Advertisement
E-Paper

কর্মীর বদলি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ রাজ্য

কর্মচারী ইউনিয়নের এক নেতাকে বদলির সরকারি সিদ্ধান্ত খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই মতো সোমবার নবপর্যায় সংগঠনের ওই নেতা, সন্দীপ দাশগুপ্ত বেলা সওয়া ১০টায় নবান্নের অর্থ দফতরে গিয়ে হাজিরা খাতায় সই করেন। কিন্তু বিকেলে চিঠি দিয়ে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে এ দিনই সুপ্রিম কোর্টে স্পেশ্যাল লিভ পিটিশন (এসএলপি) দায়ের করেছে রাজ্য। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ আসা পর্যন্ত সন্দীপবাবুকে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৪ ০৩:৩৪

কর্মচারী ইউনিয়নের এক নেতাকে বদলির সরকারি সিদ্ধান্ত খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই মতো সোমবার নবপর্যায় সংগঠনের ওই নেতা, সন্দীপ দাশগুপ্ত বেলা সওয়া ১০টায় নবান্নের অর্থ দফতরে গিয়ে হাজিরা খাতায় সই করেন। কিন্তু বিকেলে চিঠি দিয়ে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে এ দিনই সুপ্রিম কোর্টে স্পেশ্যাল লিভ পিটিশন (এসএলপি) দায়ের করেছে রাজ্য। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ আসা পর্যন্ত সন্দীপবাবুকে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।

নবপর্যায়ের যুগ্ম সম্পাদক সন্দীপবাবুকে গত বছরের ২১ নভেম্বর দার্জিলিঙের গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)-এ ডেপুটেশনে বদলি করার নির্দেশ দেয় রাজ্য কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতর। তিনি কাজ করতেন অর্থ দফতরের হেড অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে। সরকারি নির্দেশ জারির পরে দিনই তাঁকে ‘রিলিজ অর্ডার’ ধরিয়ে দেয় তাঁর দফতর। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (স্যাট)-এ আবেদন জানান সন্দীপবাবু। স্যাট তাঁকে পুরনো জায়গায় ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেয়।

স্যাট-এর নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করে রাজ্য সরকার। গত ১৯ মে সরকারের আবেদন খারিজ করে দিয়ে সন্দীপবাবুকে অর্থ দফতরের ওই পদে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় নিশীথা মাতরে এবং তাপস মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে গঠিত কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

সন্দীপবাবু জানান, হাইকোর্টের নির্দেশ নিয়ে এ দিন তিনি অফিসে হাজিরা দিতে যান। হাজিরা খাতায় সই-ও করেন। কিন্তু বিকেল ৪টে নাগাদ অর্থ দফতরের যুগ্মসচিব শিউকুমার রাম ডেকে পাঠিয়ে তাঁর হাতে একটি চিঠি ধরিয়ে দেন। কী বলা হয়েছে সেই চিঠিতে? অর্থ দফতর সূত্রের খবর, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার এ দিনই সুপ্রিম কোর্টে এসএলপি করেছে। সরকারের আশা, খুব শীঘ্রই এর শুনানি হবে। এই পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের জন্য তাঁকে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।

কেন সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্য?

রাজ্যের আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ব্যাখ্যা, “হাইকোর্টের রায় ঠিক মনে হয়নি রাজ্য সরকারের। তাই ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।” এই ঘটনায় কর্মী সংগঠনগুলির মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, সরকার সুপ্রিম কোর্টে এসএলপি দায়ের করলেও সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেনি। তা হলে কোন যুক্তিতে সন্দীপবাবুকে কাজে যোগ দিতে বারণ করছে সরকার? কারও কারও মতে, এই কাজ করে হাইকোর্টের নির্দেশকে অমান্য করেছে সরকার। কর্মী সংগঠনগুলির তোলা এই সব প্রশ্ন নিয়ে সরকারি তরফে কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে সরকারের এক মুখপাত্রের বক্তব্য, এমন ধরনের কোনও ঘটনা আদালতে গেলে সরকার সংশ্লিষ্ট কর্মীকে কাজে যোগ দিতে বারণ করতেই পারে।

সন্দীপবাবুর দাবি, সংশ্লিষ্ট কর্মীর সম্মতি ছাড়া সচিবালয়ের কর্মীদের ডিরেক্টরেট, কালেক্টরেটে বা সরকারি অধিগৃহীত সংস্থায় পাঠানো যায় না। সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করেই তাঁকে বদলি করা হয়েছিল। তাঁর মতে, “সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে দুর্বল করতেই আমাকে বদলি করা হয়েছিল। এটা সরকারের প্রতিহিংসামূলক আচরণ।” একাধিক সংগঠনের অভিযোগ, সরকারের কাজকর্মের সমালোচনা করায় একাধিক কর্মী ও অফিসারকে নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে বদলি অথবা সাসপেন্ড করা হয়েছে।

সন্দীপবাবু বলেন, “সরকার চিঠি দিলেও আজ, মঙ্গলবারও আমি কাজে যোগ দিতে যাব। এবং হাজিরা খাতায় সই করতেও চাইব। দেখা যাক কী হয়।”

নবপর্যায়ের সাধারণ সম্পাদক সমীর মজুমদারের দাবি, “বামফ্রন্ট আমলে বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে আমরা যখন আন্দোলন করেছি, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরে সেই সব অনিয়ম এই সরকার করছে।”

west bengal highcourt supreme court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy