ভদ্রেশ্বরের সভায় লালকৃষ্ণ আডবাণী ও শ্রীরামপুরের বিজেপি প্রার্থী বাপ্পি লাহিড়ী। পিছনে হুগলির বিজেপি প্রার্থী চন্দন মিত্র। ছবি: তাপস ঘোষ।
রাজ্যে প্রথম দফার ভোটের দিন এসেও, বাংলার ভোট, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর সরকার বা তৃণমূল সম্পর্কে একটি শব্দও খরচ করলেন না বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী।
হুগলির ভদ্রেশ্বরের এসএন জুটমিল ময়দানে বৃহস্পতিবার হুগলি ও শ্রীরামপুরের বিজেপি প্রার্থী চন্দন মিত্র এবং বাপ্পি লাহিড়ীর সমর্থনে নির্বাচনী সভায় এসেছিলেন আডবাণী। প্রচারের ভোটের কথা যত না বললেন, তার চেয়ে অনেক বেশি স্মৃতিচারণ করলেন তিনি। তাঁর পনেরো মিনিটের বক্তৃতার সিংহ ভাগ জুড়ে ছিল নিজের সাংবাদিক জীবন এবং জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শা্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের কথা। তিনি জানালেন, বাংলায় আসতে তাঁর ভাল লাগে, কারণ এখানকারই মানুষ ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান আডবাণী।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ-সহ দলের অন্যান্য নেতারা নরেন্দ্র মোদীর কথা বার বার বললেও, আডবাণী কিন্তু সে ভাবে মোদীর কথা বলেছেন সাকুল্যে দু’বার। বক্তৃতার শুরুতে আডবাণী বলেন, “মোদীকে আপনারা দু’নম্বরে রাখুন। আপনাদের প্রথম কাজ, কংগ্রেসকে হটানো। সেটা আমরা পারব। আমরাই সরকার গড়ব। বাপ্পি লাহিড়ী ও চন্দন মিত্রকে জয়ী করে মোদীজিকে আরও বেশি চমৎকৃত করতে পারবেন।” এর পরেই তিনি জাতীয় রাজনীতির প্রসঙ্গে চলে যান।
এ রাজ্য নিয়ে বা তৃণমূলের সরকার নিয়ে আডবাণী কেন কিছু বলেননি তা নিয়ে বিজেপি-র রাজ্য সবাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “আমরা তো রাজ্য রাজনীতি নিয়ে বলেছি। ওঁরা (আডবাণী) জাতীয় স্তরের নেতা। ওঁরা তো জাতীয় রাজনীতি নিয়েই কথা বলবেন!” ভদ্রেশ্বরের সভা থেকেই আডবাণী দিল্লি রওনা হয়ে যান। হাওড়ার সালকিয়াতে নির্বাচনী সভায় তাঁর বক্তৃতা করার কথা ছিল। কিন্তু সময় না থাকায় শেষ মুহূর্তে সেই সভা বাতিল করা হয়।
ভদ্রেশ্বরের সভায় রাহুলবাবু ও চন্দনবাবু রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেন। রাহুলবাবু বলেন, “সিপিএমের লুম্পেন, গুন্ডারা এখন তৃণমূলে ভিড়েছে। আর যাঁদের সঙ্গে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলটা শুরু করেছিলেন, তাঁরা মার খাচ্ছেন।” ‘আত্মসম্মান’ বজায় রাখতে তৃণমূলের এই অংশটিকে দল ছেড়ে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। বুধবার সিঙ্গুরে সভা করতে গিয়ে ‘অনিচ্ছুক চাষি’দের জন্য মমতা-সরকারের চাল ও টাকা দেওয়াকে কটাক্ষ করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। এ দিন ভদ্রেশ্বরে বিজেপির সভায় চন্দনবাবুও বলেন, “বিজেপি ক্ষমতায় এলে সিঙ্গুরের চাল-টাকা দিদির মুখে ছুঁড়ে মারবেন।” তিনি জানান, জয়ী হলে সিঙ্গুরে টাটাদের পরিত্যক্ত গাড়ি কারখানার জমিতে তাঁরা কারখানা গড়ার চেষ্টা করবেন। আর কারখানা গড়তে না পারলে, আইটি হাব তৈরি করবেন বলে। ডানলপের বন্ধ কারখানার প্রসঙ্গও তোলেন তিনি। ভদ্রেশ্বর মূলত জুটমিল এলাকা। এ দিন ভিড়ের মধ্যেও শ্রমিকদের একটি বড় অংশের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে। সেই কারণে এ দিন চন্দনবাবু বলেন, “কেন্দ্রে আমরা ক্ষমতায় এলে চটকল নীতি তৈরি করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy