n আকাশছোঁয়া: বিদ্যুৎ সংযোগে বসছে এমনই স্তম্ভ। আমোদপুর-কাটোয়া লাইনে। কীর্ণাহারে। ছবি: কল্যাণ আচার্য
দীর্ঘদিনের দাবি মেনে ন্যারোগেজ থেকে ব্রডগেজে আগেই উন্নীত হয়েছিল আমোদপুর-কাটোয়া রেলপথ। এ বার শুরু হল তার বৈদ্যুতিকরণের কাজ।
রেল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯১৬ সালে ‘ম্যাকলিওড রাসেল কোম্পানি’ আমোদপুর থেকে কাটোয়া পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার ন্যারোগেজ রেলপথ তৈরি করে। ১৯১৭ সালে ওই রেলপথে যাত্রা শুরু হয় ট্রেনের। এক সময় ওই রেলপথে ৮-১০ কামরার ৬ জোড়া ট্রেন যাতায়াত করত। ১৩টি স্টেশন ছিল। পুরো রুট পেরোতে সময় লাগত প্রায় ৪ ঘন্টা।
এলাকার প্রবীণদের অনেকে জানান, কলকাতা থেকে কাটোয়া স্টেশনে নেমে ন্যারোগেজ ট্রেন ধরে লাভপুরের বাড়িতে ফিরতেন সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। তার অনেক রচনাতেও ওই ‘ছোটলাইনের ট্রেনের’ কথা ঘুরেফিরে এসেছে। স্থানীয়দের কাছে তা ওই নামেই পরিচিত ছিল। ১৯৬৬ সালে ভারতীয় রেল ওই রেলপথ অধিগ্রহণ করে। ক্রমে ট্রেনের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় দু’জোড়ায়। পরে ন্যারোগেজ রেলপথকে ব্রডগেজে বদলের দাবি ওঠে। সেই দাবি মেনে ২০১৩ সালে ব্রডগেজ তৈরির জন্য ৩৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করে পূর্ব রেল। ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি শেষ বার যাত্রা করে ন্যারোগেজ ট্রেন। প্রতিটি স্টেশনে চোখের জলে ‘ছোটলাইনের ট্রেন’কে বিদায় জানিয়েছিলেন এলাকার মানুষ। ২০১৮ সালের ২৪ মে ওই লাইনে প্রথম ব্রডগেজ ট্রেন চলাচল শুরু হয়। সে দিনও ফুলমালা দিয়ে ট্রেনটিকে বরণ করে নেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ বার সেই রেলপথের বৈদ্যুতিকরণ হওয়ায় এলাকার বাসিন্দারা খুশি। এখন ওই রেলপথে একটি ট্রেনই দিনে দু’বার যাতায়াত করে। কিন্তু অন্য লাইনে গন্ডগোল হলে আরও অনেক ট্রেন ওই রেলপথ দিয়ে যায়। চলে মালগাড়িও।
লাভপুরের সাংস্কৃতিক কর্মী উজ্বল মুখোপাধ্যায়, কীর্ণাহারের ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম, নেপাল দাসবৈরাগ্য বলেন, ‘‘ওই রেলপথে বৈদ্যুতিককরণ হচ্ছে শুনে ভাল লাগছে। তার পাশাপাশি কয়েকটি ট্রেন বাড়লেও সুবিধা হয়।’’ পূর্ব রেলের এক আধিকারিক জানান, ওই লাইনে শীঘ্রই বৈদ্যুতিক ট্রেন চালু হয়ে যাবে। যদিও ওই রুটে যাত্রীসংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কম, তবুও এলাকার বাসিন্দাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব রেলমন্ত্রকে পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy