Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Israel-Hamas Conflict

গাজ়ায় রাষ্ট্রপুঞ্জের স্কুলের নীচে হদিস মিলল হামাসের সুড়ঙ্গের

এই স্কুলটি তৈরি করেছিল ‘ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফিউজিস’, সংক্ষেপে ‘ইউএনআরডব্লিউএ’। রাষ্ট্রপুঞ্জের এই সংস্থাটি প্যালেস্টাইনে সব চেয়ে বেশি সক্রিয়। এর সদর দফতর গাজ়ায়।

An image of Gaza

গাজ়ায় প্যালেস্টাইনি শরণার্থীদের জন্য তৈরি রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি স্কুলের নীচে গোপন সুড়ঙ্গের সন্ধান পেল ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
তেল আভিভ শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৪০
Share: Save:

গাজ়ায় প্যালেস্টাইনি শরণার্থীদের জন্য তৈরি রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি স্কুলের নীচে গোপন সুড়ঙ্গের সন্ধান পেল ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। কয়েকশো মিটার দীর্ঘ সেই সুড়ঙ্গ। বাহিনীর দাবি, এই কারণেই তারা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও ত্রাণকর্মীদেরও সন্দেহের ঊর্ধ্বে রাখতে পারছে না।

এই স্কুলটি তৈরি করেছিল ‘ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফিউজিস’, সংক্ষেপে ‘ইউএনআরডব্লিউএ’। রাষ্ট্রপুঞ্জের এই সংস্থাটি প্যালেস্টাইনে সব চেয়ে বেশি সক্রিয়। এর সদর দফতর গাজ়ায়। আইডিএফের বক্তব্য, এ থেকেই প্রমাণ হয়ে যায়, রাষ্ট্রপুঞ্জের শিবিরগুলোকেও ব্যবহার করতে ছাড়েনি হামাস। ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারেরা বিদেশি সংবাদ সংস্থার সাংবাদিকদের সুড়ঙ্গের ভিতরে নিয়ে গিয়েছিলেন। এই প্রথম নয়, আগেও এ ধরনের অভিযোগ তুলেছে আইডিএফ। এমনকি তারা এ-ও দাবি করেছে, ‘ইউএনআরডব্লিউএ’-এর কিছু কর্মী আসলে হামাসের হয়ে কাজ করেন। কিংবা এমনটাও হতে পারে, হামাস সদস্যেরা পরিচয় গোপন করে রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থায় ভিড়েছে। ‘ইউএনআরডব্লিউএ’ জানিয়েছে, তারা অন্তর্তদন্ত শুরু করেছে।

ইজ়রায়েলি হামলা আজও অব্যাহত রয়েছে। দক্ষিণ গাজ়া স্ট্রিপের রাফায় ইজ়রায়েলি যুদ্ধবিমানের হামলায় ৩১ জন প্যালেস্টাইনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে খবর। গাজ়ার ২৩ লক্ষ বাসিন্দার অর্ধেকেরও বেশি এখন রাফায় রয়েছেন। আইডিএফের নির্দেশেই তাঁরা দক্ষিণ গাজ়ায় চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন। যুদ্ধের শুরুতে কার্যত বন্দুকের নলের সামনে রেখে উত্তর ও মধ্য গাজ়া থেকে লোকজনকে দক্ষিণে চলে আসতে বাধ্য করা হয়। বেশির ভাগ মানুষ আশ্রয় নেন খান ইউনিস ও মিশর সীমান্ত ঘেঁষা রাফা অঞ্চলে। কিন্তু তার পর দক্ষিণেও হামলা শুরু করে আইডিএফ। রাফায় যে ৩১ জন মারা গিয়েছেন, তার এক-তৃতীয়াংশই শিশু-কিশোর। গত কাল ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছেন, স্থল-অভিযানের আগে রাফার আশ্রয় নেওয়া লক্ষ লক্ষ মানুষকে অন্যত্র সরাতে হবে। কোথায়, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি তিনি। একপ্রকার কোণঠাসা হয়ে অসহায় অবস্থায় মরতে হচ্ছে মানুষকে। কাল নেতানিয়াহুর ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরেই রাতভর হামলা চালায় আইডিএফ। তাতে ২৮ জন প্রাণ হারান। পরে আরও মৃত্যু হয়।

ইজ়রায়েল-লেবানন সীমান্ত পেরিয়ে সে দেশের প্রায় ৬০ কিলোমিটার ভিতরে হামলা চালিয়েছে আইডিএফ। হামাস-সদস্য সন্দেহে এক জনকে গুলি করা হয়েছিল। শোনা গিয়েছে, তিনি বেঁচে গিয়েছেন। কিন্তু অন্য ৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে এক জন লেবাননের জঙ্গি গোষ্ঠী হিজ়বুল্লার সদস্য।

ঘরে-বাইরে বিপর্যস্ত নেতানিয়াহু। গাজ়ায় হামাসের ডেরায় এখনও শতাধিক মানুষ বন্দি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ মারা গিয়েছেন বলে ইতিমধ্যেই খবর মিলেছে। যাঁরা বেঁচে আছেন, তাঁরা আদৌ প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারবেন কি না, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কারণ এখনও পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি ও বন্দি-বিনিময় নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছতে পারেনি ইজ়রায়েল ও হামাস। এ অবস্থায় সপ্তাহান্তে ফের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে তেল আভিভে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে হবে। নতুন নির্বাচন করার দাবিও জানাচ্ছে তাঁরা। বেশ কয়েক জায়গায় আগুন ধরিয়ে দেয় তাঁরা, দিকে দিকে নেতানিয়াহু-বিরোধী স্লোগান ওঠে। ৭ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে তেল আভিভে। জেরুসালেমের প্যারিস স্কোয়ারেও মিছিল বেরিয়েছে। সেখানেও একই দাবি, বন্দিদের মুক্ত করতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE