ফের বিতর্কে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী।
তবে এ বার নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় নয়। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সুমন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রহস্য মৃত্যুর পিছনে মাদক-যোগের কথা শোনা গিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। সোমবার ছাত্রছাত্রীদের আচরণ নিয়ে বলতে গিয়ে হঠাৎই সুমন্তিকা প্রসঙ্গ টেনে অভিজিৎবাবু বলেন, “কাল শুনলাম প্রেসিডেন্সিতে নাকি মাদকদ্রব্য সেবনের ফলে এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। ছাত্র হিসেবে এগুলো ভাল কাজ নয়।”
জলপাইগুড়ির মেধাবী ছাত্রী সুমন্তিকার মৃত্যুর সঙ্গে মাদক সেবনের কোনও প্রমাণ এখনও পায়নি পুলিশ। মাদক সেবনের ফলে মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানাননি ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকেরাও। তা হলে কীসের ভিত্তিতে উপাচার্যের মতো দায়িত্বশীল পদে থেকেও এমন অভিজিৎবাবুর?
এটা বুঝতে পারছেন না তদন্তকারী থেকে সুমন্তিকার অভিভাবক-বন্ধু কেউ! অভিজিৎবাবু কেন এ কথা বললেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রেসিডেন্সির উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া। অসন্তোষ গোপন করেননি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। সুমন্তিকার পরিবার জানিয়েছে, অভিজিৎবাবুর মন্তব্যে তাঁরা ‘অপমানিত’। সুমন্তিকার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে পার্থবাবু সোমবার বলেন, “ওই ছাত্রীর পরিবারের পাশে আছি।” অনুরাধাদেবী জানান, আজ, মঙ্গলবার তাঁর বার্তা ও ফুল নিয়ে মেয়েটির পরিবারের কাছে যাবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি।
ক্ষুব্ধ অনুরাধাদেবীর কথায়, “কোনও প্রমাণ নেই। মাদন সেবনের কোনও ইতিহাসও নেই সুমন্তিকার। তবু অভিজিৎবাবু এমন মন্তব্য করলেন! আমি স্তম্ভিত! এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করা ওঁর উচিত হয়নি।” আর বিরক্ত পার্থবাবু বলেন, “উনি কত কথাই তো বলছেন! আর কীই বা বলব!”
মেয়ের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে সুমন্তিকার মা শিপ্রাদেবী ঘন ঘন সংজ্ঞা হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সোমবার সন্ধ্যায় সুমন্তিকার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে অভিজিৎবাবুর বক্তব্য প্রসঙ্গে সুমন্তিকার বাবা দেবাশিসবাবু বলেন, “আমার মেয়েকে খুব ভাল ভাবে চিনি, জানি। যদি কেউ মাদক সেবনের কথা বলে থাকেন, সেটা আমাদের ও মৃত মেয়ের আত্মার পক্ষে অপমান।”
এ দিনই ফেসবুকে সুমন্তিকার মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করে লিখেছেন প্রেসিডেন্সির বিজ্ঞান শাখার ডিন সোমক রায়চৌধুরী। অভিজিৎবাবুর মন্তব্যে মর্মাহত সোমকবাবু বলেন, “প্রমাণ ছাড়া একজন দায়িত্বশীল মানুষের এমন মন্তব্য করা ঠিক নয়।”
প্রেসিডেন্সির ছাত্র সংসদের সভাপতি সুমাল্য মুখোপাধ্যায় এই মন্তব্যের পিছনে অভিজিৎবাবুর ছাত্র-বিরোধী স্বভাবেরই ইঙ্গিত পেয়েছেন। সুমাল্য বলেন, “বোঝাই যাচ্ছে, গোটা ছাত্র সমাজের বিরুদ্ধেই অভিজিৎবাবুর একটা ক্ষোভ আছে!”
মাদক সেবনের তত্ত্ব কোথা থেকে পেলেন যাদবপুরের উপাচার্য? অভিজিৎবাবু দোষ চাপালেন সংবাদ মাধ্যমের ঘাড়ে! বললেন, “রবিবার কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে এমনটাই দেখেছি। তার ভিত্তিতেই বলেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy