ফোন নম্বরটা জানা থাকলে দ্রুত ধরা যেত বলে পুলিশের দাবি। কিন্তু সেই নম্বরটা জানতে অনেক সময় চলে যাওয়ায় ফোনে হুমকির ঘটনায় অভিযুক্তকে ধরতে রবিবার রাত হয়ে গেল!
কেন? সরকারি বিমান সংস্থার সদর দফতর। তবু সেখানকার ল্যান্ডলাইন ফোনে ‘কলার লাইন আইডেন্টিফিকেশন’ বা সিএলআই (যে ফোন করছে, তার নম্বর জানার যন্ত্র) নেই। তাই শনিবার যে-লোকটি এয়ার ইন্ডিয়ার দফতরে ফোন করে বিমান ছিনতাইয়ের হুমকি দিয়েছিল, তার নম্বর জানতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে পুলিশকে। অবশেষে রবিবার সেই নম্বরের খোঁজ মেলে এবং প্রশান্ত বিশ্বাস নামে বনগাঁর কলমবাগানের এক যুবককে রাতেই বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
ঠিক কোন উদ্দেশ্যে সে হুমকি-ফোন করেছিল, তার পিছনে কোনও দুষ্টচক্র আছে কি না, পুলিশ তা খোলসা করে বলতে চায়নি। তবে পুলিশের দাবি, জেরায় হুমকি-ফোনের কথা স্বীকার করে নিয়েছে বছর পঁয়ত্রিশের প্রশান্ত। যে-নম্বর থেকে ফোন করা হয়েছিল, সেই সিমকার্ড-যুক্ত মোবাইলটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। জেরার মুখে প্রশান্ত পুলিশকে বলেছে, নিছক মজা করার জন্যই সে ওই হুমকি-ফোন করেছিল।
শনিবার বিকেলে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার সদর দফতরে একটি ল্যান্ডলাইনে ফোন করে বিমান ছিনতাইয়ের হুমকি দেওয়া হয়। ওই ফোনে সিএলআই যন্ত্র না-থাকায় কোন নম্বর থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল, তা খুঁজে বার করতে কালঘাম ছুটে যায় পুলিশের। শেষে বিএসএনএলের কাছ থেকে রবিবার একটি মোবাইল নম্বরের খোঁজ মেলে। এক পুলিশ অফিসার বলেন, “এয়ার ইন্ডিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার দফতরে প্রতিটি ফোনের সঙ্গেই সিএলআই থাকা উচিত। তা থাকলে শনিবারেই ওই ব্যক্তিকে ধরা যেত।”
ওই ল্যান্ডলাইন ফোনে সিএলআই যন্ত্র লাগানো হয়নি কেন?
এয়ার ইন্ডিয়ার সূত্রে জানানো হয়, বিমানবন্দরে তাদের সব ল্যান্ডলাইনে সিএলআই থাকলেও শহরের অফিসে ছিল না। শনিবারের ঘটনার পরে অবশ্য সেখানেও সব ফোনে ওই যন্ত্র বসানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে দেশের সব উড়ানেই। এমনিতে বিমানবন্দরে সব যাত্রীকেই তল্লাশ করা হয়। তার সঙ্গে সঙ্গে এ বার বিমানে ওঠার মুখে আরও এক প্রস্ত তল্লাশির ব্যবস্থা হয়েছে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, শনিবার ফোনে ওই ব্যক্তি হুমকি দিলেও কোন উড়ান ছিনতাই করা হতে পারে, তা সে নির্দিষ্ট করে জানায়নি। তাই ঝুঁকি না-নিয়ে সব উড়ানেই তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে। বিমানবন্দরের এক অফিসারের কথায়, “সামনেই প্রজাতন্ত্র দিবস। ফি-বছর এই সময়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এ বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সফর উপলক্ষেও বাড়তি সুরক্ষার বন্দোবস্ত হচ্ছে। এর মধ্যে ওই ফোন আগুনে ঘৃতাহুতির কাজ করেছে।” বিমানবন্দরে কী ভাবে বাড়তি নজরদারি চালানো হচ্ছে?
বিমানবন্দরের খবর, সেখানে বিভিন্ন পর্যায়ে তল্লাশি ছাড়াও সাদা পোশাকের অফিসারের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। কোনও ব্যক্তি বা বস্তুকে ঘিরে সামান্যতম সন্দেহের উদ্রেক হলেই তা নিরসনের জন্য বাড়তি তল্লাশি চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন দিক থেকে যে-সব গাড়ি বিমানবন্দরে আসছে, ‘র্যানডম’ অর্থাৎ যখন-তখন সেগুলো তল্লাশ করা হচ্ছে। সতর্ক করা হয়েছে সব বিমান সংস্থাকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy