Advertisement
E-Paper

ট্রেকিং পথে দলছুট হয়ে নিখোঁজ বাঙালি যুবক

ফের বিপর্যয় পাহাড়ে। পশ্চিম সিকিমে ট্রেকিং করতে গিয়ে খোঁজ মিলছে না কলেজ পড়ুয়া বিশ্বদীপ আচার্যের। সিকিম প্রশাসন সূত্রের খবর, জোংরি-গোয়েচা লা ট্রেকিং রুটের বাখিম এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়েছেন কুড়ির কোঠার ওই যুবক। পঁচিশে ডিসেম্বর ইয়কসাম পৌঁছন বিশ্বদীপ। সেখান থেকেই ট্রেকিং আয়োজক সংস্থা ‘রেড পান্ডা ট্রেকস অ্যান্ড ট্র্যাভেলস’-এর সঙ্গে ২৭ তারিখ ট্রেক শুরু করেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:২৭
বিশ্বদীপ আচার্য

বিশ্বদীপ আচার্য

ফের বিপর্যয় পাহাড়ে। পশ্চিম সিকিমে ট্রেকিং করতে গিয়ে খোঁজ মিলছে না কলেজ পড়ুয়া বিশ্বদীপ আচার্যের। সিকিম প্রশাসন সূত্রের খবর, জোংরি-গোয়েচা লা ট্রেকিং রুটের বাখিম এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়েছেন কুড়ির কোঠার ওই যুবক।

পঁচিশে ডিসেম্বর ইয়কসাম পৌঁছন বিশ্বদীপ। সেখান থেকেই ট্রেকিং আয়োজক সংস্থা ‘রেড পান্ডা ট্রেকস অ্যান্ড ট্র্যাভেলস’-এর সঙ্গে ২৭ তারিখ ট্রেক শুরু করেন তিনি। সংস্থার কর্ণধার ধনরাজ গুরুঙ্গ এ দিন জানিয়েছেন, বিশ্বদীপ এর আগেও দু’বার এই পথে ট্রেক করেছে তাঁদের সংস্থার সঙ্গেই। এ বারের ট্রেকিংয়ে বিশ্বদীপের সঙ্গী ছিলেন এক জার্মান, এক ইতালীয় এবং এক রাজস্থানি মহিলা। দু’জন গাইড এবং রাঁধুনিও ছিলেন দলে।

ধনরাজ জানিয়েছেন, ইয়কসাম থেকে হাঁটা শুরু করে বাখিম (৯২০০ ফুট) হয়ে চোখা পৌঁছনোর কথা ছিল তাঁদের। তার পর জোংরি, থামসিং দিয়ে গোয়েচা লা (১৬,৪০০ ফুট) হয়ে ফের ইয়াকসম পর্যন্ত ফিরতি পথ। ধনরাজের দাবি, ২৭ তারিখ বাখিম পৌঁছে সেখান থেকে হাঁটা শুরু করার পর বিশ্বদীপ একাই যেতে পারবেন বলে গাইডদের জানান। আর তখনই দলের বাকি সঙ্গীদের থেকে পিছিয়ে পড়েন বিশ্বদীপ। সে সময় সংস্থার দফতরে ফোনও করেছিলেন বিশ্বদীপ। জানিয়েছিলেন, দলছুট হয়ে পড়েছেন তিনি, পথ খুঁজে পাচ্ছেন না। এর পর থেকে আর যোগাযোগ করা যায়নি বিশ্বদীপের সঙ্গে।

বিশ্বদীপের দিদি দেবশ্রী আচার্যও বললেন, “তিন দিন ধরে ভাইয়ের খোঁজ নেই। যে সংস্থার মাধ্যমে ও ট্রেকিং-এ গিয়েছিল, তাঁরা জানিয়েছেন, ২৭ ডিসেম্বর শেষ ফোন করে রাস্তা হারিয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছিল ও। তার পরে আর যোগাযোগ করা যায়নি।” বুধবার বিকেলেই ইয়কসাম পৌঁছে গিয়েছেন বিশ্বদীপের আত্মীয় অলীপ আচার্য।

বাখিমের যেখান থেকে বিশ্বদীপের শেষ খবর মিলেছিল, সেই জায়গাটি কাঞ্চনজঙ্ঘা জাতীয় উদ্যানের অন্তর্গত। সিকিমের বন দফতরের তরফে ডিটি লেপচা জানিয়েছেন, স্থানীয় বাসিন্দা, ট্রেকিং সংগঠনের লোকজন, পুলিশ মিলিয়ে ২০ জনের একটি দল তৈরি হয়েছে। ঘন জঙ্গল এবং নানা রকম বন্যপ্রাণী থাকায় দিনের বেলায় তল্লাশি করা হচ্ছে। এখনও খোঁজ মেলেনি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রতি বছর দেশ-বিদেশের অসংখ্য অভিযাত্রী ট্রেকিং করেন ওই রুটে। আসেন পর্যটকেরাও। ওই পাহাড়ি পথের আশপাশে গভীর জঙ্গলে বুনো কুকুর, পাহাড়ি ভালুকের মত হিংস্র জন্তু রয়েছে। থাকতে পারে তুষার চিতাও।

অভিযাত্রী মহল বলছে, ট্রেকিং রুটটি তেমন কঠিন বা বিপজ্জনক না হলেও, ঘন জঙ্গলের মধ্যে পথ হারিয়ে ফেলার আশঙ্কা আছে। তা হলে হিংস্র প্রাণীর মুখে পড়াও অসম্ভব নয়। ১৯৮২ সালে ওই পথেই কোকতাং পর্বতশৃঙ্গ অভিযান করেছিলেন ‘নর্থবেঙ্গল এক্সপ্লোরার্স’ ক্লাবের সদস্যরা। ওই দলের অন্যতম সদস্য এবং ‘হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন’ (ন্যাফ)-এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু জানালেন, অভিযান শেষে ফেরার পথে বাখিম লাগোয়া গভীর জঙ্গলে হারিয়ে যান সেই দলটির এক সদস্য। দেড় দিন পরে খোঁজ মেলে তাঁর। অনিমেষবাবুর কথায়, “জঙ্গলের পথটি বেশ দুর্গম। নানা দিকে একাধিক চোরা পথ রয়েছে, যেগুলিতে ভুল করে গেলে জঙ্গলে পথ হারানোর আশঙ্কা আছে। আশপাশে কিছু খাদও আছে।”

দার্জিলিঙের ‘হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট’-এর প্রশিক্ষক কুশান শেরপাও জানালেন, যে এলাকাটির কথা বলা হচ্ছে, সেখানে গভীর খাদ, ঘন জঙ্গল রয়েছে। দিনেও সূর্যের আলো প্রায় ঢোকে না। শীতকালে মুড়ে থাকে কুয়াশার ঘন পরত। তাই ওই এলাকায় সকলকে সাবধানে চলাফেরা করতে বলা হয়।

trekking missing biswadeep acharya
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy