Advertisement
E-Paper

চিনের মুখেও পাক-সন্ত্রাস

ব্রিক্‌স-এর ঘোষণাপত্র যেমন পাকিস্তানের কাছে বড় ধাক্কা, তেমনই চিনের পক্ষে অস্বস্তির। চিনের অন্যতম বিদেশনীতি বিশেষজ্ঞ হু শিশেং রীতিমতো বিস্মিত চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সিদ্ধান্তে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৪৮
সৌজন্য: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানাচ্ছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং ও ফার্স্ট লেডি পেং লিউয়ান। শিয়ামেনে ব্রিক্‌স সম্মেলনে। ছবি: রয়টার্স।

সৌজন্য: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানাচ্ছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং ও ফার্স্ট লেডি পেং লিউয়ান। শিয়ামেনে ব্রিক্‌স সম্মেলনে। ছবি: রয়টার্স।

গত বছরের কথা। উরিতে পাক মদতে পুষ্ট জঙ্গি হামলার গনগনে আঁচের মধ্যেই গোয়ায় বসেছিল ব্রিক্‌স শীর্ষ সম্মেলন। নিজের দেশের মাটিতেও সম্মেলন-শেষের ঘোষণাপত্রে পাকিস্তানের নাম টানতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সাউথ ব্লকের সব চেষ্টা ভেস্তে গিয়েছিল চিনের পাঁচিলে ধাক্কা খেয়ে।

সেই কূটনৈতিক ব্যর্থতা কাটিয়ে ব্রিক্‌স শীর্ষ সম্মেলনেই এক বছর পরে সাফল্যের মুখ দেখল ভারত। এবং তা চিনের মাটিতে দাঁড়িয়েই। যার দৌলতে বিদেশনীতির প্রশ্নে লাগাতার কোনঠাসা হওয়া মোদী সরকারের মুখ কিছুটা হলেও উজ্জ্বল হল বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। চিন-সহ ব্রিক্‌সভুক্ত অন্য দেশগুলি (ব্রাজিল, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ভারত) আজ একত্রে যে ঘোষণাপত্রটি প্রকাশ করেছে, তাতে ১৭ বার সন্ত্রাসবাদের উল্লেখ করে কড়া হাতে তার মোকাবিলার কথা বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, লস্কর-ই-তইবা, জইশ-ই-মহম্মদের মতো পাক মদতপ্রাপ্ত সংগঠনগুলির নামও রয়েছে ওই ঘোষণায়। বিদেশ মন্ত্রকের সচিব (পূর্ব) প্রীতি সারন বলেছেন, ‘‘ব্রিক্‌স ঘোষণাপত্রে এই প্রথম বার জঙ্গি সংগঠনের তালিকা প্রকাশ করা হল।’’

আরও পড়ুন: কিমকে নিয়ে চাপে ব্রিক্‌স-ও

ব্রিক্‌স-এর ঘোষণাপত্র যেমন পাকিস্তানের কাছে বড় ধাক্কা, তেমনই চিনের পক্ষে অস্বস্তির। চিনের অন্যতম বিদেশনীতি বিশেষজ্ঞ হু শিশেং রীতিমতো বিস্মিত চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সিদ্ধান্তে। তাঁর আশঙ্কা, এর ফলে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ ধাক্কা খাবে।

আগামিকাল শি চিনফিং-এর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মোদী। তার আগে আজকের এই ঘোষণাপত্র মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে নয়াদিল্লিকে কিছুটা সুবিধাজনক জায়গায় রাখল। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, গত কাল সামগ্রিক ভাবে সন্ত্রাসবাদ বিরোধিতার কথা বলেছিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি। পাকিস্তানের কোনও জঙ্গি সংগঠনের নামও উচ্চারণ করেননি তিনি। বরং সম্প্রতি চিনের মন্তব্য ছিল, ব্রিক্‌স-এর মঞ্চ পাকিস্তানি সন্ত্রাস নিয়ে আলোচনার উপযুক্ত নয়। সেই ছবিটাই এ দিন বদলে গেল।

পাশাপাশি এ দিনের ঘোষণাপত্রে যে সংগঠনগুলির নাম করা হয়েছে, তার অন্যতম জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারকে রাষ্ট্রপুঞ্জের জঙ্গি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে লড়ছে ভারত। এবং চিনের আপত্তিতেই তা আটকে রয়েছে। এই অবস্থায় এ দিনের ঘোষণাপত্র ভারতের পক্ষে বড় জয়।

৪৩ পাতার ঘোষণাপত্রে আফগানিস্তানে হিংসার প্রসঙ্গ তুলে অবিলম্বে তা বন্ধ করার ডাক দেওয়া হয়েছে। তালিবান, আইএস, হক্কানি গোষ্ঠীর সঙ্গে লস্কর, জইশ, তেহরিক-ই-তালিবানের নাম করে বলা হয়েছে, ‘গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিক্‌সভুক্ত দেশগুলি উদ্বিগ্ন’। ঘোষণাপত্রে রয়েছে, ‘সন্ত্রাসে যারা মদত দিচ্ছে, সমর্থন করছে অথবা টাকা জোগাচ্ছে— তাদের অতি অবশ্য শাস্তি দেওয়ার প্রশ্নে সম্মেলনে ঐকমত্য হয়েছে।’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পাকিস্তানের নাম না করেও সন্ত্রাসের মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলির দায়িত্বের কথাও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে ঘোষণাপত্রে।

Xi Jinping Narendra Modi নরেন্দ্র মোদী ব্রিক্‌স BRICS Indo-China
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy