এফআইআর তুলে নিতে প্রথম থেকেই শাসকদল চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিল পাড়ুইয়ের সাত্তোরের নির্যাতিতার পরিবার। এ বার তাঁর শ্বশুরকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই মর্মে পাড়ুই থানায় অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতার শ্বশুর। পুুলিশ কাউকে ধরতে পারেনি।
নির্যাতিতার শ্বশুরের অভিযোগ, এ দিন দুপুরে সাত্তোর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এলাকার জনা পাঁচেক তৃণমূলের জনা পাঁচেক কর্মী-সমর্থক তাঁকে ঘিরে ধরে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে তাঁর পুত্রবধূর করা অভিযোগ তুলতে চাপ দেয়। রাজি না হওয়ায় তৃণমূলের লোকজন তাঁকে চড়, ঘুষি মারে। জামা ছিঁড়ে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দা এবং বাড়ির লোক চলে আসায় হামলাকারীরা পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। পাড়ুইয়ের দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ মুস্তফার দুই ছেলে শেখ বাবর, শেখ জাফর ও তাদের তিন সঙ্গীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতার শ্বশুর।
নির্যাতিতা বধূর ভাসুরপোর বিরুদ্ধে বোমাবাজির অভিযোগ রয়েছে। ১৭ জানুয়ারি ওই বিজেপি কর্মীকে ধরতে তাঁর কাকিমার বাপের বাড়ি, বর্ধমানের বুদবুদ থানার কলমডাঙা গ্রামে হানা দেয় বীরভূম পুলিশের একটি বিশেষ দল। অভিযুক্তকে না পেয়ে তাঁর কাকিমাকে বাপের বাড়ি থেকে তুলে জঙ্গলে গাছে বেঁধে মারধর করা এবং ব্লেড দিয়ে হাতের তালু চিরে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশ ও পাড়ুইয়ের কিছু তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। নির্যাতিতার সারা গায়ে বিছুটি পাতা ঘষে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। ওই রাতেই তাঁকে ইলামবাজার থানায় ফেলে যায় পুলিশ। ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যপালও রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন। জেলা পুলিশের অভিযুক্ত অফিসার-কর্মীদের বিরুদ্ধে নামমাত্র বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সিআইডি ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযুক্তকে ধরেনি। তাই সিবিআই তদন্ত চেয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে নির্যাতিতার পরিবার।
নির্যাতিতার অভিযোগ, বারবারই তাঁর বাড়ির লোকজনের উপরে জুলুম চালিয়ে অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে তৃণমূল। নির্যাতিতার কথায়, “ঘটনায় দোষীরা প্রকাশ্যে ঘুরছে। পুলিশ-সিআইডি কিচ্ছু করছে না! তাই ওদের সাহস আরও বেড়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার আমার শ্বশুরকে মারধর করার ঘটনা সেটাই প্রমাণ করল।”
অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল নেতা শেখ মুস্তফা বলেন, “সিউড়ি আদালতে এ দিন মামলার সাক্ষ্য দিতে গিয়েছিলাম। ওরা মিথ্যা অভিযোগ করছে। এই ঘটনার সঙ্গে আমার, আমার পরিবারের বা তৃণমূলের যোগ নেই। তা ছাড়া, ওদের বাড়িতে পুলিশ পিকেট রয়েছে। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করলে সত্য বেরিয়ে আসবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy