Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

সিরিয়ায় ফরাসি বিমান হানা, ওবামাকে ফের তোপ পুতিনের

ইরাকের পর এ বার সিরিয়ায় বিমান হানা শুরু করল ফ্রান্স। ইরাক ও সিরিয়ায় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) ঠেকাতে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর সদস্য হলেও এত দিন শুধু ইরাকেই অভিযান চালিয়েছে ফরাসি বিমান।

ছবি: এপি।

ছবি: এপি।

সংবাদ সংস্থা
প্যারিস শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:৩৮
Share: Save:

ইরাকের পর এ বার সিরিয়ায় বিমান হানা শুরু করল ফ্রান্স।

ইরাক ও সিরিয়ায় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) ঠেকাতে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর সদস্য হলেও এত দিন শুধু ইরাকেই অভিযান চালিয়েছে ফরাসি বিমান। আজ ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া অলাঁদ জানিয়েছেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই এই হামলা। তবে সিরিয়ায় জঙ্গি-দমনের প্রস্তুতি গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই নিচ্ছিল ফ্রান্স। ৮ সেপ্টেম্বর থেকে সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি চালিয়েছে ফরাসি বিমান। আজ ফ্রান্সের ছ’টি বিমান দেইর-ইজ-জোর প্রদেশে অভিযান চালিয়ে একটি জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবির উড়িয়ে দিয়েছে।

তাৎপর্যপূর্ণ, গত কাল নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় যোগ দেওয়ার ঠিক আগের দিনই সিরিয়ায় বিমান হানা শুরু করল ফ্রান্স। বিশেষত, যখন সিরিয়া-পরিস্থিতিই আলোচনায় প্রাধান্য পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিরিয়ায় বিমান হানা চালিয়ে পুরনো অবস্থান থেকে বেশ খানিকটা সরে এলেন অঁলাদ। এত দিন ইরাকে হামলা চালালেও ফ্রান্স সতর্ক ভাবে এড়িয়ে গিয়েছে সিরিয়া প্রসঙ্গ। কারণ, কোনও মতেই সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাসার আল-আসাদের পাশে দাঁড়াতে চায়নি ফ্রান্স। ২০১৩ সালে আসাদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের অভিযোগ উঠলে দামাস্কাসে সামরিক অভিযানের কথা ভেবেছিল ফ্রান্স। তবে আন্তর্জাতিক সমর্থনের অভাবে সে প্রস্তাব বেশি দূর এগোয়নি। এত দিন বাসারকে মদত দেওয়া হবে, এই যুক্তিতেই সিরিয়ায় হামলা হয়নি। তবে গত জানুয়ারিতে প্যারিসের পত্রিকা শার্লি এবদোর দফতরে জঙ্গি হানায় ১৭ জনের মৃত্যু, সিরিয়ায় জঙ্গি-দৌরাত্ম্যের জেরে ইউরোপে শরণার্থী সঙ্কট— সব মিলিয়ে ফ্রান্সের জাতীয় সুরক্ষার স্বার্থে এই হানার সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন প্রশ্ন, সন্ত্রাস মোকাবিলা প্রশ্নে ফ্রান্স নীতিগত বদলের ইঙ্গিত দিলেও বাকি দেশগুলো একই পথে হাঁটবে কি?

সিরিয়া-প্রশ্নে ইতিমধ্যেই আমেরিকার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আসাদের পাশে দাঁড়িয়ে সিরিয়ায় যুদ্ধবিমান, গোলন্দাজ বাহিনী পাঠিয়ে সরাসরি মাঠে নেমেছে রাশিয়া। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মুখোমুখি হওয়ার আগে আজ আমেরিকাকে এক হাত নিয়েছেন পুতিন। মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, সিরিয়ার বিদ্রোহীদের মদত দিচ্ছে আমেরিকা। আসাদ সরকারকে ঠেকাতে এবং আইএসের মোকাবিলা করতে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষণ আর অস্ত্র দিচ্ছে মার্কিন সেনাবাহিনী। পুতিনের মতে, বাস্তবে এই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিদ্রোহীরা গিয়ে আইএসে যোগ দিচ্ছে। আর তাতে আদতে হাত শক্ত হচ্ছে সন্ত্রাসবাদেরই। এই গোটা প্রক্রিয়াকে বেআইনি বলেও মন্তব্য করেন পুতিন।

আগামী সোমবার নিউ ইয়র্কে মুখোমুখি বসার কথা পুতিন-ওবামার। তবে দুই রাষ্ট্রনেতা কী নিয়ে আলোচনা করবেন তা নিয়ে ইতিমধ্যেই মতানৈক্য তৈরি হয়েছে ক্রেমলিন এবং পেন্টাগনের। তার উপর বৈঠকের আগে পুতিনের এই মন্তব্যে ফের জল্পনা শুরু হয়েছে কূটনৈতিক মহলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

France Air strike Syria ISIS MoatReadStories
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE