Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রচারে বাইরের মত নিল সিপিএম

লৌহ-পর্দার আবরণ আরও একটু ফাঁক করল সিপিএম! দলের জেলা সমাবেশের প্রচার পদ্ধতি নিয়ে এ বার সোশ্যাল সাইটে মতামত চেয়েছিল বাঁকুড়া জেলা সিপিএম। মতামত এবং পোস্টার-ফেস্টুনের নকশার খসড়ায় ভরেছে বিদায়ী জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্রের ইনবক্স! উত্‌সাহিত অমিয়বাবুরা জঙ্গলমহলে লড়াইয়ে ফেরার ভরসা পাচ্ছেন। আর সিপিএম নেতৃত্ব রাজ্য স্তরেও জনসংযোগ বাড়াতে একই পথে পরীক্ষা চালানোর কথা ভাবছেন।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:১৫
Share: Save:

লৌহ-পর্দার আবরণ আরও একটু ফাঁক করল সিপিএম! দলের জেলা সমাবেশের প্রচার পদ্ধতি নিয়ে এ বার সোশ্যাল সাইটে মতামত চেয়েছিল বাঁকুড়া জেলা সিপিএম। মতামত এবং পোস্টার-ফেস্টুনের নকশার খসড়ায় ভরেছে বিদায়ী জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্রের ইনবক্স! উত্‌সাহিত অমিয়বাবুরা জঙ্গলমহলে লড়াইয়ে ফেরার ভরসা পাচ্ছেন। আর সিপিএম নেতৃত্ব রাজ্য স্তরেও জনসংযোগ বাড়াতে একই পথে পরীক্ষা চালানোর কথা ভাবছেন।

বাঁকুড়া জেলা সিপিএমের সম্মেলন শেষ হয়েছে কয়েক দিন আগেই। কিন্তু সোনামুখীতে সম্মেলনের সঙ্গে না করে জেলা সমাবেশ হচ্ছে আলাদা করে। তামলিবাঁধ ময়দানে আজ, বুধবার সেই সমাবেশে প্রধান বক্তা সূর্যকান্ত মিশ্র। সমাবেশের পরিকল্পনার পরেই পোস্টারের খসড়া সোশ্যাল সাইটে প্রকাশ করেন তত্‌কালীন জেলা সম্পাদক অমিয়বাবু। আবেদন ছিল, এই প্রচারকে আরও আকর্ষণীয় এবং কার্যকর করতে চান। সে জন্য সকলের সক্রিয় সহযোগিতা চাই। আবেদনে সাড়া দিয়ে নিজেদের মতো করে পোস্টার-ফেস্টুনের নকশা এঁকে কিছু প্রস্তাব পাঠিয়েছেন বহু মানুষ। তাঁদের পাঠানো নকশা নিয়ে একাধিক রকমের পোস্টার তৈরি করা হয়েছে।

কর্মসূচির প্রচারে নিজস্ব সংগঠনের ভাবনাচিন্তার উপরেই বরাবর ভরসা করে সিপিএম। তিন বছর অন্তর পার্টি কংগ্রেসের লোগের নকশার জন্য অবশ্য মতামত চাওয়া হয়। তা-ও দলের মধ্যেই। সে অর্থে বাঁকুড়া জেলাই সমাবেশের প্রচার উপলক্ষে ছক ভেঙে বেরোল। অমিয়বাবুর কথায়, “মানুষের কাছে ভাল সাড়া পেয়েছি। জঙ্গলমহলে লড়াই চালাতে আত্মবিশ্বাসের প্রয়োজন ছিল। সাম্প্রতিক কিছু স্থানীয় নির্বাচনের ফল এবং তামলিবাঁধের সমাবেশ ঘিরে সেটা অনেকটাই পেতে শুরু করেছি।”

দু’দিন আগেই বাঁকুড়ার আদিবাসী অধ্যুষিত রাইপুর ডিআরএমএস ল্যাম্প্স-এর ভোটে ৩৫টি আসনই তৃণমূলকে হারিয়েছে সিপিএম। আবার মানকানালি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির (এসকেইউএস) ভোটে ৫টি আসনে জিতেছে সিপিএম, বাকি চারটি গিয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপি-র দখলে। অমিয়বাবুর বক্তব্য, “পরিস্থিতির চাপে তৃণমূল কোণঠাসা। জায়গা দখল করতে এগিয়ে আসছিল বিজেপি। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রমাণ করতে হবে, উত্তরপ্রদেশ অমিত শাহের জন্য যতটা সোজা, পশ্চিমবঙ্গ ততটা নয়!” জঙ্গলমহলের আর এক জেলা পুরুলিয়ার সম্মেলনের সমাবেশেও হাজির ছিলেন দলের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যবাবু। তাঁর মতে, সেখানেও আগের চেয়ে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। সূর্যবাবুর কথায়, “এখনও বাস-মালিকেরা কিছু কিছু জায়গায় গাড়ির উপরে হামলার ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু আগের চেয়ে ভয় অনেকটাই কেটেছে।” তামলিবাঁধের সমাবেশ আজ ভাল ভাবে উতরে গেলে জঙ্গলমহলে জমি ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে আরও খানিকটা আশা দেখবে সিপিএম।

অমিয়বাবুর উদাহরণ সামনে রেখে এ বার মার্চের ব্রিগেড সমাবেশের প্রচারেও জনমত নেওয়ার কথা ভাবছে সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, “সোশ্যাল মিডিয়া আদানপ্রদানের সুযোগ এনেছে। সেই সুযোগ ব্যবহার করে মানুষের কাছাকাছি পৌঁছতে অসুবিধা কোথায়?” তৃণমূল এবং বিজেপি নেতারা অবশ্য কটাক্ষ করছেন, রাজ্য রাজনীতিতে আরও প্রাসঙ্গিকতা হারানোর আশঙ্কা থেকেই এখন নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নেমেছে সিপিএম!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

social media sandipan chakraborty cpm
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE