Advertisement
E-Paper

গ্যাসের পরিচয় এখনও অজানা

মঙ্গলবার সকাল থেকে বেলুড়ের বজরংবলী লোহা বাজার ও সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন পর্ষদের তদন্তকারীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৯
গঙ্গা থেকে সিলিন্ডার তোলার চেষ্টা সকাল থেকে ।

গঙ্গা থেকে সিলিন্ডার তোলার চেষ্টা সকাল থেকে ।

বেলুড়ে সোমবার আতঙ্ক ছড়ানো গ্যাসটি যে আসলে কী, তা জানা গেল না পরের দিনও। যে সমস্ত নমুনা থেকে ওই গ্যাসের পরিচয় জানা সম্ভব হত, সেগুলির কোনও অস্তিত্বই পাননি রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তদন্তকারীরা। প্রাথমিক ভাবে ক্লোরিন বলে মনে হলেও পরীক্ষায় তার অস্তিত্ব প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে কিছু বলতে পারছেন না তদন্তকারীরা।

মঙ্গলবার সকাল থেকে বেলুড়ের বজরংবলী লোহা বাজার ও সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন পর্ষদের তদন্তকারীরা। গঙ্গার জলের নমুনাও পরীক্ষা করেন তাঁরা। তবু গ্যাসের পরিচয় এখনও অজানা কেন?

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রের খবর, সব চেয়ে ভাল নমুনা যেখান থেকে সংগ্রহ করা যেত, সেই গঙ্গার জলে সোমবার দুপুরে সিলিন্ডারটি ফেলে দেওয়ার পরে দু’বার জোয়ার-ভাটা হয়ে গিয়েছে। তার ফলে গঙ্গার জলে কোনও অস্তিত্বই মেলেনি সেই গ্যাসের। যেখানে সিলিন্ডারটি ফেলা হয়েছিল, সেখানকার জল হলুদ হয়ে গিয়েছিল। এ দিন সেখানকার জল ছিল ঘোলাটে। এ দিন জল থেকে সিলিন্ডারটি তোলা হলেও সেখানে কোনও গ্যাসের অস্তিত্ব মেলেনি। গ্যাসের প্রভাবে যে কচুরিপানা হলুদ হয়ে গিয়েছিল, তাতেও কোনও গ্যাসের অস্তিত্ব মেলা কঠিন। এমনটাই মত পর্ষদের।

বজরংবলী বাজারে যেখানে সিলিন্ডারটি কাটা হচ্ছিল, সেখানে সোমবার দমকল এত জল দিয়েছিল যে, ওই জায়গাতেও গ্যাসের অস্তিত্ব মেলেনি। পর্ষদ-কর্তারা জানিয়েছেন, গ্যাসের প্রভাবে গঙ্গায় মরা ব্যাঙ মিলেছে। সেই সঙ্গে গঙ্গার জলের জীববৈচিত্রে আর কোনও পরিবর্তন ঘটেছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। যেখান থেকে ওই সিলিন্ডার আনা হয়েছিল, সেই জায়গাটি চিহ্নিত করা জরুরি বলে মনে করছেন তাঁরা। ওই সিলিন্ডারে ক্লোরিনের থেকেও বিষাক্ত কোনও গ্যাস ছিল কি না, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত নন তদন্তকারীরা।

পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে যেটা মনে হচ্ছে, সেটা পুরো ঠিক কি না জানতে গেলে যেখান থেকে গ্যাসটি এসেছিল এবং যিনি সিলিন্ডারটি এনেছিলেন, তাঁদের খুঁজে বার করতে হবে। পুলিশকেও সেটাই বলা হয়েছে।’’ গ্যাস সিলিন্ডারটি যিনি কিনে এনেছিলেন, তাঁর খোঁজে ইতিমধ্যেই তল্লাশি শুরু করেছে বেলুড় থানার পুলিশ।

এশিয়ার বৃহত্তম লোহা বাজার বলে পরিচিত বেলুড়ের বজরংবলীর ওই কারখানাটি এ দিন বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। ভিতরে অবশ্য রয়ে গিয়েছে আরও তিনটি সিলিন্ডার। সেগুলি পরীক্ষা করে গিয়েছেন পর্ষদের তদন্তকারীরা। পুলিশের দাবি, পর্ষদের কর্তারা তাদের জানিয়েছেন, ওই সিলিন্ডারগুলি খালি।

বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, গ্যাসের সিলিন্ডার নিলামে দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সংস্থা সেটি অ্যাসিড ও গরম জল দিয়ে ধুয়ে পরীক্ষা করে তবেই বাইরে ছাড়ে। ফলে তাতে গ্যাস থাকে না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সিলিন্ডারে গ্যাস রয়ে গেল কী ভাবে? বজরংবলীর ব্যবসায়ীদের একাংশ জানাচ্ছেন, হলদিয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের বন্ধ হওয়া একটি কারখানা থেকে প্রায় ১০০ টন এমন সিলিন্ডার এনেছেন এক ছাঁট লোহার ব্যবসায়ী। সেগুলিই বিভিন্ন গুদামে রাখা হয়েছে। তদন্তকারীদের ধারণা, ঠিক পথে ওই সব সিলিন্ডার না আসার ফলেই সেগুলি ভাল ভাবে পরিষ্কার করা হয়নি।

এ দিন জানা যায়, গ্যাস লিক করতে শুরু করেছিল রবিবার রাতেই। কয়েক জন কর্মী সিলিন্ডার কাটতে গেলে হিসহিস করে গ্যাস বেরোতে শুরু করে। তখনকার মতো কাজ বন্ধ করে দেন কর্মীরা। সোমবার সকালে ফের গ্যাস কাটার দিয়ে কিছুটা কাটতেই গলগল করে গ্যাস বেরোতে শুরু করে। তাতেই ঘটে বিপত্তি। এ দিন বালি ব্রিজের নীচে জেটিয়া ঘাট থেকে প্রায় সাত ঘণ্টার চেষ্টায় সিলিন্ডারটি তোলা হয়। প্রথমে দড়ি দিয়ে তোলার চেষ্টা হলেও, পরে ক্রেন এনে টেনে তুলতে হয় সিলিন্ডারটি।

Belur gas accident Gas Belur বেলুড় গ্যাস
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy