Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Afghanistan Crisis

Afghanistan Crisis: অগস্টের পরেও সেনা থাকুক, চাইছেন বরিস

বরিস জানিয়েছেন, তালিবানের উপরে নতুন করে নানা নিষেধাজ্ঞা চাপানো প্রয়োজন। এ জন্য জি-৭ গোষ্ঠীর বৈঠকেও সওয়াল করবেন তিনি।

বরিস জনসন

বরিস জনসন ফাইল চিত্র

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২১ ০৬:৪০
Share: Save:

চলতি মাসের ৩১ তারিখের পরেও যাতে আফগানিস্তানে আমেরিকান সেনা থেকে যায়, তার জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অনুরোধ করবেন বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। একই সঙ্গে তাঁর মতে, তালিবানের উপরে নতুন করে নানা নিষেধাজ্ঞা চাপানো প্রয়োজন। এ জন্য জি-৭ গোষ্ঠীর বৈঠকেও সওয়াল করবেন তিনি। একই সুর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর গলায়। তিনি বলেন, ‘‘তালিবান আসলে একটি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী। মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা ঘটনা তারা বারবার ঘটিয়ে চলেছে। অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে নানাবিধ নিষেধাজ্ঞা চাপানো উচিত।’’ কূটনীতিকদের ধারণা, জি-৭ বৈঠকে এই দুই রাষ্ট্রনেতা এই বিষয়টি নিয়ে জোরদার সওয়াল করবে। নিষেধাজ্ঞার প্রশ্নে আমেরিকার অবস্থান কী হবে, তা জানতে আগ্রহী সব পক্ষই। কারণ এই আমেরিকাই গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে কাতারের দোহায় তালিবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে অবশেষে শান্তি-চুক্তি সই করে।

কাল জি-৭ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি (আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইটালি, জার্মানি, জাপান ও কানাডা) জরুরি ভিত্তিতে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসছে। বৈঠকটি ডেকেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীও। বৈঠকের বিষয় আপাতত একটাই। আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি। বরিস তার ঠিক আগেই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি চান, এই মাসের পরেও আফগানিস্তানের মাটিতে আমেরিকান বাহিনী থাকুক। সেই অনুরোধই তিনি কালকের বৈঠকে বাইডেনকে করবেন।

কাবুলে আশরফ গনি সরকারের পতনের পরে সাধারণ আফগানদের মধ্যে দেশ ছাড়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। হামিদ কারজ়াই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তার পর থেকেই আমেরিকা ও তার মিত্র দেশের সেনা বাহিনীর দখলে। কিন্তু বিমানবন্দরের পরিস্থিতি এখনও অরাজক। এই পরিস্থিতিতে বাইডেন জানিয়েছেন, কাবুল বিমানবন্দর চত্বরে বিদেশি সেনা তাদের নিয়ন্ত্রণের পরিধি বাড়িয়েছে। তবে বাইডেনের বক্তব্য, সেনা প্রত্যাহারের দিন পিছনো নিয়ে তাঁর প্রশাসনও ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে। যদিও তিনি মনে করছেন, এখনও পর্যন্ত তার প্রয়োজন না-ও হতে পারে। এখানেই আপত্তি তুলেছেন জনসন। তাঁর কথায়, ‘‘এক বার আমেরিকার বাহিনী আফগানিস্তান ছাড়লে, মিত্র দেশগুলির পক্ষে সেখানে বাহিনী রাখা খুবই কঠিন হবে।’’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, নিজেদের দেশের নাগরিক ও যে সব আফগান দেশ ছাড়তে চান, তাঁদের পুরোপুরি উদ্ধার না করে আমেরিকার সেখান থেকে বাহিনী সরিয়ে নেওয়া উচিত হবে না।

আপাতত আফগানিস্তানে ব্রিটেনের ১ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে। ব্রিটিশ সরকার আগেই জানিয়েছিল তারা ২০ হাজার আফগান শরণার্থীকে তাদের দেশে থাকার অনুমতি দিতে প্রস্তুত। ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, গত দশ দিনে তারা ৫৭২৫ জনকে আফগানিস্তান থেকে উড়িয়ে এনেছে। যাঁদের মধ্যে ৩১০০ জন আফগান নাগরিক। বাইডেন প্রশাসনের মতোই জনসন সরকার সেই সব আফগানকেই নিজেদের দেশে আনার অগ্রাধিকার দিচ্ছে, যাঁরা এত দিন ব্রিটিশ সরকারকে সেখানে নানা কাজে সাহায্য করেছেন। যে সব আফগান মহিলার প্রাণ সংশয় রয়েছে, ব্রিটেন তাঁদের উদ্ধার করতেও আগ্রহী। আপাতত দিনে দু’হাজার মানুষকে উদ্ধারের লক্ষ্য রাখছে ব্রিটিশ সরকার। বরিসের কথায়, ‘‘সঙ্কট কাটিয়ে কী ভাবে আফগানিস্তানের মানুষের অধিকার রক্ষা করা যায়, এখন বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলিকে সে দিকেই নজর দিতে হবে।’’ প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছেন ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী ডমিনিক রাব ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Afghanistan Crisis Boris Johnson america
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE