—ফাইল চিত্র।
মূর্তি ভাঙার রাজনীতিতে জড়িয়ে গিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের নাম। বিষয়টি দিল্লিতে সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছে রাজ্য বিজেপি। এর ফলে যাদবপুরের ‘ইনস্টিটিউট অব এমিনেন্স’ বা বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠান হওয়ার পথে কাঁটা পড়বে কি না, উঠছে সেই প্রশ্ন।
মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের র্যাঙ্কিং (এনআইআরএফ) অনুযায়ী দেশের আঞ্চলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে প্রথম স্থানে থাকা যাদবপুরকে ‘ইনস্টিটিউট অব এমিনেন্স’ করার বিষয়টি কেন্দ্রের বিবেচনায় রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সেই জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য-পরিসংখ্যান জমাও দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে কেওড়াতলা মহাশ্মশানের কাছে পার্কের মধ্যে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তি ভাঙার ঘটনায় বুধবার যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে যাদবপুরের কয়েক জন পড়ুয়া আছেন। মূর্তি ভাঙার রাজনীতি ঘিরে বৃহস্পতিবার যাদবপুরে যাঁরা একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সঙ্গে গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়েন, তাঁদের মধ্যেও ছিলেন যাদবপুরের অনেক পড়ুয়া।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ শুক্রবার জানান, এই সব ঘটনার রিপোর্ট তাঁরা দিল্লিতে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়েছেন। ওই সব ঘটনায় যাদবপুরের এক শ্রেণির পড়ুয়ার ভূমিকার কথাও জানানো হয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক মেধাবী পড়ুয়া আছে, যারা আগামী দিনে ভাল জায়গায় যাবে। ‘‘তারা যদি দেশের সংস্কৃতিকে, দেশের নেতাদের অসম্মান করে, তা হলে সেটা চিন্তার বিষয়। কেন্দ্রীয় সরকার যাদবপুর-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ছাত্রছাত্রীদের কর্মকাণ্ড জানুক। কী ধরনের দেশদ্রোহী কার্যক্রমের সঙ্গে এরা যুক্ত তা বুঝুক,’’ বলেন দিলীপবাবু। তিনি চান, এই সব দিক যাচাই করে যাদবপুরকে ‘ইনস্টিটিউট অব এমিনেন্স’-এর সম্মান দেওয়া যায় কি না, সেটা স্থির করুক কেন্দ্র।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জহওরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যাদবপুর ক্যাম্পাসে যে-মিছিল হয়েছিল, সেখানে জাতীয়তা-বিরোধী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এমনকী পোস্টার পড়েছিল আফজল গুরু, এস আর গিলানির সমর্থনে। আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী সেই ঘটনার রিপোর্ট চেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের কাছে। আর উপাচার্য সুরঞ্জন দাস জানিয়েছিলেন, তিনি বাইরের কোনও রকম হস্তক্ষেপ চান না। আলোচনার মাধ্যমেই গোটা বিষয়টি মিটিয়ে দেবেন।
অসুস্থতার কারণে উপাচার্য দীর্ঘ ছুটিতে আছেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রদীপ ঘোষ এ দিন জানান, ‘ইনস্টিটিউট অব এমিনেন্স’ সম্মান দেওয়া হবে কি না, সেটা ঠিক করার ক্ষেত্রে শিক্ষা-উৎকর্ষই মূল বিচার্য। যে-সব ঘটনা ঘটেছে, সবই তো বিশ্ববিদ্যলয়ের ক্যাম্পাসের বাইরে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন রয়েছে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। ‘‘যে-স্বল্প আর্থিক সহায়তায় যাদবপুরে উন্নত মানের পঠনপাঠন এবং গবেষণা হয়, তা দেশের অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্ভব নয়। তাই যে কোনও র্যাঙ্কিংয়ে যাদবপুরের এই বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত,’’ বলেন যাদবপুরের শিক্ষক সমিতি জুটা-র সহ-সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy