Advertisement
০২ মে ২০২৪

আগুন দাম পদ্ম-গাঁদার, সঙ্কটে গৃহস্থের লক্ষ্মী-আরাধনা

এক-একটা পদ্মের দাম ১৬ টাকা। সোমবার সকাল দশটা নাগাদ সেই ফুল মল্লিকঘাট বাজারে আসার আধ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ঝুড়ি খালি। মেদিনীপুরের ওই বিক্রেতার পাশেই বসে ছিলেন আর এক ফুলবিক্রেতা। ঝুড়িতে পদ্মের আকার বেশ ছোট। তবু তা-ও বিকোচ্ছে ১২ টাকায়। শুধু পদ্মই নয়, লক্ষ্মীপুজোর আগের দিনে রজনীগন্ধা থেকে গাঁদা, দোপাটি সব ফুলের দামই চড়া। মল্লিকঘাটের এক বিক্রেতা জানালেন, লক্ষ্মীপুজোয় ঝুরো হলুদ গাঁদার চাহিদা খুব বেশি থাকে।

মল্লিকঘাট ফুলবাজারে পদ্মের পসরা। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

মল্লিকঘাট ফুলবাজারে পদ্মের পসরা। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৪৮
Share: Save:

এক-একটা পদ্মের দাম ১৬ টাকা। সোমবার সকাল দশটা নাগাদ সেই ফুল মল্লিকঘাট বাজারে আসার আধ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ঝুড়ি খালি। মেদিনীপুরের ওই বিক্রেতার পাশেই বসে ছিলেন আর এক ফুলবিক্রেতা। ঝুড়িতে পদ্মের আকার বেশ ছোট। তবু তা-ও বিকোচ্ছে ১২ টাকায়। শুধু পদ্মই নয়, লক্ষ্মীপুজোর আগের দিনে রজনীগন্ধা থেকে গাঁদা, দোপাটি সব ফুলের দামই চড়া। মল্লিকঘাটের এক বিক্রেতা জানালেন, লক্ষ্মীপুজোয় ঝুরো হলুদ গাঁদার চাহিদা খুব বেশি থাকে। এক কেজি ঝুরো গাঁদার দামও সাধারণ সময়ের দামের থেকে অনেকটাই বেশি। এক কেজি ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিকোচ্ছে বলে জানালেন ফুলবিক্রেতারা।

সোমবার সকালের তুলনায় বিকেলে মল্লিকঘাটে ফুলের দাম কিছুটা কমলেও মঙ্গলবার, লক্ষ্মীপুজোর দিন সকালে দাম ফের বাড়বে বলে মনে করছেন বিক্রেতারা। সিঁড়ির ধাপে দাঁড়িয়ে গাঁদাফুল বিক্রি করছিলেন এক বিক্রেতা। জানালেন, তিন ফুটের মতো একটা লাল গাঁদার মালার দাম ১৫ টাকা। হলুদ গাঁদার মালা ২০ টাকা। চরণ হালদার নামে এক বিক্রেতা বলেন, “লক্ষ্মী প্রতিমাকে হলুদ গাঁদার মালা পরানোর চলই সবচেয়ে বেশি। সেই মালার দাম ২০ টাকার কম নয়। পুজোর দিনে আরও বাড়তে পারে।”

মল্লিকঘাট বাজারে ফুল কিনতে এসেছিলেন মানিকতলার বাসিন্দা অশোক বসু। বললেন, “পাড়ার দোকানে ফুলের দাম অনেক বেশি বলে মল্লিকঘাটে এসেছিলাম। কিন্তু এখানেও বিশেষ সুবিধা হল না। পাড়ায় দোকানে পদ্মের দাম ১৬ টাকা। এখানেও প্রায় একই।”

ছবিটা একই নিউ মার্কেটেও। পদ্ম, গাঁদার মতো ফুল কিনতে গিয়ে আগুন ছোঁয়া দামে সেখানেও হাত পুড়েছে ক্রেতাদের। সোমবার ঝুরো হলুদ গাঁদা বিকিয়েছে কেজি প্রতি ২০০ টাকায়। পদ্মের দামও ছিল এক-একটি ১৫ থেকে ২০ টাকা। নিউ মার্কেটের এক ফুলবিক্রেতা সুরজিৎকুমার দাঁ বলেন, “এ বার লক্ষ্মীপুজোয় পদ্মের জোগান বেশ কম। দুর্গাপুজোর বিপুল চাহিদা মেটাতে গিয়ে লক্ষ্মীপুজোয় পদ্মের জোগান বেশ কমে গিয়েছে। এ বার তাই পদ্মের দাম চড়া।”

শুধু গাঁদা বা পদ্মই নয়, চাহিদা রয়েছে দোপাটি বা অপরাজিতারও। দোপাটি বিকোচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে। অপরাজিতা ৫০-৬০ টাকা কেজি। সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুলব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়েক বলেন, “গ্রামাঞ্চলে বা মফস্সলেই লক্ষ্মীপুজোয় ফুলের একটা বড় অংশ বিক্রি হয়ে যায়। তাই মল্লিকঘাটে ফুল পৌঁছয় চাহিদা অনুযায়ী অনেকটা কম। জোগান কম থাকায় ফুলের দাম অনেকটা বেড়ে যায়।”

ফুলবাজারের বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, দুর্গাপুজোর তুলনায় লক্ষ্মীপুজো সংখ্যায় অনেক বেশি হয়। বিশেষত গ্রাম বা মফস্সলে যেখানে পাড়ায় একটা বা দুটো দুর্গাপুজো হয়, সেখানে লক্ষ্মীপুজো হয় প্রায় প্রতিটি বাড়িতে। লক্ষ্মীপুজোয় কলকাতার মতোই ফুলের চাহিদা থাকে মফস্সল বা গ্রামেও। স্থানীয় ফুলবাজারেও ফুলের চাহিদা থাকে প্রচুর।

লক্ষ্মীপুজোর আগে বেশ কিছু ফলের দামও বেশ চড়া। লেক মার্কেটের এক বিক্রেতা জানালেন, শসার দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, আপেল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। এ ছাড়া বেদানা, ন্যাসপাতি,পেয়ারার দামও সাধারণ দিনের দামের থেকে বেশ কিছুটা বেশি বলে জানালেন মানিকতলা বাজারের ফলবিক্রেতারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

lakshmi pujo aryabhatta khan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE