Advertisement
E-Paper

কালো পতাকা দেখে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, লাভ নেই

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কালো পতাকা দেখালেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শনিবার ওই যাদবপুরে ‘কালটিভেশন অফ সায়েন্স ক্যাম্পাসে’ গিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। তখনই এক দল পড়ুয়া তাঁকে কালো পতাকা দেখান। পার্থবাবু অবশ্য দাবি করেন, এর পিছনে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকের উস্কানি রয়েছে এবং এতে তাঁকে প্রভাবিত করা যাবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৪ ০২:২৬

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কালো পতাকা দেখালেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শনিবার ওই যাদবপুরে ‘কালটিভেশন অফ সায়েন্স ক্যাম্পাসে’ গিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। তখনই এক দল পড়ুয়া তাঁকে কালো পতাকা দেখান। পার্থবাবু অবশ্য দাবি করেন, এর পিছনে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকের উস্কানি রয়েছে এবং এতে তাঁকে প্রভাবিত করা যাবে না।

আরও এক ধাপ এগিয়ে পার্থবাবু যাদবপুর কাণ্ডের পরে রাজ্যপালের কাছে যাওয়া পাঁচ প্রবীণ এমেরিটাস শিক্ষক-শিক্ষিকাকেও কটাক্ষ করেছেন। সেই দলে ছিলেন যাদবপুরের প্রাক্তন উপাচার্য অশোকনাথ বসু, অধ্যাপক সুকান্ত চৌধুরী, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অমিতা চট্টোপাধ্যায় এবং অধাপিকা যশোধরা বাগচী। যাদবপুরের নানা সমস্যা সম্পর্কে রাজ্যপালকে অবহিত করার পাশাপাশি তাঁরা স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের আগে সব দিক বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিলেন।

ওই শিক্ষকদের নাম না করে পার্থবাবু বলেন, “আমার মাথায় সাদা চুল মানেই পুরোটা সাদা নয়। ওঁদের নিয়োগ কী ভাবে হয়েছিল, সব জানা আছে।” সুকান্তবাবু এ বিষয়ে কিছু বলতে না চাইলেও অশোকনাথবাবু এবং অমিতা চট্টোপাধ্যায় প্রাক্তন দুই উপাচার্যই মনে করেন, শিক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্য প্রতিক্রিয়া জানানোর উপযুক্তই নয়। এক প্রাক্তন উপাচার্য আনন্দদেব মুখোপাধ্যায় বলেন, “উনি ওঁর রুচি অনুযায়ী মন্তব্য করেছেন। এর কোনও প্রতিক্রিয়া জানাব না। আমার পড়াশোনা ও অন্য কাজ রয়েছে।”

গত ১৬ সেপ্টেম্বর যাদবপুরে ছাত্রছাত্রীদের উপরে পুলিশি নির্যাতনের পরে এ দিনই প্রথম পার্থবাবু যাদবপুর এলাকায় গেলেন। ছাত্রদের প্রতিবাদ যখন কার্যত সামাজিক ধিক্কারে পরিণত হয়েছিল, সব দিক থেকেই যখন উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি উঠেছিল, তখনও পার্থবাবু তাঁর পাশেই থেকেছেন। এ দিন ওয়েবকুপা-র আলোচনাসভার বিষয় ছিল শিক্ষা-সংস্কৃতি, ছাত্র আন্দোলন ও শিক্ষকের ভূমিকা। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই শিক্ষামন্ত্রীর যাদবপুর যাওয়া। পার্থবাবুর গাড়ি ‘কালটিভেশন অফ সায়েন্স’ ক্যাম্পাসে ঢোকার মুখেই এক দল ছাত্রছাত্রী কালো পতাকা দেখান।

অনুষ্ঠানে নিজের বক্তৃতায় পার্থবাবু ছাত্রদের আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “সিপিএমের আমলে বিরোধী দলনেতা থাকার সময়ে আমাকে সিঙ্গুরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। মঙ্গলকোটে সশস্ত্র পাঁচ হাজার দুর্গাবাহিনীর মধ্যে চেয়ার নিয়ে একা বসেছিলাম। কিন্তু তাতেও সিপিএম আমাকে দমাতে পারেনি।” তাঁর আরও বক্তব্য, “যাঁরা পিছনে থেকে ছাত্রদের দিয়ে এই সব করাচ্ছেন, তাঁরা জানেন না, আমাকে কালো পতাকা দেখিয়ে দমানো যাবে না।”

পার্থবাবুর ইঙ্গিত যাদবপুরের শিক্ষক সংগঠন জুটা-র দিকে বলে অনেকেই মনে করছেন। কারণ ছাত্রছাত্রীদের মতো জুটা-ও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার। এ দিন পার্থবাবুর হুঁশিয়ারি সম্পর্কে জুটা-র সহ সভাপতি পার্থপ্রতিম বিশ্বাস বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের পিছনে অন্যদের উস্কানি রয়েছে বলে শিক্ষামন্ত্রী যদি অভিযোগ করেন, পড়ুয়ারাই তার জবাব দেবে।” আর আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের বক্তব্য, “যে উপাচার্য পুলিশ ডেকে ছাত্র পিটিয়েছেন, শিক্ষামন্ত্রী তাঁর পাশেই দাঁড়িয়েছেন। তাই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একটি কমর্সূচি হিসাবেই তাঁকে কালো পতাকা দেখিয়েছি।”

বিশিষ্ট পাঁচ শিক্ষক সম্পর্কে পার্থবাবুর উক্তি সম্পর্কেও জুটা এ দিন তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। জুটা-র সহ সভাপতি বলেন, “ওই শিক্ষকেরা আইন মেনেই নিযুক্ত হয়েছিলেন এবং তার পরে নিজেদের যোগ্যতায় প্রতিষ্ঠান এবং রাজ্যের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।” তাঁদের সম্পর্কে এমন কটাক্ষ করে শিক্ষামন্ত্রী নিজেকে এবং তাঁদের সরকারকেই শিক্ষিতসমাজে হেয় করলেন বলে জুটা মনে করছে।

partha chattopadhyay jadavpur case
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy