Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Joe Biden

চিনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নয়, টক্কর চান বাইডেন

ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রচারে বারবারই দাবি করতেন, বাইডেন ক্ষমতায় এলে চিনের প্রতি নরম নীতি নেবেন।

ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন ও বেজিং শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২১ ০৫:১৫
Share: Save:

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি থেকে সরে এসে চিনের সঙ্গে দ্বন্দ্বের পরিবর্তে প্রতিযোগিতাকে প্রাধান্য দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার আমেরিকান কংগ্রেসে তাঁর প্রথম বক্তৃতায় বাইডেন জানান, তাঁর সঙ্গে চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের কথা হয়েছে এবং তিনি শি-কে জানিয়েছেন— ‘‘প্রতিযোগিতা স্বাগত, দ্বন্দ্ব-বিরোধ চাইছি না।’’ বাইডেন বলেন, আমেরিকা যাতে বিশ্ব বাজারে তার আধিপত্য ধরে রাখতে পারে, সে ব্যাপারেই সচেষ্ট হবে তাঁর প্রশাসন। আগামী ১০০ দিনের মধ্যে নতুন করে আমেরিকার উত্থান শুরু হবে বলেও দাবি করেন তিনি।

ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রচারে বারবারই দাবি করতেন, বাইডেন ক্ষমতায় এলে চিনের প্রতি নরম নীতি নেবেন। তাতে আমেরিকার জাতীয় স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে। কমলা হ্যারিস এবং ন্যান্সি পেলোসিকে সঙ্গে নিয়ে বাইডেন কিন্তু তাঁর ৬৫ মিনিটের বক্তৃতায় আমেরিকার জাতীয় স্বার্থের উপরেই জোর দিলেন। আমেরিকার অর্থনীতি এবং পরিকাঠামো নিয়ে তাঁর পরিকল্পনা, বিদেশনীতিতে তাঁর লক্ষ্য এবং অতিমারি আবহে জনস্বাস্থ্য নিয়ে তাঁর ভাবনা— এই তিনটি বিষয়েই কথা বলেন বাইডেন। বিরোধ এড়িয়ে প্রতিযোগিতার বাজারে চিন যাতে টেক্কা দিতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করার কথা বললেন। বাইডেনের কথায়, ‘‘চিন এবং অন্যান্য দেশ খুব দ্রুত উঠে আসছে। আমাদের পণ্য এবং প্রযুক্তি যাতে তার আধিপত্য ধরে রাখতে পারে, সেটা আমাদের দেখতে হবে।’’ গত মাসেও বাইডেন জানিয়েছিলেন, চিন যাতে আমেরিকাকে সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশের আসন থেকে টলাতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করাই হবে তাঁর কাজ।

শি-র সঙ্গে তাঁর প্রায় দীর্ঘ দু’ঘণ্টা কথা হয়েছে বলে জানিয়ে এ দিন বাইডেন বলেন, ‘‘উনি চিনকে সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে খুবই একাগ্র। উনিও অন্যান্য স্বৈরতন্ত্রীর মতোই মনে করেন, একুশ শতকে স্বৈরতন্ত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় গণতন্ত্র টিকতে পারে না। কারণ গণতন্ত্রে ঐকমত্যে পৌঁছতে অনেকটা সময় লেগে যায়।’’ অর্থাৎ চিনের সঙ্গে আমেরিকার চ্যালেঞ্জ শুধু অর্থনীতির নয়, রাজনৈতিক মতাদর্শেরও— এই কথাটাও ফের জোর দিয়ে মনে করিয়েছেন বাইডেন। ভারত-প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি যে বজায় রাখবে আমেরিকা, সে কথা শি-কেও জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার চিনও এই প্রশ্নেই বাইডেনকে খোঁচা দিয়েছে। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, চিনও আমেরিকার সঙ্গে কোনও মারণ-ডুয়েল লড়ছে না। প্রতিযোগিতা তার নিয়ম মেনে মাঠে হওয়াই শ্রেয়। সেই সঙ্গে ওয়াং বলেন, ‘‘কারও গণতন্ত্রের আদর্শ অন্যের উপরে চাপিয়ে দিতে গেলে কিন্তু স্থিতাবস্থার ক্ষতিই হবে, উত্তেজনা বাড়বে।’’ চিনের দাবি, আমেরিকাই অবাধ ও সুস্থ প্রতিযোগিতার নিয়ম মানে না। অর্থনীতিকে রাজনীতির বিষয় করে তোলে।

বাইডেন অবশ্য তাঁর বক্তৃতায় আমেরিকার অর্থনীতির জন্য ‘অচ্ছে দিন’ও ঘোষণা করেছেন। অতিমারি থেকে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে বলে স্বপ্ন দেখিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘আমেরিকা ওড়ার জন্য তৈরি। ঠিক ১০০ দিন পরে আমি জাতিকে জানাব, আমেরিকা আবার এগোচ্ছে তরতর করে। সে বিপদকে বদলে নিয়েছে সম্ভাবনায়, সঙ্কটকে সুযোগে, আঘাতকে শক্তিতে।’’ নতুন লগ্নি এবং কর-কাঠামোর পরিমার্জনার হাত ধরেই আমেরিকার গণতন্ত্র মানুষের আস্থা ফের অর্জন করে নেবে বলে দাবি করেন বাইডেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

China usa Xi Jinping Joe Biden
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE