Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Rickshaw puller

ফুসফুসে সমস্যা, সংসার টানতে নাকে অক্সিজেনের নল লাগিয়েই রিকশা চালান সেন্টু!

পাঁচ বছর ধরে ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছেন সেন্টু। কিন্তু তা বলে কী পেট মানবে! তাই পেটের টানেই ওই অবস্থাতেও রিকশা চালিয়ে যাচ্ছেন।

Rickshaw puller

রাজশাহীর রাস্তায় রিকশা নিয়ে সেন্টু। (বাঁ দিকে) হাসপাতালে ভর্তি। ছবি: প্রথম আলো।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৩ ১৪:৩৫
Share: Save:

রিকশার সামনে দিকে চালকের আসনের ঠিক পাশেই বসানো একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার। সেখান থেকে অক্সিজেন নল চলে গিয়েছে চালকের আসনের দিকে। আর সেই নল লাগিয়েই রিকশা টেনে চলেছেন চলেছেন মাঝবয়সি এক ব্যক্তি। মাইনুজ্জামান ওরফে সেন্টু। বাংলাদেশের রাজশাহী নগরের কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা তিনি। তাঁর দুই কন্যা এবং এক পুত্র রয়েছেন। সকলেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ফলে স্ত্রী চম্পাকেই নিয়েই এখন তাঁর সংসার। পাঁচ বছর ধরে ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছেন সেন্টু। কিন্তু তা বলে কী পেট মানবে! তাই পেটের টানেই ওই অবস্থাতেও রিকশা চালিয়ে যাচ্ছেন। রিকশায় তাঁর আসনের পাশেই অক্সিজেন সিলিন্ডার বসানোর জন্য একটি জায়গা বানিয়ে নিয়েছেন। সওয়ারি না থাকলেও ওই অক্সিজেন সিলিন্ডারই সেন্টুর সর্ব ক্ষণের সঙ্গী। এটি ছাড়া এক মুহূর্ত চলে না তাঁর।

তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই অক্সিজেন সিলিন্ডারকে সঙ্গী বানিয়ে সকাল থেকেই সওয়ারির খোঁজে নেমে পড়েন সেন্টু। নাকে সর্ব ক্ষণ লাগানো রয়েছে অক্সিজেনের নল। কিন্তু সম্প্রতি বাড়াবাড়ি হওয়ার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাঁকে। শারীরিক পরীক্ষা করার পর চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন, আর রিকশা চালানো যাবে না। এ কথা শুনে অত্যন্ত মুষড়ে পড়েন সেন্টু। শুধু তাই-ই নয়, চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছেন, ‘কনসেনট্রেটর’ লাগিয়ে রাখতে হবে। যা তাঁকে অক্সিজেন নিতে সাহায্য করবে। কিন্তু সেই যন্ত্রের দাম ৫০ হাজার টাকা। এত টাকা পাবেন কোথায়, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সেন্টু। বাংলাদেশের সংবাদপত্র প্রথম আলো-কে তিনি বলেন, “পাঁচ বছর আগে একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে একটি রিকশা কিনেছিলাম। কিন্তু সেই রিকশা চুরি হয়ে যায়। পরে আবার ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে আর একটি রিকশা কিনি। এত দিন সেই রিকশাই চালাচ্ছিলাম।” সেন্টু আরও জানিয়েছেন, দিনে তিনটি অক্সিজেন সিলিন্ডার লাগে। ওষুধ আর অক্সিজেন মিলিয়ে ৬০০ টাকা খরচ হয় প্রতি দিন। এ ছাড়াও ঋণের জন্য প্রতি সপ্তাহে দু’জায়গায় কিস্তি দিতে হয় ১ হাজার ৩৫০ টাকা। সেন্টুর আক্ষেপ, রিকশা না চালাতে পারলে কী ভাবে সংসার চলবে! কোথা থেকেই বা ‘কনসেনট্রেটর’ কেনার টাকা পাবেন? এ সব ভেবে ভেবেই অস্থির হয়ে পড়ছেন সেন্টু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rickshaw puller Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE