Advertisement
১৯ মে ২০২৪

বন্দুকই ঠেকাতে পারে হিলারিকে: ট্রাম্প

সমালোচকরা বলছেন, ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনকে আক্রমণের আগেকার সব রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার নর্থ ক্যারোলাইনায় উইলমিংটনে এক সভায় হিলারিকে বিঁধতে এ বার ট্রাম্প যা বলেছেন, তা নিয়ে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৬ ০৩:০৫
Share: Save:

সমালোচকরা বলছেন, ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনকে আক্রমণের আগেকার সব রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার নর্থ ক্যারোলাইনায় উইলমিংটনে এক সভায় হিলারিকে বিঁধতে এ বার ট্রাম্প যা বলেছেন, তা নিয়ে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

ট্রাম্প ওই সভায় বলেন, হিলারি যদি নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতেন, তা হলে উনি সুপ্রিম কোর্টে উদারপন্থী বিচারপতি নিয়োগ করবেন। নিউ ইয়র্কের ধনকুবের প্রার্থীর মতে, এর ফলে মার্কিন নাগরিকের বন্দুক রাখার অধিকার প্রশ্নের মুখে পড়বে। তাই নিজের সমর্থকদের উদ্দেশে ট্রাম্পের বার্তা, ‘‘হিলারি দ্বিতীয় সংশোধনী (সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট অর্থাৎ বন্দুক রাখার অধিকার) বাতিল করতে চান। সুপ্রিম কোর্টে যদি উনি নিজের পছন্দের বিচারপতি নিয়োগ করতে পারেন, তা হলে আপনারা কিছুই করতে পারবেন না। তবে দ্বিতীয় সংশোধনী ব্যবহার করে কিছু করা যায় কি না দেখুন।’’ বিভিন্ন মহলে আপত্তি উঠেছে ট্রাম্পের বক্তব্যের শেষ অংশ নিয়ে। ধোঁয়াশাভরা এই কথার মাধ্যমে ট্রাম্প কি হিলারির বিরুদ্ধে সরাসরি বন্দুক ব্যবহারের কথা বলছেন? —সেই প্রশ্নই তুলছেন সমালোচকরা। কোনও প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে এমন হিংসাভরা বার্তা কেউ কী ভাবে ছড়াতে পারে, তা নিয়ে সরব অনেকেই। এ ভাবে আক্রমণ এক কথায় নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন সমালোচকরা। তাঁরা বলছেন, প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে এ ধরনের কথা হিংসাকেই প্রশ্রয় দেয়। ট্রাম্প যা বোঝাতে চাইছেন, সেটা সাংঘাতিক। যে ব্যক্তি ভবিষ্যতে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের আসনে বসতে পারেন, তাঁর কাছ থেকে এমন হিংসার কথা আশা করা যায় না।

রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের কাছে অবশ্য সমালোচনা এখন এতটাই জলভাত হয়ে গিয়েছে যে তিনি স্বভাবসিদ্ধ সুরেই এ বারও বলেছেন, ‘‘আমি শুধু সমর্থকদের বলেছি ক্লিন্টনকে ভোটে জেতা থেকে আটকান। যাতে উনি নিজের পছন্দে বিচারপতি নিয়োগ করে দ্বিতীয় সংশোধনী তুলে দিতে না পারেন।’’ পাশাপাশি বন্দুক রাখার অধিকারের পক্ষে যাঁরা সরব, তাঁদের লড়াইকে ‘শক্তিশালী রাজনৈতিক’ আন্দোলন আখ্যা দিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্য, এর মধ্যে অন্য অর্থ খুঁজতে যাওয়া বোকামি।

ট্রাম্পের সমালোচক সিআইএ-র প্রাক্তন অধিকর্তা মাইকেল হেডেন একটি মার্কিন টিভি চ্যানেলে বলেছেন, ‘‘যদি এই কথা সভার বাইরে অন্য কোনও ব্যক্তি বলতেন, তা হলে এত ক্ষণে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হতো। সিক্রেট সার্ভিসের লোকজন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করত।’’ হেডেনের মতে, ‘‘আপনি যা বলছেন, শুধু তার দায়িত্ব আপনার উপর বর্তায় না। আপনি মানুষকে যা শোনাচ্ছেন, তার দায়িত্বও নিতে হয়।’’ দেশের প্রথম সারির যে ৫০ জন রিপাবলিকান নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেছিলেন, ট্রাম্পকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনলে তার ফল মারাত্মক হতে পারে, মাইকেল হেডেন তাঁর মধ্যে অন্যতম। তিনি ছাড়াও আর এক বর্ষীয়ান রিপাবলিকান সেনেটর সুজান কলিন্স সম্প্রতি মার্কিন দৈনিকে একটি প্রবন্ধে বলেছেন, তিনি ট্রাম্পকে ভোট দেবেন না।

ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রতিবাদে ডেমোক্রেটিক সেনেটর ক্রিস মার্ফি একের পর এক টুইটে বলেছেন, ‘‘কেউ ভাববেন না, এটা রাজনৈতিক ভাবে ভুল পদক্ষেপ। এটা আসলে হত্যার হুমকি। একটা জাতীয় দুর্যোগ এবং সঙ্কট তৈরির চেষ্টা চলছে।’’ ট্রাম্পের সমালোচনায় সরব দু’টি প্রধান মার্কিন দৈনিকও। একটি দৈনিকে রিপাবলিকান পার্টির উদ্দেশে বলা হয়েছে, ট্রাম্পকে সরান। তবে বর্ষীয়ান রিপাবলিকান প্রার্থীর সমর্থক এবং নিউ ইয়র্কের প্রাক্তন মেয়র রুডি জিউলিয়ানি বলেন, ‘‘এটা হুমকি নয়। সংবাদমাধ্যম ষড়যন্ত্র করে হিলারিকে জেতাতে চাইছে।’’ আর উইলমিংটনে হাজির ট্রাম্প সমর্থকদের মতে, ‘‘এটা ঠাট্টা করে বলা। উনি যেমন আলটপকা বলে থাকেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Donald trump Hillary clinton
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE