Blue tartar is actually lapis lazuli reveals medieval German nun painted manuscripts dgtl
lapis lazuli
হাজার বছরের প্রাচীন মহিলার কঙ্কালের দাঁতের ফাঁকে রহস্যময় নীল পাথর! রহস্যভেদ বিজ্ঞানীদের
এক পাটি দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা সামান্য নীল রঙের আঁচ পেলেন গবেষকরা। আর তা থেকেই মধ্যযুগের এক মহিলার পেশাও জানা গেল।
সংবাদ সংস্থা
বার্লিনশেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০৯:০০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১২
দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা ছোট্ট নীল রঙের একটা পাথর। হাজার বছরের এক মহিলার কঙ্কালের মধ্যে কোথা থেকে এল এই রহস্যময় পাথর? রহস্য সমাধানে নেমে পড়লেন বিজ্ঞানীরা। আর তা থেকেই জানা গেল মধ্যযুগের ওই মহিলার পেশার কথা।
০২১২
ডেন্টাল প্লেকে ওই রং ‘ফসিলাইজড’ হয়ে রয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। জার্মানির ডালহেইমের মধ্যযুগীয় মঠের মধ্যে একটি কঙ্কালের মধ্যে থেকে এটি উদ্ধার হয়েছে।
০৩১২
রেডিওকার্বন ডেটিংয়ের মাধ্যমে জানা যায়, এটি ৪৫-৬০ বছর বয়সি এক সন্ন্যাসিনীর মৃতদেহ। ৯৯৭ থেকে ১১৬২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কোনও এক সময় মৃত্যু হয় তাঁর।
০৪১২
ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের (এমআইটি) গবেষক ক্রিস্টিনা ওয়ারিন বলেন, দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা এরকম অসংখ্য উজ্জ্বল নীল রঙের পাথরের কণা দেখে প্রথমে চমকে গিয়েছিলেন তাঁরা।
০৫১২
মাইক্রো-রমন স্পেকট্রোস্কোপিতে জানা গিয়েছে, এই পদার্থটি হল ল্যাপিস লাজুলি। আফগানিস্তানের পার্বত্য এলাকায় এটি পাওয়া যায়। ল্যাপিসকে গুঁড়ো করে রং তৈরি হয়। মাইকেলেঞ্জেলোর মতো কিংবদন্তি শিল্পীরা এই রং ব্যবহার করতেন রেনেশাঁ আমলে।
০৬১২
মধ্যযুগে শুধুমাত্র মহামূল্যবান ধর্মীয় লিপিতেই ছিল এই রঙের ব্যবহার। কিন্তু একজন সন্ন্যাসিনীর দাঁতের ফাঁকে সেই রং কোথা থেকে এল?
০৭১২
বিজ্ঞানীদের দাবি, রং করার মাঝে আপন মনে কিছু একটা ভাবতে ভাবতে তুলির পিছনটা সম্ভবত কামড়ে ধরেছিলেন তিনি। আর শুধু এই কারণেই হাজার বছর পর এক জার্মান সন্ন্যাসিনীর শিল্পী সত্ত্বা সামনে এল।
০৮১২
জেনা এমআইটি-ক গবেষক লেখক মনিকা ট্রোম্প বলেন, এই মহিলার উপর খুব সম্ভবত পবিত্র চিঠি ও বাইবেল তুলি দিয়ে লেখার দায়িত্বে ছিলেন। সেই সময়ই তুলির গোড়া মুখে দিয়েছিলেন বেশ কয়েকবার।
০৯১২
মহামূল্যবান এই রং শুধুমাত্র লেখক-চিত্রশিল্পীরাই ব্যবহার করতেন। বিশেষ করে পাণ্ডুলিপিতে ছিল এই রঙের ব্যবহার, জানিয়েছেন গবেষকরা। ১২ শতকের আগে হাতে গোনা কয়েক জন মহিলা এই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সংখ্যায় তা ১ শতাংশেরও কম।
১০১২
পবিত্র পাণ্ডুলিপি হোক বা আঁকা, মহিলা শিল্পী-লেখিকাদের নাম খুব কমই সেখানে লেখা থাকত। নাম থাকাকে মহিলাদের অসম্মান হিসাবে ধরা হত। এটা এই আবিষ্কার থেকে উঠে আসছে। কিন্তু মহিলা যে এক জন শিল্পীই ছিলেন, কী ভাবে নিশ্চিত হলেন গবেষকরা। বাইবেলে বা বইয়ে চুম্বন করার রেওয়াজ তো বহু দিনের। সেখানে থেকে কোনও ভাবে এই রং আসেনি তো?
১১১২
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, বইকে চুম্বন করার রীতি ছিল, কিন্তু তা ১৩০০ খ্রিস্টাব্দের পর। এই দাঁত যাঁর, তার বয়স আরও বেশি। প্রাচীন কালে ল্যাপিস লাজুলি ব্যবহার করা হত ওষুধ প্রস্তুতির ক্ষেত্রে, কিন্তু জার্মানিতে সেই সময় তারও চল ছিল না।
১২১২
মহিলা কি ল্যাপিস লাজুলি পাথর থেকে অন্য কিছু বানাতেন? গবেষকরা বলেছেন, হালকা ছাই রং থেকে উজ্জ্বল নীল রঙের রঞ্জক বানানোর পদ্ধতিও ইউরোপে তখনও আসেনি। তাই লেখক-চিত্রশিল্পী না হলে দাঁতের ফাঁকে এই পদার্থ পাওয়া অসম্ভব। এই ল্যাপিস লাজুলি যার ক্যারাট পিছু মূল্য প্রায় ১১ হাজার টাকা। যেটি ব্যবহার করা হয় সেমিপ্রেশাস স্টোন হিসাবে।