Advertisement
১৭ জুন ২০২৪

সব পুলিশই ভাল নয়, কেউ কেউ ভাল: কোর্ট

ভাল ইংরেজ, খারাপ ইংরেজের কথা বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বললেন ভাল পুলিশ আর মন্দ পুলিশের কথা। আর সেই সূত্রেই গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বিতর্ক হয়ে গেল শুক্রবার। রাজ্যে পুলিশ অফিসারদের কাজের মান কেমন, বিতর্কের মূল প্রসঙ্গ সেটাই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৪ ০৩:৩৩
Share: Save:

ভাল ইংরেজ, খারাপ ইংরেজের কথা বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বললেন ভাল পুলিশ আর মন্দ পুলিশের কথা। আর সেই সূত্রেই গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বিতর্ক হয়ে গেল শুক্রবার। রাজ্যে পুলিশ অফিসারদের কাজের মান কেমন, বিতর্কের মূল প্রসঙ্গ সেটাই।

সাইবার জালিয়াতির একটি মামলায় বিচারপতি দত্তের এজলাসে এ দিন তদন্ত রিপোর্ট পেশ করেছে কলকাতা পুলিশ। তা দেখে অত্যন্ত সন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি। তিনি বলেন, “এই মামলার তদন্তকারী অফিসার খুব ভাল কাজ করেছেন।”

গত কয়েক মাসে বীরভূমে পাড়ুই এলাকার খুন, উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম ও দত্তপুকুরে ধর্ষণ, মুখ্যমন্ত্রীকে জড়িয়ে ব্যঙ্গচিত্র ঘিরে যাদবপুরের অম্বিকেশ কাণ্ডে পুলিশের সমালোচনা করে এসেছেন বিচারপতি দত্ত। এ দিন তাঁর মুখে পুলিশের এক তদন্তকারী অফিসারের প্রশংসা শুনে জিপি মন্তব্য করেন, “সরকারের সব পুলিশ অফিসারই ভাল কাজ করেন।”

বিচারপতি দত্ত অবশ্য জিপি-র এই মন্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারেননি। তিনি বলেন, “রাজ্যে নিশ্চয়ই ভাল অফিসার রয়েছেন। কিন্তু খারাপ অফিসারও অনেক। এ দিন যে-তদন্তকারী অফিসার রিপোর্ট জমা দিয়েছেন, তিনি প্রশংসার যোগ্য। কিন্তু পাড়ুই কাণ্ডের তদন্তকারী অফিসারদের কাজে প্রশংসা করার জায়গা নেই। তাঁদের ভাল অফিসার বলা যাবে না।”

মূলত দু’টি ব্যাপারে পুলিশকে তিরস্কার করে চলেছে উচ্চ আদালত। i পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা, উদাসীনতা ও দায়সারা মনোভাব। i পুলিশের হামলে পড়া অতি-সক্রিয়তা। রাজ্যে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং অতি-সক্রিয়তা নিয়ে অন্তত চারটি মামলা চলছে বিচারপতি দত্তের এজলাসে। সব ক’টিতেই গাফিলতি বা অতি-সক্রিয়তার জন্য বিচারপতি ভর্ৎসনা করেছেন পুলিশকে। অনেক সময় জেলা পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার কেড়ে নিয়ে সিআইডি বা অন্য তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়েছেন। পাড়ুইয়ে সাগর ঘোষ খুনের রহস্য ভেদ করতে ডিজি-র নেতৃত্বে স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট) গড়ে দিয়েছিলেন বিচারপতি। মধ্যমগ্রামে ধর্ষিতার পুড়ে মৃত্যুর ঘটনাতেও সিআইডি-র ডিআইজি দময়ন্তী সেনের নেতৃত্বে সিট গড়ে দিয়েছেন তিনি।

পাড়ুই কাণ্ডে সিটের তদন্তে ক্ষুব্ধ হয়ে ডিজি-কে নিজের এজলাসে তলব করেছিলেন বিচারপতি দত্ত। তার বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার হাইকোর্টেরই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছিল। সেই মামলা সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে বিচারপতি দত্তের এজলাসেই ফিরে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রীকে জড়িয়ে একটি কার্টুনকে ঘিরে পুলিশ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রকে হয়রান করেছিল। তা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি দত্ত।

এ-সবের পরে বিচারপতি দত্ত এ দিন একটি মামলায় পুলিশের প্রশংসা করায় অনেক আইনজীবীই বিস্মিত। তবে বিচারপতি নিজের মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, সব পুলিশই ভাল নয়, কেউ কেউ ভাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police high court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE