বয়স ছিল ছয় থেকে ১২। তবে ইহুদি হওয়ার ‘অপরাধ’ থেকে রেহাই পায়নি দাভিদ-লিয়ারা। তাদের গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে দিয়েছিল নাৎসিরা। সেটি ছিল চল্লিশের দশক। হিটলারি জমানায় জার্মান অধিকৃত পোলান্ডের সবিবর কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে দাভিদ বা লিয়া-সহ প্রায় আড়াই লক্ষ বন্দির কারও দেহ উদ্ধার হয়নি। তবে পাওয়া গিয়েছে দাভিদ-লিয়াদের নাম-ঠিকানা-জন্মতারিখ খোদাই করা চারটি ধাতব টুকরো। তার মধ্যেই যেন ‘জীবিত’ ওই চারটি বাচ্চা! অন্তত দাভিদ-লিয়াদের আত্মীয়দের কাছে আজ এটুকুই সম্বল।
আউশভিৎজের পাশাপাশি সবিবর গ্রামের কাছে একটি জঙ্গলের মধ্যে মৃত্যুশিবির গড়েছিল নাৎসিরা। সালটা ১৯৪২। তবে পরের বছরের শেষে বন্দি-বিদ্রোহের জেরে তা বন্ধ করে দেয় নাৎসিরা। তার আগেই অবশ্য সেখানকার গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রায় আড়াই লক্ষ ডাচ ইহুদিকে। এমনই দাবি জেরুসালেমের ইয়াদ ভাশেমে ওয়ার্ল্ড হলোকস্ট রিমেমব্রান্স সেন্টারের।
২০০৭ সাল থেকে প্রায় ১০ বছরের খননকাজে সবিবর থেকে নাৎসি জমানার বীভৎসতার টুকরো তুলে এনেছেন ইজরায়েলি প্রত্নতত্ত্ববিদ ইয়োরাম হাইমি। তিনি বলেন, ‘‘ক্যাম্পের আটটি ঘরের সাড়ে ৩০০ বর্গ মিটারের গ্যাস চেম্বারে ৮০০-৯০০ বন্দিকে একসঙ্গে ৬-৭ মিনিটের মধ্যে মেরে ফেলা যেত।’’ হাইমি পেয়েছেন পোলান্ডের ওসিয়েচ মাজুরেক এবং নেদারল্যান্ডসের আইভার স্তুতের মতো প্রত্নতত্ত্ববিদের সাহায্য। মূলত এই তিন জনের প্রচেষ্টায় সবিবরের ক্যাম্প থেকে দাভিদদের নাম খোদাই করা ধাতব টুকরোগুলি উদ্ধার হয়েছে। মিলেছে বন্দিদের ৮০ হাজার ব্যবহার্য জিনিস। গত বছর তাঁদের খননকাজ বিশ্ব জুড়ে শিরোনাম কেড়েছিল।