Advertisement
০১ এপ্রিল ২০২৩

ব্রিকসে সন্ত্রাস নিয়ে সরব চিন

গত বছর গোয়ায় ব্রিকসে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাস নিয়ে সরব হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সে বৈঠকের শেষে প্রকাশিত বিবৃতিতে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ ছিল না। চিন ও রাশিয়ার চাপেই ওই প্রসঙ্গ বাদ দিতে হয়েছিল বলে দাবি কূটনৈতিক সূত্রের। কিন্তু কূটনীতিকদের মতে, পরিস্থিতি বদলেছে।

চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-ই।

চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-ই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৯:৩০
Share: Save:

ব্রিকসের মঞ্চ পাকিস্তানের মদতপুষ্ট সন্ত্রাস নিয়ে আলোচনার উপযুক্ত স্থান নয় বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছিল চিন। কিন্তু আজ চিনের শিয়ামেনে ব্রিকস রাষ্ট্রগোষ্ঠীর শীর্ষ বৈঠকের শুরুতে সন্ত্রাস নিয়ে মুখ খুললেন খোদ চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-ই। সেইসঙ্গে ‘কূটনীতির’ মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর বার্তা দিলেন।

Advertisement

গত বছর গোয়ায় ব্রিকসে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাস নিয়ে সরব হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সে বৈঠকের শেষে প্রকাশিত বিবৃতিতে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ ছিল না। চিন ও রাশিয়ার চাপেই ওই প্রসঙ্গ বাদ দিতে হয়েছিল বলে দাবি কূটনৈতিক সূত্রের। কিন্তু কূটনীতিকদের মতে, পরিস্থিতি বদলেছে। চিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র পাকিস্তানকে ‘জঙ্গিদের আশ্রয়স্থল’ হিসেবে সরাসরি বিঁধেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে ব্রিকসের মঞ্চে ফের সন্ত্রাস নিয়ে সরব হওয়ার সুযোগ পেয়ে গিয়েছেন মোদী। চিন পছন্দ করুক বা না করুক, মোদী যে এ বারও সন্ত্রাস নিয়ে মুখ খুলবেন তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা।

কূটনীতিকদের মতে, ডোকলাম সঙ্কটের পরে অন্তত ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন চিনও আর তিক্ততা বাড়াতে চায় না। তাই সম্মেলনের শুরুতে সন্ত্রাস নিয়ে মুখ খুলে নিজেই আলোচনার সুর বেঁধে দিতে চাইলেন চিনা প্রেসিডেন্ট। চিনফিংয়ের কথায়, ‘‘সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় সামগ্রিক পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে। সন্ত্রাসের মূল কারণ ও উপসর্গ, এই দু’টি বিষয়েরই মোকাবিলা করা প্রয়োজন। তা হলে জঙ্গিরা লুকনোর জায়গা পাবে না।’’

ব্রিকসের সদস্য দেশগুলির মতভেদ ভুলে পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়ানো উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন চিনফিং। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও সমস্যা হলে কূটনীতির মাধ্যমেই মেটাতে হবে।’’ কূটনীতিকদের মতে, ডোকলাম সঙ্কটের পরে ভারতকে পরোক্ষে সদর্থক বার্তা দিতে চেয়েছেন চিনা প্রেসিডেন্ট। চিনের সঙ্গে সম্পর্কের বরফ কিছুটা গলায় খুশি দিল্লিও। কিন্তু বেজিংয়ের সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে গেলে যে ভারসাম্যের কূটনীতি ছাড়া পথ নেই তা-ও বিলক্ষণ জানে মোদী সরকার। তাই আজ কড়া ভাষায় উত্তর কোরিয়ার হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার সমালোচনা করলেও বেজিংয়ের সঙ্গে পিয়ংইয়ংয়ের ‘বন্ধুত্বের’ প্রসঙ্গটি সন্তর্পণে এড়িয়ে গিয়েছে দিল্লি। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, ‘‘বিশ্বকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভেঙে উত্তর কোরিয়া যে ভাবে পরীক্ষা চালিয়েছে, তা উদ্বেগজনক। এতে কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার কাজ ব্যাহত হবে। ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু অস্ত্র প্রযুক্তি বেআইনি ভাবে ছড়ানোয় ভারতের জাতীয় নিরাপত্তাও ক্ষতিগ্রস্ত।’’ বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা জানাচ্ছেন, চিনের মদতেই উত্তর কোরিয়া একের পর এক পদক্ষেপের সুযোগ পাচ্ছে বলে ধারণা কূটনীতিকদের। কিন্তু কাল মোদী-চিনফিং বৈঠকের আগে কূটনৈতিক কৌশলগত কারণেই এ নিয়ে বাড়তি গলা চড়াতে চাইছে না দিল্লি। আবার ব্রিকসের আগে উত্তর কোরিয়ার এই হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষা নিয়ে চুপও থাকতে চায় না মোদী প্রশাসন। এক সময়ে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বেআইনি পথে পরমাণু প্রযুক্তি নিয়ে ব্যবসা করার অভিযোগ উঠেছিল পাক পরমাণু বিজ্ঞানী আব্দুল কাদির খানের বিরুদ্ধে। তাই আজকের বিবৃতিতে পরোক্ষে পাকিস্তানকে খোঁচা দিয়েই এই ভূখণ্ডে নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করছে সাউথ ব্লক।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.