Advertisement
E-Paper

সব পুরভোটই মে-জুনে, নয়া ভাবনা সরকারের

জানুয়ারিতে নয়, আগামী মে-জুন মাসে কলকাতা ও রাজ্যের অন্যান্য পুরসভার সঙ্গেই মেয়াদ শেষ হওয়া ১০টি পুরসভার ভোট করতে চায় শাসক পক্ষ। প্রয়োজনে রাজ্য সরকার হাইকোর্টেও এই পরিকল্পনার কথা জানাতে পারে বলে শাসক দল সূত্রের খবর। যে ভাবে রাজ্যে বিজেপি-র উত্থান ঘটছে, তাতে এখনই পুরভোটের ঝুঁকি না নিতে চেয়েই এমন পরিকল্পনা বলে শাসক দলের একটি সূত্রের ব্যাখ্যা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:০২

জানুয়ারিতে নয়, আগামী মে-জুন মাসে কলকাতা ও রাজ্যের অন্যান্য পুরসভার সঙ্গেই মেয়াদ শেষ হওয়া ১০টি পুরসভার ভোট করতে চায় শাসক পক্ষ। প্রয়োজনে রাজ্য সরকার হাইকোর্টেও এই পরিকল্পনার কথা জানাতে পারে বলে শাসক দল সূত্রের খবর। যে ভাবে রাজ্যে বিজেপি-র উত্থান ঘটছে, তাতে এখনই পুরভোটের ঝুঁকি না নিতে চেয়েই এমন পরিকল্পনা বলে শাসক দলের একটি সূত্রের ব্যাখ্যা। যদিও ভোট যত দেরি হবে, প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হাওয়াও তত বাড়বে বলে তৃণমূলের অন্দরেই আশঙ্কা আছে!

চলতি বছরের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে ১০টি পুরসভার। গত ২১ জুলাই অবসর নেওয়ার আগে বিদায়ী রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে ওই পুরসভাগুলি এবং তার সঙ্গে আরও ৭টি (মোট ১৭টি) পুরসভার ভোট করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্য সরকারকে বার বার চিঠি দিয়েও কোনও উত্তর পাননি তিনি। কমিশনের তরফে তিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। এর আগে অবশ্য রাজ্য মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয়, জুলাই মাসের মধ্যে যে ১৭টি পুরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, তার মধ্যে ৭টিকে অন্য কয়েকটি পুরসভার মধ্যে ঢুকিয়ে চারটি পুর-নিগম গঠন করা হবে। মীরাদেবীর অবসরের পরে নতুন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায় সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ৭টি পুরসভা বাদ দিয়েই ১০টি পুরসভায় নির্বাচনের পরিকল্পনা করেন। পূর্বসূরির দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে নয়া নির্বাচন কমিশনার হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে জানান, সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে ওই ১০টি পুরসভায় ভোট করতে চায় কমিশন।

কিন্তু এখন সেই পরিকল্পনাতেও বদল আনতে চাইছে শাসক পক্ষ। শাসক দলের এক নেতা সোমবার ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাঁরা জানুয়ারি মাসে কোনও পুরসভাতেই ভোট চাইছেন না। তার বদলে মে-জুন মাসে কলকাতা-সহ রাজ্যের বাকি ৮১টি পুরসভার সঙ্গেই ইতিমধ্যে মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া কালিয়াগঞ্জ, ইসলামপুর, মাল, হরিণঘাটা, রাজপুর-সোনারপুর, উলুবেড়িয়া, ডানকুনি এবং এগরা পুরসভার ভোট করাতে চায় শাসক দল তথা সরকার। অর্থাৎ সে ক্ষেত্রে মে-জুনে ভোট হতে পারে প্রায় ৯১টি পুরসভার। সেই সময়ের মধ্যে নতুন পুর-নিগমগুলি গঠিত হয়ে গেলে ওই সংখ্যা বাড়তেও পারে।

রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অবশ্য এ দিন বলেছেন, “রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এ নিয়ে কিছু জানতে পারিনি। আমরা রাজ্যের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি।” কমিশন সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার যথাসময়ে কমিশনকে তাদের সিদ্ধান্তের কথা না জানালে কমিশনকেই আবার আদালতে যেতে হবে। অথবা কেন জানুয়ারি মাসে তারা ওই ১০টি পুরসভার ভোট করতে পারছে না, তার কারণ জানিয়ে রাজ্য সরকার কমিশনে চিঠি দিলে কারণ খতিয়ে দেখে কমিশন আবার তার মতামত হাইকোর্টকে জানাতে পারে। সরকারের দেওয়া কারণগুলির সারবত্তা থাকলে কমিশন তা মেনেও নিতে পারে।

রাজ্যে বিধানসভার ভোট যে হেতু ২০১৬ সালে, তাই আগামী বছরের পুরভোটকে তার প্রস্তুতি হিসাবেই দেখছে সব শিবির। তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, এমন সময়ে তারা পুরভোট করতে চায়, যার সুফল বিধানসভার ভোটেও পাওয়া যেতে পারে। সেই জন্যই ১০টি পুরসভার ভোট আরও পিছিয়ে নেওয়ার ভাবনা। যদিও রাজ্যে যে ভাবে বিজেপি-র উত্থান ঘটছে, তাতে পুরভোট পিছিয়ে নিয়ে যাওয়াও শাসক দলের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে বলে তৃণমূলেরই একাংশ মনে করছে। কারণ, ততদিনে সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ আরও বেড়ে যেতে পারে। শাসক দলের এক নেতার কথায়, “এখন এগোলেও বিপদ, পিছোলেও বিপদ! তবু লড়াই করতে হবে সর্বশক্তি দিয়েই।”

বিধানসভার আগে পুরভোটকে মহড়া ধরেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বিজেপি-ও। দলের জেলা সভাপতি, জেলার সাধারণ সম্পাদক এবং সদস্যকরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নিয়ে এ দিনই বৈঠক করেছেন বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্ব। সেখানে ৫০ লক্ষ সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। আগামী নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই সদস্যকরণে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরে দলের প্রভাব বাড়াতে এক গুচ্ছ সমিতি গঠন করেছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ জানান, সরকারি কর্মী, শিক্ষক, আপৎকালীন পরিষেবা, তদন্ত এবং আন্দোলন পরিকল্পনা ও রূপায়ণ সমিতি গড়া হয়েছে। কিন্তু দেশে কোথাও সরাসরি বিজেপি-র শ্রমিক বা সরকারি কর্মী সংগঠন নেই। আরএসএসের তাতে আপত্তি আছে। সে ক্ষেত্রে বঙ্গ বিজেপি কি অন্য মডেল গ্রহণ করল? রাহুলবাবুর জবাব, “বিজেপি সব ক্ষেত্রে রাজনীতি পছন্দ করে না। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতি ছাড়া ক্ষেত্র হয় না। তাই প্রভাব বিস্তার করতে হলে সব ক্ষেত্রে রাজনীতি ছাড়া গতি নেই!” মহিলা ক্রিকেটার গার্গী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং গিটার বাদক বটুক নন্দীর ছেলে নীলাঞ্জন নন্দী এ দিনই বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন।

municipal vote tmc state government
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy