Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

স্বস্তিতে না-বাদী এডিনবরা, স্বপ্ন ভাঙল গ্লাসগোর

নিতান্তই সাদামাটা সকাল। উৎসবের কোনও চিহ্ন নেই। কিন্তু স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবরার ছবি তো এ রকম হওয়ার কথা নয়। এ শহর প্রথম থেকেই স্কটল্যান্ডকে ব্রিটেনের অংশ হিসেবে দেখতে চেয়েছিল। শুক্রবার সেই আশা পূরণও হয়েছে। তা হলে? এক স্কটিশ তরুণীর জবাব, “আমরা খুশি। কিন্তু তার থেকেও বেশি নিশ্চিন্ত। তবে স্কটল্যান্ডের বহু বাসিন্দা যাঁরা স্বাধীন হওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছিলেন, তাঁরা আজ আশাহত। তাঁদের কথা ভেবে খারাপ লাগছে।”

সংবাদ সংস্থা
গ্লাসগো শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৩১
Share: Save:

নিতান্তই সাদামাটা সকাল। উৎসবের কোনও চিহ্ন নেই। কিন্তু স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবরার ছবি তো এ রকম হওয়ার কথা নয়। এ শহর প্রথম থেকেই স্কটল্যান্ডকে ব্রিটেনের অংশ হিসেবে দেখতে চেয়েছিল। শুক্রবার সেই আশা পূরণও হয়েছে। তা হলে? এক স্কটিশ তরুণীর জবাব, “আমরা খুশি। কিন্তু তার থেকেও বেশি নিশ্চিন্ত। তবে স্কটল্যান্ডের বহু বাসিন্দা যাঁরা স্বাধীন হওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছিলেন, তাঁরা আজ আশাহত। তাঁদের কথা ভেবে খারাপ লাগছে।”

তরুণী যে ভুল বলেননি, গ্লাসগোই তার প্রমাণ। স্কটল্যান্ডের এই বৃহত্তম শহর প্রথম থেকেই স্বাধীনতার পক্ষে স্লোগান দিচ্ছিল। কিন্তু ফল জানার পর থেকে হারের শোক জাঁকিয়ে বসেছে গোটা শহরে। প্রাণকেন্দ্র ‘জর্জ স্কোয়ার’-এ এখন শুধুই বিষাদে ভরা কিছু মুখের আনাগোনা। কোথাও এক তরুণী কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। তাঁর কাঁধে সান্ত্বনার হাত দিচ্ছেন অন্য এক তরুণী। কিন্তু তাঁর মুখেও হারের গ্লানি স্পষ্ট। আর এক প্রান্তে সবুজ ঘাসের উপর হতাশ শরীর এলিয়ে দিয়েছেন জনা কয়েক যুবক। কোথাও আবার অন্ধকার থেকে ডুকরে কেঁদে ওঠার শব্দ। অ্যালি গ্রে নামে এক বছর তেইশের যুবক শুধু বললেন, “আমরা পারলাম না।”

অথচ গত কাল পর্যন্ত সম্পূর্ণ অন্য মেজাজে ছিল এই জর্জ স্কোয়ার। হরেক কিসিমের বাজনার আওয়াজ, গান, নাচদেখে মনে হচ্ছিল স্কটল্যান্ড বুঝি তখনই স্বাধীনতা পেয়ে গিয়েছে। কেউ কেউ জানাচ্ছেন, শেষ ৪৮ ঘণ্টায় অনেকেরই মনে হচ্ছিল, স্কটল্যান্ডের স্বাধীন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে গিয়েছে। এমনকী রাত সাড়ে দশ’টা নাগাদও খবর আসে, ‘হ্যাঁ-বাদীরাই’ এগিয়ে রয়েছেন। কিন্তু তার পরই ছন্দপতন। গোটা রাত ধরে স্বাধীনতার স্বপ্ন ভাঙতে দেখেন হ্যাঁ-বাদীরা। সে সময় অবশ্য তাঁদের মুখপাত্র তথা স্কটিশ মন্ত্রী অ্যালেক্স স্যামন্ডের দেখা মেলেনি। পরে তিনি টুইট করে গ্লাসগোবাসীকে ধন্যবাদ জানান।

তাতে যে হারের ক্ষত জুরাবে না তা স্পষ্ট। কেউ কেউ বলছেন, “এ আসলে বুদ্ধির কাছে আবেগের হার।” শুক্রবারের ফলাফলকে আপাতত এ ভাবেই দেখতে চাইছেন গ্লাসগোর বাসিন্দারা। আর এডিনবরা? স্বপ্ন পূরণ হলেও উচ্ছ্বাসে ভাসছেন না তাঁরা। কারণ তাঁরা জানেন, স্কটল্যান্ডের বৃহত্তম শহরই এ জয়ের শরিক নয়। স্কটিশ ঐক্য বাঁচাতে তাই উচ্ছ্বাসহীন স্বস্তির অভিব্যক্তিই তাঁদের চোখেমুখে। গণভোটে ব্রিটেনের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থাকার পক্ষে রায় দিয়েছে স্কটল্যান্ড। এ বার তাদের অভ্যন্তরীণ সংহতি রাখার পরীক্ষা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE