Advertisement
০৮ মে ২০২৪

ব্রেক্সিট পাশ, লড়াই স্কটল্যান্ডের সঙ্গে

দুই নেত্রীর লড়াই! ব্যাপারটা এখন সেখানেই গিয়ে ঠেকেছে। অন্য ভাষায় বলতে গেলে— ব্রেক্সিট বনাম স্কটিশ স্বাধীনতার দাবি।

স্বস্তি: ১০, ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে টেরেসা মে। ছবি: রয়টার্স।

স্বস্তি: ১০, ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে টেরেসা মে। ছবি: রয়টার্স।

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৭ ০৪:১৩
Share: Save:

দুই নেত্রীর লড়াই! ব্যাপারটা এখন সেখানেই গিয়ে ঠেকেছে। অন্য ভাষায় বলতে গেলে— ব্রেক্সিট বনাম স্কটিশ স্বাধীনতার দাবি।

নানা জটিলতা পেরিয়ে ব্রিটেনের পার্লামেন্টে সদ্য পাশ হয়েছে ব্রেক্সিট বিল। মঙ্গলবারই তা পৌঁছবে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছে। তাঁর সম্মতিতে চালু হবে ‘ব্রেক্সিট আইন’। এ মাসের শেষে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন। কিন্তু এ সবের মধ্যে গোল বাধিয়েছেন স্কটিশ ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জন।

এক রকম সম্মুখ সমরে নেমে তিনি জানিয়েছেন, ব্রিটেন থেকে বেরিয়ে যেতে স্কটিশ স্বাধীনতার জন্য ২০১৯ সালের মধ্যে দ্বিতীয় গণভোটে যাওয়ার কথা ভাবছেন তিনি। লড়াকু নিকোলার ঘোষণা— ‘‘স্কটল্যান্ড যেন ফের নিজের মত জানানোর সুযোগ পায়। ব্রেক্সিট-সহ ব্রিটেনে থাকা নাকি স্বাধীন দেশ হিসেবে উঠে আসা— বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকবে স্কটল্যান্ডের হাতে।’’ ব্রেক্সিট শুরুর ঠিক আগে নিকোলার বিদ্রোহে চমকে গিয়েছেন অনেকে। স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির নেত্রী নিকোলা ‘একচোখা সিদ্ধান্তে’র দিকে এগোচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন টেরেসা মে। তাঁর বক্তব্য, এটা দুঃখজনক। ওঁকে বুঝতে হবে ‘রাজনীতি কোনও খেলা নয়।’ স্কটিশ ফার্স্ট মিনিস্টারের দাবি যে গুরুত্ব পাবে না, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন টেরেসা। তাঁর দাবি, প্রমাণ রয়েছে, স্কটিশ স্বাধীনতার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ দ্বিতীয় গণভোট চায় না। রুষ্ট টেরেসা জানান, তিনি ভেবেছিলেন ব্রেক্সিট নিয়ে স্কটল্যান্ডের সঙ্গেও বোঝাপড়ায় অসুবিধে হবে না কারণ তাদের অভিন্ন কিছু স্বার্থ রয়েছে।

কিন্তু সে আশায় জল ঢেলেছেন স্টার্জন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ইউরোপের সঙ্গে চুক্তিতে আগ্রহ ছিল স্কটল্যান্ডের। টেরেসা পাত্তা দেননি। এ দিকে ইউরোপীয় এক দূতের বক্তব্য, ‘‘ব্রিটেনে ইইউ ছেড়ে বেরনো মানে স্কটল্যান্ডেরও বেরিয়ে যাওয়া। ইইউ-এর সঙ্গে আপস করার জন্য স্কটল্যান্ডের আলাদা কোনও ক্ষমতা নেই। স্বাধীন স্কটল্যান্ড বাইরে থেকে ইইউ সদস্যপদের জন্য আবেদন জানাতে পারে।’’

সব দেখে কূটনীতিকদের অভিমত, ব্রেক্সিট পাশ হলেও কনজারভেটিভ সরকারের সঙ্গে ন্যাশনালিস্ট পার্টির সংঘাত শুরু হলো বলে। পার্লামেন্টে স্বস্তি মিললেও স্টার্জনের ঘোষণা টেরেসার পায়ের তলার মাটি কেড়ে নিয়েছে। এ বার তাঁর দুই লড়াই শুরু। একটি, দ্রুত ব্রেক্সিট মীমাংসা করা আর অন্যটি স্কটল্যান্ডের সঙ্গে সংযোগ ছিন্ন না করা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, স্টার্জনের ছক ছিল, যে দিন ব্রেক্সিট নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে এগোবেন টেরেসা, সে দিনই দ্বিতীয় গণভোট নিয়ে বক্তৃতা দেবেন। কিন্তু গত কাল স্পষ্ট হয়ে যায়, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এ মাসের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা না করে এগোবেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Britain Brexit Bill UK Parliament Theresa May
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE