Advertisement
১১ মে ২০২৪

দিল্লিকে স্বস্তি দিয়ে নরম সুর দলাইয়ের

ভারত-চিন কূটনৈতিক স্নায়ুর যুদ্ধে দলাই লামা বরাবরই একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়ে থেকেছেন। কিন্তু গত এক বছরে বেজিংয়ের সঙ্গে সংঘাত বেড়ে যাওয়ায় বিষয়টি আরও বেশি করে প্রকাশ্যে চলে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

দলাই লামার অবস্থান স্বস্তি দিচ্ছে নয়াদিল্লিকে। —ফাইল চিত্র।

দলাই লামার অবস্থান স্বস্তি দিচ্ছে নয়াদিল্লিকে। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৮ ১২:০৮
Share: Save:

আগামী ২৭ তারিখ চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শীর্ষ বৈঠকের আগে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বেজিং প্রশ্নে নরম সুর তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামার। আজ একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘ওঁরা দু’জনে বৈঠকে বসছেন, খুবই ভাল কথা। দুই প্রতিবেশী দেশ এক পরিবারের মতো হয়ে থাকাটাই ভাল।’’

ভারত-চিন কূটনৈতিক স্নায়ুর যুদ্ধে দলাই লামা বরাবরই একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়ে থেকেছেন। কিন্তু গত এক বছরে বেজিংয়ের সঙ্গে সংঘাত বেড়ে যাওয়ায় বিষয়টি আরও বেশি করে প্রকাশ্যে চলে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। চিনের উপর চাপ বাড়াতে তিব্বতি ধর্মগুরুকে কাজে লাগাচ্ছে সাউথ ব্লক, এমন অভিযোগও বার বার তুলেছে সে দেশের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যম। তবে ডোকলাম কাণ্ডের পর নতুন বছরের গোড়া থেকেই নয়াদিল্লি যখন চিনের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতির চেষ্টা শুরু করে, দলাই সামা প্রশ্নেও লক্ষণীয় পরিবর্তন দেখা যায়। মন্ত্রিসভার সচিব নোট দিয়ে আমলা এবং মন্ত্রীদের জানান, দলাইয়ের অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলতে। তিব্বতি ধর্মগুরুর একটি অনুষ্ঠান নয়াদিল্লি থেকে সরানো হয় ধর্মশালাতে।

বহু টানাপড়েনের পর দু’দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব ফের মুখোমুখি বসার আগে দলাই লামার এই নরম স্বর ভারত-চিন মঞ্চকে কিছুটা মসৃণ করে দিল বলে মনে করা হচ্ছে। এই কাজে পরোক্ষে মোদী সরকারের ভূমিকা রয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে। গত কাল অভিনব ভাবে চিনের সঙ্গে সহাবস্থানের কথাও বলেছেন দলাই লামা। ভারতে নির্বাসনের ৬০ বছর পূর্তি উৎসবে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘‘ঐতিহাসিক এবং সংস্কৃতিগত ভাবে তিব্বত বরাবর স্বাধীন। চিনের সংবিধান আমাদের সংস্কৃতি এবং ইতিহাসকে মান্যতা দিলে চিনের অংশ হিসাবে তিব্বত থাকতেই পারে।’’ এখানে না থেমে দলাই আরও বলেছেন, ‘‘এক সময়ে ফ্রান্স এবং জার্মানি তো একে অন্যের শত্রু ছিল। কিন্তু এখন তারা এক সঙ্গে কাজ করছে।’’

ডোকলাম কাণ্ডের পর চিনের সঙ্গে সম্পর্কের উত্তাপ কমাতে কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে দু’বার চিনে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। চলতি মাসের শেষে সফরের পর জুনের গোড়াতেই তিনি ফের সে দেশে যাবেন এসসিও (সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন) সম্মেলনে যোগ দিতে। পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, বিদেশসচিব, বিদেশমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের চিন সফর চলছে একের পর এক। দলাই লামার চিনের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা, নিঃসন্দেহে ভারতকে সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে দিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

India China Indo-China Relations Dalai Lama
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE