Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Prince Andrew

অ্যান্ড্রুর সেই ছবি ‘ভুয়ো’, দাবি করল এপস্টাইন-ঘনিষ্ঠ

আমেরিকান ধনকুবের জেফ্রি এপস্টাইন ও তার বন্ধুবান্ধবদের জন্য কিশোরী জোগাড় করার ‘গুরুদায়িত্ব’ পালন করত এপস্টাইন-ঘনিষ্ঠ ব্রিটিশ সোশ্যালাইট গিলেন।

কিশোরী ভার্জিনিয়া জিউফ্রের সঙ্গে রাজকুমার অ্যান্ড্রু। পাশে  গিলেন ম্যাক্সওয়েল। দাবি, ছবিটি ১৯৯১-এ তোলা হয়। ফাইল চিত্র

কিশোরী ভার্জিনিয়া জিউফ্রের সঙ্গে রাজকুমার অ্যান্ড্রু। পাশে গিলেন ম্যাক্সওয়েল। দাবি, ছবিটি ১৯৯১-এ তোলা হয়। ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:০৯
Share: Save:

ব্রিটেনের রাজকুমার অ্যান্ড্রুকে নাবালিকা যৌন হেনস্থা মামলায় দোষী সাব্যস্ত করার জন্য জরুরি সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল যে ছবি, সেটিকে ‘ভুয়ো’ বলে দাবি করল সেই মামলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র গিলেন ম্যাক্সওয়েল। জেলের ভিতর থেকে এক ভিডিয়ো সাক্ষাৎকারে এপস্টাইন-ঘনিষ্ঠ, ৬১ বছরের গিলেন দাবি করেছে, অ্যান্ড্রু ও তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন যে ভার্জিনিয়া জিউফ্রে, তাঁদের তিন দশক পুরোনো ছবিটি ‘জাল’। ছবিটিতে ম্যাক্সওয়েল নিজেও রয়েছে।

আমেরিকান ধনকুবের জেফ্রি এপস্টাইন ও তার বন্ধুবান্ধবদের জন্য কিশোরী জোগাড় করার ‘গুরুদায়িত্ব’ পালন করত এপস্টাইন-ঘনিষ্ঠ ব্রিটিশ সোশ্যালাইট গিলেন। গত বছর জুন মাসে নিউ ইয়র্কের এক আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে আপাতত ফ্লরিডায় ২০ বছরের জন্য জেল খাটছে সে। সেখান থেকেই এক ব্রিটিশ সাংবাদিককে টেলিফোনে সাক্ষাৎকার দিয়েছিল গিলেন। আজ সন্ধ্যাবেলা একটি ব্রিটিশ চ্যানেলে সম্প্রচারিত হয়েছে সেটি।

আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে যে ছবিটি, সেটি ২০০১ সালে তোলা বলে আদালতে দাবি করেছিলেন ভার্জিনিয়া জিউফ্রের আইনজীবী। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ভার্জিনিয়ার কোমর জড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন রাজকুমার। ভার্জিনিয়ার হাতও অ্যান্ড্রুর কোমরে। দু’জনের মুখেই হাসি। ভার্জিনিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে আছে গিলেন। সেই ছবি প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকারে গিলেন বলেছে, ‘‘এক মুহূর্তের জন্যও আমি বিশ্বাস করিনি যে, ছবিটা আসল। ওটা একটা ভুয়ো, জাল ছবি, তৈরি করা। আসল ছবিটা কেউ দেখেনি। শুধু ফটোকপি দেখানো হয়েছে। আমিও আসল ছবিটা দেখিনি।’’ ছবিটা গিলেনের বাড়িতে তোলা বলে দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু গিলেনের পাল্টা দাবি, তার বাড়িতে অ্যান্ড্রুর সঙ্গে ভার্জিনিয়ার কখনও দেখা হয়নি, ছবি তোলা তো দূরের কথা। এখানেই না-থেমে গিলেনের আরও দাবি, অ্যান্ড্রু ও ভার্জিনিয়া পরস্পরকে চিনতেনই না। অর্থাৎ, অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে ভার্জিনিয়া যে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন তা সর্বৈব মিথ্যা।

কয়েক বছর আগে একটি ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজকুমার অ্যান্ড্রুও দাবি করেছিলেন, ভার্জিনিয়াকে তিনি চেনেন না। এই রকম কোনও ছবি যে আদৌ তোলা হয়েছিল, তা-ও তিনি বিশ্বাস করেন না। অ্যান্ড্রুরও দাবি ছিল, ‘‘ছবিটি তৈরি করা।’’ যুক্তি হিসেবে অ্যান্ড্রু তখন বলেছিলেন, ‘‘ছবিটি নাকি লন্ডনে তোলা। কিন্তু আমি কখনওই লন্ডনে এত ক্যাজ়ুয়াল পোশাক পরি না।’’ তাঁর আরও দাবি ছিল, ‘‘মেয়েটির কোমরে যে হাতটি রয়েছে, সেই হাত যে আমার, তা তো আদপেই স্পষ্ট নয়। এটি আসল ছবি, নাকি কোনও ছবি থেকে কারচুপি করে তৈরি করা হয়েছে, সে বিষয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।’’

আমেরিকার আদালতে যখন অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে তিন বার যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনে মামলা করেন ভার্জিনিয়া, তখন অ্যান্ড্রুর আইনজীবীও এই যুক্তি দিয়েছিলেন। তবে আদালতে সেই সব যুক্তি টেঁকেনি। যৌন হেনস্থা, বিশেষ করে নাবালিকাকে (অ্যান্ড্রুর সঙ্গে সম্পর্কের সময়ে ভার্জিনিয়া বয়স ছিল ১৭) যৌন হেনস্থার দায়ে তাঁর কারাদণ্ড হতে পারে অনুমান করে বিপুল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিয়ে ভার্জিনিয়ার সঙ্গে মিটমাট করে নেন অ্যান্ড্রু। এবং দেশে ঘোর সমালোচনার মুখে পড়ে রাজপরিবারের প্রতিনিধি হিসেবে সব সরকারি দায়িত্ব ও ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সব আলঙ্কারিক পদ থেকে সরে যান রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের মেজো ছেলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Prince Andrew Ghislaine Maxwell
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE