সেই কবে হামলা হয়েছে! কিন্তু রাজ্যে দু’দফায় ভোটের দিনে হামলা চালানোয় অভিযুক্ত শাসক দলের দুই মহিলা বিধায়কের সন্ধান এখনও মিলছে না। অন্তত পুলিশ তেমনই দাবি করছে। বাঁকুড়ার সোনামুখীর দীপালি সাহা বা উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁর ঊষারানি মণ্ডল এত দিনেও অধরা।
দুই বিধায়ককেই গ্রেফতার করার ব্যাপারে দাবি তুলেছে বিজেপি এবং সিপিএম। তাদের অভিযোগ, শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মদত থাকাতেই এখনও অধরা বিধায়কেরা। এ ব্যাপারে সোমবার বহু বার চেষ্টা করা হলেও অভিযুক্ত দুই বিধায়ক বা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে রাজ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর বক্তব্য, “ভোটের সময় অনেক অভিযোগ হয়। সব কিছুকে অত গুরুত্ব দেওয়া যায় না।” মন্ত্রীর কথায় ইঙ্গিত, অভিযোগগুলির সত্যতা নিয়ে দল এখনও নিঃসন্দেহ নয়। ফলে, দলীয় ভাবে বিধায়কদের আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেওয়ার প্রশ্নও অন্তত এই মুহূর্তে উঠছে না।
রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোটের দিন (৭ মে) সোনামুখীর সাহাপুর বুথে জনা ২০ সঙ্গীকে নিয়ে ঢুকে ভোটকর্মীদের মারধর করে ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে দীপালিদেবীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় আগে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে সাহাপুর লাগোয়া সামন্তবাঁধি গ্রাম থেকে প্রদীপ পণ্ডিত নামে আর এক তৃণমূল কর্মীকে ধরা হয়। তিনি এলাকায় দীপালি-অনুগামী বলে পরিচিত। বিষ্ণুপুর আদালতে সোমবার হাজির করানো হলে বিচারক ধৃতকে ১৪ দিনের জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
ঘটনার সময়ের কিছু ছবি ও তথ্য বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের কাছেই রয়েছে। পুলিশ তা চেয়েওছে। কিন্তু এখনও সে সব পুলিশের হাতে তুলে দেয়নি প্রশাসন। বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী, আদালতের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত ওই তথ্য পুলিশের হাতে তুলে দিতে পারি না।” বাঁকুড়ার এসপি মুকেশ কুমার জানান, প্রশাসনের হাতে থাকা তথ্য পেতে প্রয়োজনীয় কোর্ট-অর্ডার জোগাড়ের প্রক্রিয়া চলছে। তবে বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকারের ক্ষোভ, “শাসক দলের বিধায়ক হওয়াতেই গণতন্ত্রের উপরে হামলা করেও ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন দীপালি। পুলিশ-প্রশাসন সদর্থক ভুমিকা নিচ্ছে না।”
মিনাখাঁর বিধায়ক ঊষারানি অধরা থাকায় পুলিশের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের। রাজ্যে লোকসভা ভোটের শেষ দফায়, গত ১২ মে ভোরে হাড়োয়ার ব্রাহ্মণচকে সিপিএমের কর্মী-সমর্থকদের উপরে গুলি-বোমা নিয়ে তৃণমূলের লোকজন হামলা চালায় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের মিনাখাঁর বিধায়ক ঊষারানি মণ্ডল ও তাঁর স্বামী মৃত্যুঞ্জয়ের উপস্থিতিতেই হামলা হয়েছে বলে থানায় নির্দিষ্ট অভিযোগ করেন সিপিএম নেতৃত্ব। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, সিপিএম নেতা দীনবন্ধু মণ্ডলের নেতৃত্বে হামলায় জখম হন তাদের দলেরও চার জন।
ব্রাহ্মণচকের ঘটনায় পুলিশ পাঁচ তৃণমূল কর্মী এবং সিপিএমের চার জনকে ধরে। কিন্তু ঊষারানি ও তাঁর স্বামী মৃত্যুঞ্জয় ধরা পড়েননি এখনও। সিপিএমের জেলা নেতা অমিতাভ নন্দীর অভিযোগ, “পুলিশ তৃণমূলের অনুচর হিসেবে কাজ করছে।” অভিযোগ মানেননি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। তবে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্যও করতে চাননি তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy