উপযুক্ত শাস্তি না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
পুলিশের একটি সূত্রে জানানো হয়েছে, এলাকাবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থেই সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। নজরদারির অভিযোগ ঠিক নয়। এ দিন সকালে সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের ২০ জন সদস্যের এক প্রতিনিধি দল সন্দেশখালি গিয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy