Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভক্তবালা কাণ্ডে শো-কজ করা হল চার জনকে

পরীক্ষা নিয়ামকের বিরুদ্ধে আগে আঙুল তুলেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। রাজ্য সরকারের তদন্তেও একই দিকে ইঙ্গিত ছিল। এ বার নদিয়ার ভক্তবালা বিএড কলেজে ভর্তিতে দুর্নীতির ঘটনায় পরীক্ষা নিয়ামক বিমলেন্দু বিশ্বাসকে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও শো-কজ করায় শাসক দলের চাপের কাছে নতিস্বীকার করা হল কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কল্যাণী ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৪ ০৩:২৯
Share: Save:

পরীক্ষা নিয়ামকের বিরুদ্ধে আগে আঙুল তুলেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। রাজ্য সরকারের তদন্তেও একই দিকে ইঙ্গিত ছিল। এ বার নদিয়ার ভক্তবালা বিএড কলেজে ভর্তিতে দুর্নীতির ঘটনায় পরীক্ষা নিয়ামক বিমলেন্দু বিশ্বাসকে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও শো-কজ করায় শাসক দলের চাপের কাছে নতিস্বীকার করা হল কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরেই।

বুধবার শুধু পরীক্ষা নিয়ামক নন, দুই শিক্ষক এবং এক শিক্ষাকর্মীকেও একই ঘটনায় শো-কজ করেছেন উপাচার্য রতনলাল হাংলু। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শাসক দলের চাপে প্রভাবিত হচ্ছেন কি না জানতে চাওয়া হলে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “প্রশ্নই ওঠে না। দুর্নীতিকে কোনও ভাবে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। ভক্তবালা কলেজে দুর্নীতিরও শেষ অবধি দেখা হবে।’’ শাসক দলের চাপের ‘তত্ত্ব’ মানেননি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, বিমলেন্দুবাবু-সহ চার জনকেই দু’সপ্তাহের মধ্যে শো-কজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বিমলেন্দুবাবুকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ছুটিতে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, এই সময় তিনি যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে না যান, তা-ও বলা হয়েছে কর্তৃপক্ষের তরফে। যে শিক্ষকদের শো-কজ করা হয়েছে তাঁদের এক জন বাংলা বিভাগের প্রাক্তন প্রধান প্রবীর প্রামাণিক, অন্য জন শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক শান্তিনাথ সরকার। শো-কজ করা হয়েছে অর্থ বিভাগের শিক্ষাকর্মী প্রাণেশ্বর দাসকেও। প্রবীরবাবু, শান্তিনাথবাবু বা প্রাণেশ্বরবাবুর সঙ্গে এ দিন বহু চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে বিমলেন্দুবাবু বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুগত কর্মী হিসাবে আমি স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করেছি। দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নই। শো-কজের জবাবে সব কথাই স্পষ্ট করে লিখব।’’ এ দিন থেকেই পরীক্ষা নিয়ামকের দায়িত্ব নেন সোশিওলজি বিভাগের শিক্ষক পার্থসারথি দে। তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতধীন একাধিক কলেজের কর্তারাও ভক্তবালা-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে রাজ্য সরকারের তদন্ত। তাই সে ব্যাপারেও নজর রাখছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ভক্তবালা-দুর্নীতির ব্যাপারে প্রথম থেকেই বিমলেন্দুবাবুর দিকে আঙুল তোলেন টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা। এ দিন তিনি বলেন, “আমাদের অভিযোগের সত্যতা ধীরে ধীরে প্রমাণিত হচ্ছে।” শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “শঙ্কুর কথার প্রভাব বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তে পড়েনি। উপাচার্য যা ঠিক মনে করেছেন, তা-ই করেছেন। অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকলে ছাত্র, শিক্ষক, আধিকারিক, শিক্ষাকর্মী কেউই ছাড় পাবেন না।” শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বললেও ভক্তবালা কলেজে বেশি টাকা নিয়ে পড়ুয়া ভর্তি করানোয় অভিযুক্ত টিএমসিপি নেতা (কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকও) তন্ময় আচার্যের বিরুদ্ধে এখনও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেন প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিলেন না সে প্রশ্ন তুলছেন অভিযোগকারী পড়ুয়াদের একাংশ। হাংলুর দাবি, তন্ময় এখন আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রই নন। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ছাত্র হিসেবে তন্ময়ের নাম এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার থেকে কাটা যায়নি। পরে অবশ্য উপাচার্যের সংযোজন, “যদি নতুন করে কারও বিরুদ্ধে তদন্তের প্রয়োজন হয়, তবে তা-ও করা হবে।” এ দিন বহু চেষ্টা করেও তন্ময়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব আসেনি এসএমএসের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bribery case bhaktabala b.ed college
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE