বাংলাদেশের ঝিনাইদহে এক পুরোহিতকে খুনের এক মাসের মধ্যে শুক্রবার একই ভাবে কুপিয়ে খুন করা হল আর একটি মন্দিরের সেবায়েতকে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এ ধরনের হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলেই মনে করছে— যার উদ্দেশ্য নয়াদিল্লির সঙ্গে শেখ হাসিনা সরকারের সৌহার্দ্য নষ্ট করা। একই সঙ্গে এই ভাবমূর্তি তুলে ধরা যে, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে হাসিনা সরকার ব্যর্থ। বাংলাদেশে এই ধরনের ঘটনার ফলে পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যাতে বিঘ্নিত না-হয়, প্রশাসন ও পুলিশকে সে বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের গরিব মানুষের ওপর এ ধরনের আক্রমণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সে দেশের বিভিন্ন সংগঠনের সদস্য ও বিশিষ্ট জনেরাও।
শুক্রবার নিহত শ্যামানন্দ দাস (৫০) মধুপুরের কাস্টসাপরা রাধামদন গোপাল মঠের দেখাশোনা করতেন। মোটরসাইকেলে চড়ে আসা তিন দুষ্কৃতী ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মারে কাকভোরে ফুল তুলতে বেরোনো হতদরিদ্র সেবাইতের ঘাড়ে ও মাথায়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘এ ধরনের হামলা ও হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক চক্রান্তেরই অঙ্গ। জঙ্গিদের টার্গেট বেছে দিচ্ছেন বিশেষ দু’একটি রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রী।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, খুব শীঘ্রই তাঁদের ধরে ফেলা হবে। দু-এক মাস পরে আর বাংলাদেশে এমন ঘটনা ঘটবে না বলে তিনি নিশ্চিত।
এর আগে জুনের ৭ তারিখে ঝিনাইদহেরই করাতিপাড়া গ্রামে এক বৃদ্ধ পুরোহিতকে খুন করা হয়েছিল। এর তিন দিন পরেই পাবনায় সৎসঙ্গ আশ্রমের এক সেবাইতকেও খুন করা হয়। ১৫ জুন মাদারিপুরে সরকারি কলেজের এক শিক্ষক রিপন চক্রবর্তীকে বাড়িতে ঢুকে চাপাতি দিয়ে কোপায় তিন আততায়ী। রিপন প্রাণে বেঁচে যান। শুক্রবার সেই আক্রমণের প্রধান পরিকল্পককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ঢাকার পুলিশ। উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান জানিয়েছেন, ধৃত খালিদ সাইফুল্লা জেএমবি (জামাতুল মুজাহিদিন)-এর প্রথম সারির নেতা।