দুটি বিশ্বযুদ্ধের সাক্ষী, অগ্নি আগ্রাসনে বিপর্যস্ত নোত্র দাম গির্জায় জিশু খ্রিস্টের কাঁটার মুকুট আছে
লেলিহান অগ্নিশিখার আগ্রাসনে ইতিহাস। নোত্র দাম ক্যাথিড্রাল। একাংশ ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে পৃথিবীর প্রাচীনতম গির্জাগুলির মধ্যে অন্যতম এই স্থাপত্যকীর্তি
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৯ ১২:৩৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
লেলিহান অগ্নিশিখার আগ্রাসনে ইতিহাস। নোত্র দাম ক্যাথিড্রাল। একাংশ ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে পৃথিবীর প্রাচীনতম গির্জাগুলির মধ্যে অন্যতম এই স্থাপত্যকীর্তিটির। এই ক্যাথিড্রালের ইতিহাসের দিকে একবার ফিরে তাকানো যাক।
০২১৫
নোত্র দাম গির্জার অর্থ ‘আওয়ার লেডি অব প্যারিস’, ফরাসি গথিক স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন এটি। ১১৬৩ সালে নির্মাণ কাজ আরম্ভ হয়। রাজা ষোড়শ লুইয়ের আমলে এটি তৈরি শুরু হয়।
০৩১৫
ত্রয়োদশ শতকেও একবার আগুন লেগেছিল এটিতে। ১২৩০-১২৪০ সাল পর্যন্ত সময় লেগে গিয়েছিল এটি মেরামত করতে।
০৪১৫
গির্জার সম্পূর্ণ গঠন তৈরি শেষ হয়েছিল ১৩৪৫ সালে। অর্থাৎ একটা গির্জা প্রায় ২০০ বছরের কাছাকাছি সময় নিয়েছে শুধু তৈরি হতেই। পৃথিবীর প্রাচীনতম ক্যাথিড্রালের মধ্যে অন্যতম এটি। গির্জার অনন্য নকশার গ্লাস পেন্টিং দেখতেও ভিড় করেন দর্শকরা।
০৫১৫
ফরাসি বিপ্লবেরও সাক্ষী এই গির্জা। আসলে ১৭৯০ সাল নাগাদ বিপ্লবের কারণে নানা গাফিলতির কারণেও গির্জাটির ক্ষতি হয়েছিল। তাই সবমিলিয়ে এটি আবারও ঠিক করতে এত বছর সময় লেগে যায়।
০৬১৫
১৮০৪ সালে প্রথম নেপোলিয়নকে অভিষিক্ত করা হয়েছিল এই ক্যাথিড্রালের সামনেই।
০৭১৫
১৮৪৪-১৮৬৪ সালের নোত্র দাম নিয়ে ভিক্তোর উগোর বিখ্যাত উপন্যাস ‘নোত্রে দাম দে প্যারিস’, সেখানেও উল্লেখ রয়েছে আন্তনি লাসুস এবং ইউজিন এমম্যানুয়েল ভিওলেত-লে-দুচ গির্জা পুনর্নির্মাণে সাহায্য করার কথা।
০৮১৫
১৯০৯ সালে পোপ দশম পিয়াস এখানেই জোয়ান অব আর্কের সন্তকরণ (বিটিফিকেশন) অনুষ্ঠানও করেন। এই জোয়ান অব আর্কই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের লড়াইয়ে সাহায্য করেন।
০৯১৫
ত্রয়োদশ শতাব্দীতে নির্মিত, মধ্যযুগীয় ক্যাথিড্রালটিকে স্থাপত্য ও ধর্মের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়। এটি প্যারিসের সব চেয়ে জনপ্রিয় আকর্ষণগুলির মধ্যে একটি, আনুমানিক এক কোটি ত্রিশ লক্ষ পর্যটক আসেন প্রতি বছর।
১০১৫
বিশ শতকের দুটি ভয়াবহ আগ্রাসন, বিশ্বযুদ্ধেরও সাক্ষী এটি। এই গির্জার বিখ্যাত ঘণ্টাটি ১৯৪৪ সালের ২৪ অগস্ট বেজেছিল। জার্মানির হাত থেকে প্যারিসের মুক্তির দিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষের দিন।
১১১৫
গির্জার যে মিনার দুটি প্রায় ৬৯ মিটার লম্বা, সে দুটি বেঁচে গিয়েছে আগুনের হাত থেকে। প্যারিসের আইফেল টাওয়ার তৈরি হওয়ার আগে পর্যন্ত অর্থাৎ ১৮৮৯ সাল পর্যন্ত এটিই ছিল প্যারিসের সবচেয়ে উঁচু স্থাপত্য।
১২১৫
সারা বিশ্বের কাছে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক কীর্তি এটি। ফ্রান্সের গৌরব ও ঐতিহ্যের একটা অন্যতম প্রতীক।
১৩১৫
সম্প্রতি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হয়েছিল এখানে। প্রায় ১২৫১ কোটি টাকা খরচ হওয়ার কথা ছিল এই রক্ষণাবেক্ষণে। কিন্তু কী ছিল এই গির্জায়?
১৪১৫
জিশু খ্রিস্টের কাঁটার মুকুট রয়েছে এখানেই, ক্রুশবিদ্ধ অবস্থায় তিনি যেটি পরেছিলেন। এমনটাই জানান কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্টিফেন মুরে।
১৫১৫
গবেষণা বলছে, এই ক্যাথিড্রালেই রয়েছে ক্রুশের কাঠের অংশ, রয়েছে একগুচ্ছ পেরেকও, জিশুকে ক্রুশবিদ্ধ করার সময় এটি ব্যবহার করা হয়েছিল, জানান মুরে। তবে সন্ত লুইয়ের টিউনিকও ছিল এতে। ছিল আরও বেশ কিছু খ্রিস্টান ধর্মের দুষ্প্রাপ্য পুঁথিও। রক্ষা করা গিয়েছে এগুলি, জানান আমেরিকার ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক।