সারদা কাণ্ডে পশ্চিমবঙ্গে আরও একটি মামলা শুরু করল সিবিআই। সোমবারেই নতুন করে সারদা কনস্ট্রাকশন নামে সংস্থাটির বিরুদ্ধে একটি এফআইআর করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটি। সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে পশ্চিমবঙ্গে এটি সিবিআইয়ের চতুর্থ এফআইআর। এর আগে যে তিনটি এফআইআর করা হয়েছিল সেখানে জড়ানো হয়েছিল সারদা রিয়েলটি এবং সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের নাম। সিবিআই সূত্রে খবর, এ দিন সারদা কনস্ট্রাকশন সংস্থার নামে নির্দিষ্ট করে এফআইআরের পাশাপাশি তাঁরা সংস্থার চিফ ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুদীপ্ত সেন-সহ আরও বেশ ক’ জনের নামও রেখেছেন এফআইআর-এ। ওড়িশার ক্ষেত্রে সারদা-সহ অন্যা কিছু অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে ৪৪টি এফআইআর দায়ের করে তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই।
সুদীপ্ত সেন ওই নির্মাণসংস্থার নামে ব্যবসা শুরু করেছিলেন ’৯৫-এ। ছিলেন তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রী মধুমিতা সেন ও ছেলে শুভজিৎ। সংস্থার ঠিকানা ৪৫৫, ডায়মন্ডহারবার রোড। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে জমি কিনে শুরু হয় এই ব্যবসা। সিবিআই সূত্রের খবর, সেখানে কালক্রমে দু’টি মৌজায় সুদীপ্ত ১ হাজার ১০০ একর জমি কেনেন সারদা কনস্ট্রাকশনের নামে। যার বেশির ভাগ বিক্রি করেন তিনি।
প্রশ্ন উঠেছে, আমানতকারীদের টাকা নিয়ে তা ফেরত না দেওয়াই যদি সুদীপ্ত ও তাঁর দলের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ হয়, তা হলে কেন সারদা কনস্ট্রাকশনের নামে মামলা করা হল?
গোয়েন্দাদের মতে, লগ্নিকারীদের বিশ্বাস অর্জন করতে বিষ্ণুপুরের এই জমি ও সেখানে তৈরি করা ফ্ল্যাট কুমিরছানার মতো দেখানো হয়েছে। আমানতকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এই ব্যবসায় বিনিয়োগ করে মুনাফা করা হবে ও সেই মুনাফা তাঁদের চড়া সুদে ফেরানো হবে বলেও বোঝানো হয় মানুষদের। অভিযোগ, বিষ্ণুপুরের ওই বিশাল জমি দেখেই প্রলুব্ধ হয়ে টাকা দিয়েছেন মানুষ। পরে তাঁরাই প্রতারিত হয়েছেন।
সিবিআই অফিসারেরা জেনেছেন, আমানতকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা যেমন সারদা কনস্ট্রাকশন ব্যবসায় ঢালা হয়েছে, তেমনই বিভিন্ন সময়ে ব্যবসা থেকে টাকা গিয়েছে সারদা রিয়েলটিতে। জানা গিয়েছে, আমানতকারীদের টাকায় সারদা কনস্ট্রাকশনের নামে পরবর্তীকালে শিলিগুড়ি, ফলাকাটা, মালদহ, পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ রাজ্যে অন্তত ২০টি স্থাবর সম্পত্তি কেনেন সুদীপ্ত। ফলে, সিবিআইয়ের দাবি, যে কয়েকশো কোটি টাকা কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমেছে সিবিআই, সেখানে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে সারদা কনস্ট্রাকশনের নামও। তাই, এ দিন চতুর্থ এফআইআর-এ সুদীপ্ত-সহ অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, ষড়যন্ত্র এবং বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ দিনই ওড়িশায় একটি অর্থলগ্নি সংস্থার সাতটি দফতরে হানা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি আটক করেছে সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy