Advertisement
০৩ মে ২০২৪

যুদ্ধ করলে ইরান কিন্তু শেষ: ট্রাম্প

বিষয়টি নিয়ে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরান। বিদেশমন্ত্রী জাভেদ জ়ারিফ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ আর গণহত্যার হুমকি দিয়ে ইরানকে টলানো যাবে না।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, ‘‘কোনও ইরানিকে কখনও ভয় দেখাবেন না। বরং সম্মান করুন, সেটাই কাজে দেবে।’’

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৯ ০২:০৭
Share: Save:

দু’পক্ষই মুখে একাধিক বার জানিয়েছে যে তারা কেউই যুদ্ধ চায় না। কিন্তু একে অপরকে চাপে রাখার রাস্তা থেকে সরে আসছে না কেউই। ফলে উপসাগরীয় এলাকার উত্তেজনার পারদ কমার বদলে বেড়েই চলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক একটি টুইট সেই উত্তেজনা আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ট্রাম্প কাল মাঝরাতে ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে টুইটারে লিখেছেন, ‘‘ইরান যদি যুদ্ধ চায়, তা হলে সেটাই হবে ওদের শেষ দিন।’’

বিষয়টি নিয়ে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরান। বিদেশমন্ত্রী জাভেদ জ়ারিফ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ আর গণহত্যার হুমকি দিয়ে ইরানকে টলানো যাবে না।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, ‘‘কোনও ইরানিকে কখনও ভয় দেখাবেন না। বরং সম্মান করুন, সেটাই কাজে দেবে।’’

এক বছর ধরেই আমেরিকার সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক তলানিতে। ট্রাম্প একা ইরান চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পরে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা চাপান ইরানের উপরে। ইরানের ‘রেভোলিউশনারি গার্ডস’ বাহিনীকে গত মার্চ মাসে ‘সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ বলে ঘোষণা করেন ট্রাম্প। দিন পনেরো আগে যার পাল্টা হিসেবে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি জানিয়ে দেন, আগামী ৭ জুলাইয়ের পরে দেশের উদ্বৃত্ত ইউরেনিয়াম বিদেশে রফতানি বন্ধ করে দেবেন তাঁরা। তিনি ইঙ্গিত দেন, ফের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচির রাস্তায় হাঁটতে চলেছে তেহরান।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

রৌহানির এই ঘোষণার পরেই উপসাগরীয় এলাকায় যুদ্ধের যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু করে দেয় আমেরিকা। বোমারু বিমান, নৌবহর মোতায়েন শুরু হতে থাকে গোটা উপসাগরীয় এলাকা জুড়ে। ওয়াশিংটন বারবারই বলতে থাকে, ইরান হামলা করলে তার যোগ্য জবাব দেবে তারা। যদিও কাল পর্যন্ত ইরানের বিদেশমন্ত্রী দাবি করেছেন আমেরিকার সঙ্গে কোনও যুদ্ধ তাঁরা চান না। ট্রাম্প নিজেও একাধিক বার সে কথা বলে জানিয়েছিলেন তিনি বিশ্বাস করেন খুব শীঘ্রই আলোচনার টেবিলে বসতে চাইবে তেহরান। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের গত কালের টুইটটি ঘিরে গোটা উপসাগরীয় এলাকার স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন করে সংশয় তৈরি হয়েছে।

গত কালই বাগদাদের ‘গ্রিন জ়োন’-এ রকেট হামলা হয়েছে। আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাস ও কনসুলেট রয়েছে ওই এলাকায়। এখনও পর্যন্ত কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর না পাওয়া গেলেও কে বা কারা এই হামলার পিছনে রয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে ইরাকে মার্কিন বায়ুসেনা ঘাঁটিগুলিতে ইরানি মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠী হামলা চালাতে পারে বলে ইরাক সরকারকে আগে থেকেই সতর্ক করে রেখেছে আমেরিকা।

ওয়াশিংটনের আর এক বন্ধু দেশ সৌদি আরবের তরফেও আজ জানানো হয়েছে, ইরানের সঙ্গে তারা যুদ্ধ চায় না। তবে ইরান হামলা করলে নিজেদের রক্ষা করতে সর্বশক্তি দিয়ে লড়বে তারা। তেহরানের সঙ্গে রিয়াধের সম্পর্কও ভাল নয়। এই দুই তেল উৎপাদক দেশ একে অপরের সমালোচনায় সরব বরাবর। উপসাগরীয় এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সৌদি রাজা সলমন ৩০ মে একটি বৈঠক ডেকেছেন। উপসরাগরীয় দেশগুলির নেতা এবং আরব লিগভুক্ত দেশগুলির প্রধানদের হাজির থাকার কথা সেখানে। ইরান-আমেরিকা দ্বন্দ্বের ফলে বিশ্ব জুড়ে তেল সরবরাহের যে সঙ্কট শুরু হয়েছে, তা নিয়ে গত কালই আলোচনা করেছে তেল উৎপাদক দেশগুলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Donald Trump Iran USA ট্রাম্প
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE