Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

সন্তানকে ছুঁতে ফের সীমান্তে পৌঁছলেন ওঁরা

মেক্সিকো ও ক্যালিফর্নিয়ার সীমান্তে ৫০ জন শরণার্থী শনিবার ফের আমেরিকায় ঢোকার চেষ্টা করেন।

মধ্য আমেরিকার সেই সব শরণার্থী বাবা-মা ফের আমেরিকায় ঢোকার চেষ্টা করছেন। ছবি: রয়টার্স।

মধ্য আমেরিকার সেই সব শরণার্থী বাবা-মা ফের আমেরিকায় ঢোকার চেষ্টা করছেন। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
মেক্সিকো সিটি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০২:১০
Share: Save:

একটা বছর পার হয়ে গিয়েছে। সন্তানদের মুখ দেখেননি ওঁরা। মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে আমেরিকায় বেআইনি ভাবে ঢুকতে গিয়ে প্রশাসনের হাতে আটক হয়েছিলেন, পরে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে দেশে। কিন্তু সন্তানরা এখনও মার্কিন হেফাজতেই। সৌজন্যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের শরণার্থী সংক্রান্ত নিয়ম। তাই তাদের কাছে যেতে এ বার কিছুটা মরিয়া হয়েই মধ্য আমেরিকার সেই সব শরণার্থী বাবা-মা ফের আমেরিকায় ঢোকার চেষ্টা করছেন। তাঁরা বলছেন, আশ্রয় চাই, ছেলেমেয়েদের সঙ্গে দেখা করতে চাই।

মেক্সিকো ও ক্যালিফর্নিয়ার সীমান্তে ৫০ জন শরণার্থী শনিবার ফের আমেরিকায় ঢোকার চেষ্টা করেন। মার্কিন শুল্ক ও সীমান্ত নজরদারির দায়িত্বে থাকা প্রতিনিধিরা তাঁদের আটকান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সীমান্ত পেরোনোর জন্য ওই বাবা-মায়েরা উদগ্রীব যেমন ছিলেন, তেমন ভয়ের ছাপও ছিল তাঁদের চোখেমুখে। কারও কোলে সন্তান, সঙ্গে ব্যাগপত্র। ছিলেন অভিবাসন সংক্রান্ত আইনজীবীও। আইনজীবীদের একটি সংগঠন তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সংগঠনটির দাবি, ২৯ জন শনিবার সীমান্ত পেরোতে সমর্থ হন। সংগঠনের এক প্রতিনিধি এরিকা পিনেরো বলেন, ‘‘এই পরিবারগুলির জন্য বিরাট জয়। তবে ওঁরা যত ক্ষণ না সন্তানদের কাছে যেতে পারছেন, তত ক্ষণ লড়াই চলবে।’’ মার্কিন প্রশাসনের চাপে যে সব শরণার্থী বাবা-মা সন্তানের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ফের দেশে ফিরে যান, তাঁরা ওই সংগঠনের মাধ্যমে ফের আবেদন জানিয়েছেন। মার্কিন শুল্ক ও সীমান্ত নজরদারির দায়িত্বে থাকা প্রতিনিধিরা তাতে সাড়া দিয়েছেন কি না, এখনও স্পষ্ট নয়।

গত বছর মেক্সিকো সীমান্তে বেআইনি অভিবাসন রুখতে হাজারেরও বেশি শরণার্থী শিশুকে তাদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে আলাদা করে দিয়েছিল ট্রাম্পের ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি। বাবা-মাকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে বেশ কিছু শিশুকে আটকে রাখা হয় ডিটেনশন সেন্টারে। শিশুদের দ্রুত বাবা-মায়ের কাছে ফেরানোর দাবিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের তুমুল সমালোচনা শুরু হওয়ায় পাল্টা প্রশাসনিক নির্দেশে সই করতে বাধ্য হন ট্রাম্প।

মেক্সিকো সীমান্তে শনিবার দাঁড়িয়ে ছিলেন হন্ডুরাসের জো আর্তেগা। ১৫ বছরের ছেলের কাছ থেকে আলাদা হয়ে যান তিনি। বলছেন, ‘‘বিরাট ঝুঁকির কাজ। আশা করি শেষে সব ঠিকই হবে।’’ তিহুয়ানা সীমান্তে গত সপ্তাহে এমন অনেক বাবা-মায়ের সাক্ষাৎকার নেয় সংবাদ সংস্থা। তাঁদের অনেকেরই ছেলেমেয়ে এখন হয় আমেরিকায় কোনও আত্মীয়ের কাছে, নয়তো পালক বাবা-মায়ের কাছে রয়েছে। দেশে মার খেয়েছেন, দোকান ভেঙে দেওয়া হয়েছে, তার পর হন্ডুরাসের আর্নল্ড ফ্লোরেস চেষ্টা করেছিলেন আমেরিকায় পালিয়ে আসতে। ধরা পড়ে যান সীমান্তে। তাঁর কথায়, ‘‘তখন বেড়ার বাইরে থেকে ছেলের মুখটা দেখতাম। একদিন ও কাঁদতে কাঁদতে বলল, বাবা ওরা তোমাকে ফেরত পাঠিয়ে দেবে। সে দিনই আমায় ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ছেলের মুখ দেখার সুযোগ আর পাইনি।’’ আপাতত আর্নল্ডদের আশা, হয়তো বা সাড়া মিলবে আবেদনে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Migrant Donald Trump Refugee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE