মোট প্রশ্ন জমা পড়েছিল ৭৮২টি। সব মিলিয়ে উত্তর দেওয়া হয়েছে ২৯৩টির। তারকা-চিহ্নিত গুরুত্বপূর্ণ এবং তারকা-হীন, দু’রকমের প্রশ্ন ধরেই এই তথ্য। তার মানে খারিজ হয়েছে বা উত্তর মেলেনি, এমন প্রশ্নের সংখ্যা প্রায় ৫০০! যা দেখিয়ে দিচ্ছে বিধানসভার এই অধিবেশনে প্রশ্নোত্তরের হাল।
বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবারই। মোট ৪২ ঘণ্টা ৫৩ মিনিটের অধিবেশনে এত কম প্রশ্নের উত্তর পেয়ে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ বিরোধী শিবির। তার মধ্যে আবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে-থাকা স্বরাষ্ট্র বা ভূমি দফতরের কোনও প্রশ্নই গৃহীত হয়নি। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের দেওয়া ১৫টি প্রশ্ন উত্তরের জন্য গৃহীতই হয়নি! পরিষদীয় রাজনীতিতে যা নজিরবিহীন! রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার হাল নিয়ে যখন পরিস্থিতি উত্তাল, তখন সরকারের জবাব শোনার সুযোগই তাঁরা পাননি বলে বিরোধীদের অভিযোগ। যদিও সরকারের বিরুদ্ধে বামেদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সাড়ে তিন বছরে এই প্রথম।
স্বল্প দিনের অধিবেশনের এই উত্তাপের ছোঁয়া এ দিন এসে পড়েছিল শেষ লগ্নে ধন্যবাদ-জ্ঞাপন পর্বেও। স্পিকারকে প্রথামাফিক ধন্যবাদ জানাতে গিয়েই বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “আপনি আগের চাইতে এ বার আমাদের প্রতি একটু নমনীয় ছিলেন। কিন্তু আরও নমনীয়তা আশা করি। আপনার চেয়ারকে চ্যালেঞ্জ করা যায় না। তবু মতান্তর হয়েছে। আমাদের অনেক প্রশ্নের উত্তর পাইনি।” বিধানসভার অধিবেশন না থাকলে মূল ফটকের বাইরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করতে হয় বিরোধী দলনেতাকে। অথচ বিধানসভায় পুরোদস্তুর মিডিয়া সেন্টার রয়েছে। অন্য সময়েও যাতে মিডিয়া সেন্টার ব্যবহার করতে দেওয়া হয়, কৌশলে সেই আর্জিও ধন্যবাদ-পর্বে জানিয়েছেন সূর্যবাবু।
স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বিতর্কে ইতি টানতে চেয়েছেন সহাস্যেই। তাঁর বক্তব্য, “এই চেয়ারটাই এমন, যেখান থেকে সবাইকে খুশি করা যায় না। আমি মনে করি, বিধানসভা বিরোধীদের জন্যই। সেই ভাবেই সকলকে সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছি।” সূর্যবাবুর তোলা ‘নমনীয়তা’র প্রসঙ্গ টেনেই স্পিকারের মন্তব্য, “আমি কোনও দিনই কঠোর নই। বরং, নরম বলে অনেকে চেপে ধরার চেষ্টা করেন!”
এই সরকারের জমানায় বুধবার বিকালেই প্রথম বার কিছু ক্ষণের জন্য বাম বিধায়কদের বিক্ষোভে অচল হয়েছিল অধিবেশন। সেই সময় আরএসপি-র প্রবীণ বিধায়ক সুভাষ নস্কর কেন অসুস্থ শরীরেও ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ করছিলেন, পরে জানতে চান স্পিকার। ধন্যবাদ-পর্বেই সুভাষবাবুর মন্তব্য, “বহু দিন ওই দিকে (শাসক) ছিলাম। এই দিকের যে এত মজা, এত স্বাদ, আগে বুঝিনি! তাই এখানে এলে অসুস্থতা কেটে যায়!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy