Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Spycam

হোটেলের ১৬০০ অতিথির ব্যক্তিগত মুহূর্ত গোপনে রেকর্ড, অভিযোগ সামনে আসায় চাঞ্চল্য

ছোট আকারের মিনি ক্যামেরা। লেন্সের আকারও মাত্র এক মিলিমিটার। সেই ক্যামেরাগুলি লাগানো থাকতো হোটেলের টেলিভিশন, হেয়ার ড্রায়ারের হাতল কিংবা সুইচ বোর্ডের মধ্যে। সেই ক্যামেরাগুলির মাধ্যমেই চালানো হত অনৈতিক কর্মকান্ড।

ব্যক্তিগত মুহূর্তের ভিডিয়ো ফাঁসে চাঞ্চল্য। প্রতীকি চিত্র

ব্যক্তিগত মুহূর্তের ভিডিয়ো ফাঁসে চাঞ্চল্য। প্রতীকি চিত্র

সংবাদ সংস্থা
সিওল শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৯ ১৭:১৯
Share: Save:

ছোট আকারের মিনি ক্যামেরা। লেন্সের আকারও মাত্র এক মিলিমিটার। সেই ক্যামেরাগুলি লাগানো থাকতো হোটেলের টেলিভিশন, হেয়ার ড্রায়ারের হাতল কিংবা সুইচ বোর্ডের মধ্যে। সেই ক্যামেরাগুলির মাধ্যমেই চালানো হত অনৈতিক কর্মকান্ড। অতিথিদের ব্যক্তিগত মুহূর্ত কখন যে তার মাধ্যমে রেকর্ড হয়ে ছড়িয়ে যেত হাজার হাজার কম্পিউটার বা মোবাইল স্ক্রিনে, তার হদিশ পাওয়া যেত না কোনও ভাবেই।

দক্ষিণ কোরিয়ায় সেই সব বিলাসবহুল হোটেলে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন কেউ। কেউ বা আবার কাজের প্রয়োজনে থাকতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সব ছুটির দিন বা কাজের ফাঁকের অবসর যাপন যে এ ভাবে বিষাক্ত হয়ে যাবে তা বোধহয় স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি তাঁরা। হোটেলে অতিথি হয়ে আসা সেই সব অতিথিদের ব্যক্তিগত মুহূর্ত কখন রেকর্ড হয়ে গিয়েছে গোপনে, মোটা অঙ্কের বিনিময়ে কখন তার হাতবদল হয়ে গিয়েছে পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইটগুলির কাছে, তা টের পাওয়া যায়নি ঘুণাক্ষরেও। দক্ষিণ কোরিয়ার হোটেলে থাকতে আসা প্রায় ১৬০০ অতিথি শিকার হয়েছেন এর। গোপনে অবৈধ উপায়ে এ ভাবে ভিডিয়ো রেকর্ডিং করার অপরাধে এখনও অবধি গ্রেফতার করা হয়েছে চারজনকে।

দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে বেশ কিছু বছর ধরেই ওই দেশে গোপনে ক্যামেরায় ব্যক্তিগত মুহূর্ত রেকর্ড করার ঘটনা মারাত্মক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছেন সাধারণ মানুষ। এইরকম একেকটি ভিডিয়ো থেকে অপরাধীরা প্রায় ৬ হাজার ২০০ ডলারের মতো আয় করতো বলে জানা গিয়েছে। গ্রেফতার হওয়া ওই চার সন্দেহভাজন ব্যক্তি আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের প্রত্যেককে ১০ বছর পর্যন্ত জেল এবং সেই সঙ্গে কয়েক হাজার ডলার জরিমানা করা হতে পারে।

আরও পড়ুন: একই বিমানের সহ-পাইলট মা ও মেয়ে, অনুপ্রেরণা খুঁজল সোশ্যাল মিডিয়া

গোপন ক্যামেরায় রেকর্ড করবার পরে গত নভেম্বরে একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সেই ভিডিয়োগুলি ছড়িয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন পর্ন সাইটে। ভিডিয়োগুলোর প্রথম ৩০ সেকেন্ড ব্যবহারকারীদের বিনামূল্যে দেখতে দেওয় হত। এর পরের পুরো দৃশ্য দেখতে দিতে হত নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ। এই অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে দুষ্কৃতিকারীরা এখনও পর্যন্ত আটশোরও বেশি ভিডিয়ো ওই ওয়েবসাইটে পোস্ট করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়াও তারা লঙ্ঘন করেছে ওয়েবসাইট সার্ভার সংক্রান্ত আইনও।

এই মাসেই তারা ওই ওয়েবসাইটটি সরিয়ে ফেলবে বলে জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে। দক্ষিণ কোরিয়ায় পর্নোগ্রাফি তৈরি করা ও প্রচার করা অবৈধ। তা সত্ত্বেও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে গোপনে তোলা ভিডিয়ো এ ভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানানো হয়েছে। শুধু বেডরুমেই নয়, পোশাক পরিবর্তন করবার ঘরে কিংবা টয়লেটেও লাগানো হয়েছিল গোপন ক্যামেরাগুলি।

আরও পড়ুন: টাকা দিয়ে মার্কিন গ্রিনকার্ড কিনতে ভিড় ভারতীয়দের, সংখ্যা বাড়ল ৩০০ শতাংশ

শুধুমাত্র ২০১৭ সালেই দক্ষিণ কোরিয়ায় এই ধরনের গোপন ভিডিয়ো রেকর্ড করা হয় ৬ হাজারেরও বেশি। সেই প্রেক্ষিতে ২০১৭ এই অপরাধের জেরে আটক হয় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার অভিযুক্ত। এ ভাবে একের পর এক গোপন ভিডিয়ো ফাঁস হতে থাকায় পুরো দক্ষিণ কোরিয়া জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাপক বিক্ষোভ দেখানো হয় রাজধানী সিওলেও। এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত সকলকে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দেওয়ার দাবিও জানানো হয় বিক্ষোভকারীদের তরফে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Spycam Pornography South Korea
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE