Advertisement
E-Paper

আইনজীবীরা পাশে, পাড়ুই মামলা দিল্লিতে

হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন ওই মামলার অন্যতম আবেদনকারী হৃদয় ঘোষ। আর সেই লড়াইয়ে তাঁর সহায় হচ্ছেন কলকাতার এক বিশিষ্ট আইনজীবী-সহ আরও অনেক আইনজ্ঞ। আগামী সপ্তাহেই তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন হৃদয়বাবুর আইনজীবী শীর্ষেন্দু সিংহরায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৩৬

হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন ওই মামলার অন্যতম আবেদনকারী হৃদয় ঘোষ। আর সেই লড়াইয়ে তাঁর সহায় হচ্ছেন কলকাতার এক বিশিষ্ট আইনজীবী-সহ আরও অনেক আইনজ্ঞ। আগামী সপ্তাহেই তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন হৃদয়বাবুর আইনজীবী শীর্ষেন্দু সিংহরায়।

শুক্রবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে পাড়ুই-মামলা এক ধাক্কায় তিন সপ্তাহ পিছিয়ে পিছিয়ে যাওয়ার পরেই শীর্ষেন্দুবাবু জানান, তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা ভাবছেন। সে কাজে সাহায্য করতে ইতিমধ্যেই এগিয়ে এসেছেন একাধিক আইনজীবী। তাঁরা হৃদয়বাবুকে আইনি সাহায্য দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। শীর্ষেন্দুবাবু শনিবার বলেন, “হৃদয় ঘোষ দরিদ্র মানুষ। তাঁর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু অনেক আইনজীবী এগিয়ে এসেছেন। প্রয়োজনে আমরা মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করব। মামলা লড়ার জন্য যে আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে যাবেন, তাঁরা খরচ নেবেন না।”

হৃদয়বাবুকে সাহায্য করার প্রশ্নে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন কলকাতার এক প্রবীণ আইনজীবী। ব্যক্তিগত কারণে নিজে এই মামলা লড়তে অপারগ বলে জানালেও বিনা খরচায় মামলার সমস্ত কাগজপত্র তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। ওই প্রবীণ আইনজীবী এ দিন বলেন, “এ রকম মামলায় আমি পরামর্শ দিতে রাজি। তার জন্য এক পয়সাও নেব না। বরং সুপ্রিম কোর্টে মামলা লড়ার জন্য প্রয়োজনে অর্থ সাহায্যও দেব।”

সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হওয়ায় নতুন করে আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন পাড়ুই-কাণ্ডে নিহত সাগর ঘোষের ছেলে হৃদয় ঘোষ। শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চের রায় শোনার পরে হৃদয়বাবু জানিয়েছিলেন, এর ফলে বিচার বিলম্বিত হবে এবং অনুব্রতর বাহিনী আরও সাহস পেয়ে যাবে। শনিবার তিনি বলেন, “আমরা এখনও ভীত সন্ত্রস্ত। অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে হুমকি চলছেই। কয়েক জন প্রতিবেশী পাশে থাকছেন, সেটুকুই ভরসা। আমাদের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে মামলা লড়ার কথা বলায় নতুন করে আশার আলো দেখছি।” তবে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত আইনজীবীর সাহায্য তিনি নেবেন না বলে জানিয়েছেন হৃদয়বাবু। তিনি বলেন, “বিনা পয়সায় লড়তে চাইলেও রাজনীতির ছত্রচ্ছায়ায় থাকা কোনও আইনজীবীর সাহায্য আমি চাই না।”

বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত যে ভাবে বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারের বিষয়টি নিয়ে ক্রমাগত পুলিশের উপরে চাপ দিচ্ছিলেন, তাতে শুক্রবারই ওই মামলার একটা হেস্তনেস্ত হয়ে যাবে বলে আশা করেছিলেন সাগরবাবুর পরিবার। সাগরবাবুর ছেলে হৃদয় ঘোষ ছিলেন হাইকোর্টে। কিন্তু হৃদয়বাবুর মা সরস্বতীদেবী এবং স্ত্রী শিবানীদেবী ছিলেন বাড়িতে। রায়ের অপেক্ষায় টেলিভিশনের দিকেই চোখ ছিল তাঁদের। হৃদয়বাবুর কথায়, “রায় শুনে দু’জনেই ভেঙে পড়েন। মা তো প্রচণ্ড আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন এই বুঝি হামলা হল বাড়িতে! তবে আমাদের বাড়িতে প্রহরারত দুই পুলিশকর্মী শাশুড়ি-বউমাকে তাঁদের নিরাপত্তার ব্যাপারে নিশ্চিন্ত থাকতে আশ্বাস দিয়েছেন।” বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের নির্দেশেই সাগর ঘোষের পরিবারের জন্য সব সময়ের নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করেছে বীরভূম জেলা পুলিশ।

পাড়ুই-মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডলকে কেন গ্রেফতার করা যায়নি, সে প্রশ্ন তুলে বৃহস্পতিবার বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বলেন, শুক্রবারই রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে আদালতে দাঁড়িয়ে এর ব্যাখ্যা দিতে হবে। প্রধান বিচারপতি অরুণকুমার মিশ্র এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে শুক্রবার আবেদন জানায় রাজ্য। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ডিভিশন বেঞ্চ পাড়ুই-কাণ্ডের শুনানি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দেয়। স্থগিতাদেশ দেয় ডিজি-র আদালতে হাজির হওয়ার ব্যাপারেও। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ আরও জানায়, তিন সপ্তাহ পরে মামলাটি যখন শুনানির জন্য উঠবে তখন তা বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে আর হবে না, হবে প্রধান বিচারপতির এজলাসেই। মামলার সব কাগজ তাঁর ডিভিশন বেঞ্চে পাঠানোর নির্দেশও দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

parui case supreme court hriday ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy