মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স।
তিনি যে ফাঁকা হুমকি দেন না, ফের প্রমাণ করে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঘোষণা করলেন, ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসছে আমেরিকা।
২০১৫ সালে, তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জমানায় ইরানের সঙ্গে তিন বছরের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি করেছিল ছয় শক্তিধর রাষ্ট্র— ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, চিন এবং আমেরিকা। সেই চুক্তি অনুযায়ী, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি বন্ধ রাখলে তেহরানের উপর বসানো বিপুল আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে রাষ্ট্রপুঞ্জ, আমেরিকা ও অন্যান্য বেশ কিছু দেশ। এই চুক্তির ফলে এক দিকে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিল আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দুনিয়া, তেমনই দশ হাজার কোটি ডলারের সম্পত্তি ফিরে পেয়েছিল ইরানও।
প্রেসিডেন্ট হওয়া ইস্তক ট্রাম্প বলে এসেছেন, ‘‘এই চুক্তি ওবামার অত্যন্ত ভুল পদক্ষেপ। এর ফলে আমেরিকার কোনও সুবিধে হয়নি। উল্টে ব্যাপক লাভ হয়েছে ইরানের।’’ তিনি সুযোগ পেলেই এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসবেন, বারবার এই হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।
সম্প্রতি আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ। একটি মার্কিন সংবাদপত্রের খবর, তাঁকেও নাকি ট্রাম্প বলেছিলেন, আর বেশি দিন নয়, ইরান নিয়ে খুব শীঘ্রই কড়া পদক্ষেপ করবেন তিনি। মাকরঁ-র দফতর থেকে এই খবরের সত্যতা সম্পর্কে কোনও মন্তব্য না করা হলেও ট্রাম্পকে তাঁর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য আর্জি জানায় ব্রিটেন। টেরেসা মে প্রশাসনের তরফে ট্রাম্পকে বলা হয়, ২০১৫ সালে হওয়া এই পরমাণু চুক্তি নিখুঁত না হতে পারে। তবে ইরানকে রুখতে এর থেকে ভাল আর কোনও বিকল্প নেই। চুক্তির পুনর্নবীকরণ হওয়ার কথা ১২ মে। তার আগে আমেরিকা যেন এই চুক্তি থেকে না বেরিয়ে যায়।
কিন্তু সে সব আবেদনে সাড়া দিলেন না ট্রাম্প। মঙ্গলবার সাত সকালেই হোয়াইট হাউসের এক শীর্ষ কর্তা জানান, ইরানের সঙ্গে চুক্তি পুনর্নবীকরণ না করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন ট্রাম্প। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই হোয়াইট হাউসের তরফে একটি টুইট করে জানানো হয়, ‘‘আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার পরিপন্থী ইরান পরমাণু চুক্তি। তাই এই চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।’’
পরে প্রেসিডেন্টও দু’টি সবিস্তার টুইট করে দাবি করেন, ‘‘গত কয়েক মাস ধরে ফ্রান্স, জার্মানি ও ব্রিটেন-সহ আমাদের মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে কথা বলার পরে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ রবিবারই ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি বলেছিলেন, ‘‘ট্রাম্প চুক্তি পুনর্নবীকরণ না করলে খুব ভুল করবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy