Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

চিনের সঙ্গে ‘দঙ্গল’ নয়, বৈঠকে শি-কে বার্তা মোদীর

সংঘাতের তালিকাটি দীর্ঘ। যার জেরে সম্প্রতি চিনের মেগাপ্রকল্প ‘ওবর’-এর উদ্বোধন (যেখানে উপস্থিত ছিল বিশ্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ দেশ) বয়কট করেছে ভারত।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৭ ১৩:১৫
Share: Save:

রুপোলি পর্দার ‘দঙ্গল’ দেখে খুশি হয়েছেন চিনা প্রেসিডেন্ট! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আজ গুণগানও করেছেন বলিউডের। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা কিন্তু বলছেন, বাস্তবের জমিতে দু’দেশের সম্পর্ক কার্যত তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। ভারত বুক ঠুকে চিন-বিরোধিতার দামামা বাজিয়ে গেলেও, ঘরোয়া ভাবে বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারাও স্বীকার করছেন যে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে নয়াদিল্লি এখন যথেষ্ট কোণঠাসা। চলতি বছরের প্রথম ভারত-চিন শীর্ষ বৈঠকে আজ বেজিং-এর সঙ্গে সম্পর্ক রাহুমুক্ত করার চেষ্টা শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

আস্তানায় এসসিও সম্মেলনের ফাঁকে চিনা প্রেসিডেন্ট তথা সে দেশের কমিউনিস্ট পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি শি চিনফিং-এর সঙ্গে পার্শ্ব বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা ভারত-চিন সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছি। কী ভাবে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’ বিদেশসচিব এস জয়শঙ্করের কথায়, ‘‘আন্তর্জাতিক অস্থিরতার বাতাবরণে ভারত-চিন সম্পর্ক সুস্থিতির প্রতীক হয়ে উঠতে পারে। ভারত এবং চিনের একসঙ্গে কাজ করা উচিত। দু’দেশের মধ্যে মতবিরোধ যা রয়েছে, তা সংঘাতে পৌঁছে যাওয়া ঠিক নয়। মতানৈক্য ঠিকঠাক মেটাতে পারলে তা অনেক নতুন সুযোগ খুলে দেবে।’’

সংঘাতের তালিকাটি দীর্ঘ। যার জেরে সম্প্রতি চিনের মেগাপ্রকল্প ‘ওবর’-এর উদ্বোধন (যেখানে উপস্থিত ছিল বিশ্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ দেশ) বয়কট করেছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, এই সংঘাত ক্রমশ বাড়তে দিলে নয়াদিল্লির বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত লোকসান ছাড়া যে লাভ কিছু নেই, এটাও স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর তাই সমস্যার ক্ষেত্রগুলি পাশে সরিয়ে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং সীমান্ত আলোচনাকে গতি দেওয়ার জন্য শি-কে অনুরোধ জানিয়েছেন মোদী। সূত্রের খবর, এ ক্ষেত্রে পরিবেশ এবং উষ্ণায়ন রোধে ভারত তার অগ্রণী ভূমিকার দিকটি তুলে ধরে চিনের সঙ্গে দর কষাকষির একটি প্রয়াসও শুরু করেছে। যে ভাবে ভারত-চিনকে একই বন্ধনীর মধ্যে রেখে তিরস্কার করে প্যারিস চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, তাতে বিশ্বে আমেরিকা-বিরোধী একটি পরিসর তৈরি হয়েছে। নয়াদিল্লি চাইছে এই পরিসরে, উষ্ণায়ন-বিরোধিতায় বাড়তি দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে চিনের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করে নেওয়া। অর্থাৎ, এনএসজি-তে অন্তর্ভুক্তি, চিন-পাকিস্তান করিডর স্থগিত রাখা, মাসুদ আজহারকে বিশ্ব জঙ্গি তালিকাভূক্ত করার মতো বিষয়গুলিতে বেজিংকে নরম করা। আগামী মাসে জার্মানিতে জি-২০ বৈঠক এবং সেপ্টেম্বরে চিনে ব্রিকস দেশগুলির সম্মেলনে ফের মোদী-শি-শীর্ষ আলোচনার সুযোগ হবে। সেখানেও এই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে মোদী সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Xi Jinping Narendra Modi Dangal Bollywood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE